পশ্চিমবঙ্গ

বিচারের আগেই চোর সন্দেহে ধৃতদের ভরা বাজারে ঘোরালো পুলিশ, উঠছে মানবধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ

FOCUS BENGAL

FOCUS BENGAL

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,জামালপুর: তিনটি দোকানে চুরির ঘটনায় অভিযুক্ত সন্দেহে ধৃত দুই যুবককে পুলিশ প্রকাশ্যে দিনের বেলায় ভরা বাজারে কোমরে দড়ি বেঁধে ঘোরানোর ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য সৃষ্টি হল পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরে। এই ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর রীতিমত প্রশ্নের মুখে পড়েছে জেলা পুলিশ। ইতিমধ্যেই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে একাধিক মানবধিকার সংগঠন। ভাইরাল ভিডিও তে দেখা যাচ্ছে, প্রকাশ্যে কোমরে দড়ি বেঁধে দুই যুবককে রাস্তায় ঘোরানোর সময় পুলিশের সঙ্গে থাকা সিভিক ভলেন্টিয়াররা বলছে, এরা চোর, এদের চিনে রাখুন। প্রশ্ন উঠেছে, কিভাবে বিচারে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় আগেই অভিযুক্ত সন্দেহে ধৃত ব্যক্তিদের চোর বলে দেওয়া হল। তাও জনসমক্ষে।

বিজ্ঞাপন

জেলা পুলিশ সুপার কামনাশিস সেন সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ঘটনার পুনর্নির্মাণের জন্যই ওই দুজনকে নিয়ে যাওয়া হয়ে থাকতে পারে। এভাবে কাউকে চিহ্নিত করা যায়না। এদিকে এই ঘটনাকে ঘিরে যথেষ্টই অস্বস্তিতে পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ। কেন এমন ঘটনা ঘটলো তা জামালপুর থানার অফিসারদের কাছে ইতিমধ্যেই জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জানতে চেয়েছেন বলে পুলিশ সূত্রে খবর মিলেছে। যদিও ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গেছে, চুরির ঘটনায় ধৃত দুই যুবক তাদের দোষ স্বীকার করছে প্রকাশ্যে। তারা তাদের নাম, ঠিকানাও বলছে। এমনকি কিভাবে, কি কি চুরি করেছে তাও পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে জানাচ্ছে।

পুলিশ সূত্রে জানাগেছে, গত সোমবার সকালে জামালপুর থানার কাছে পর পর তিনটি দোকানে চুরি হয়। অ্যাসবেসটসের ছাদ ভেঙে বেশ কিছু সামগ্রী চুরি করে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। তদন্তে নেমে পুলিশ মঙ্গলবার দুপুরে স্থানীয় পুলমাথা এলাকার থেকে লব বেরা নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করে। পরে সেলিমাবাদ থেকে শেখ শাবির নামে আরও একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে চুরি হওয়া বেশ কিছু সামগ্রী উদ্ধার করে পুলিশ। 

এরপর মঙ্গলবার কোমরে দড়ি বেঁধে তাদের এলাকায় ঘোরানো হয় বলে অভিযোগ। কিন্তু পুলিশের এই কার্যকলাপ মোবাইল ফোনে রেকর্ডিং করে স্থানীয় কিছু মানুষ। আর এরপরই সেই ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। যেখানে দেখা যাচ্ছে ধৃতদের চোর সাব্যস্ত করে খোদ পুলিশ এবং সিভিক কর্মীরা পাবলিককে চিনিয়ে দিচ্ছে। দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আগে অভিযুক্তদের কখনোই এভাবে চিহ্নিত করা যায় না। আর এই ঘটনার পরই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
Advertisement