ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: করোনার বিধি নিষেধের গেরোয় প্রায় দু বছর বন্ধ ছিল বর্ধমানের সমস্ত হোটেল আর রেস্টুরেন্ট। মাঝে কয়েকবার বিধি নিষেধ শিথিল হলেও খাদ্য রসিক মানুষ সাহস জোগাতে পারেননি স্বতস্ফূর্তভাবে সপরিবারে তাঁদের পছন্দের রেস্টুরেন্টে এসে খাওয়াদাওয়া করার। যদি ফের সংক্রমণের শিকার হন, এই ভয়ে। ফলে টানা দীর্ঘদিন ব্যবসায় মন্দা চলায় আর্থিকভাবে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে পড়েছিলেন এই ট্রেডের ব্যবসায়ীরা। শেষমেশ চলতি বছরের মার্চ মাসের পর থেকে জনজীবন ফের স্বাভাবিক হতে শুরু করায় ব্যবসায় কিছু লাভের মুখ দেখতে শুরু করেন বর্ধমানের হোটেল ও রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ীরা।
বিজ্ঞাপন
আর এই কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়ে বর্ধমান শহরের হোটেল ও রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ীদের একাংশ উপলব্ধি করেন তাঁদের এবার সংঘবদ্ধ হতে হবে। তৈরি করতে হবে সংগঠন। একদিকে যেমন নিজেদের ব্যবসায়িক প্রতিকূলতা গুলোকে সংগঠনগত ভাবে মোকাবিলা করা যায়, পাশাপাশি কিভাবে প্রশাসনের সঙ্গে সম্মনয় রেখে এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত সকলের সমস্যার সমাধান করা যায় – এই ভাবনা থেকে শহরের বেশ কয়েকটি হোটেল ও রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী জোটবদ্ধ ভাবে তৈরি করলেন একটি সংগঠন। নাম দেওয়া হল ‘হোটেলস অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট অ্যাসোসিয়েশন অফ বর্ধমান।’ শুক্রবার সন্ধ্যায় বর্ধমান শহরের মৃগয়া হোটেলে এই সংগঠনের পথ চলা শুরু করার বিষয়ে অবগত করার জন্য একটি সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
এদিন সংগঠনের পক্ষ থেকে তাদের নতুন কমিটিও ঘোষণা করা হয়। এই কমিটির সভাপতি মনোনীত হয়েছেন অরূপ পাল। সহ সভাপতি পদে এসেছেন শ্যামল রায় ও শুভ্রম সেনগুপ্ত। সম্পাদক হয়েছেন মলয় সামন্ত। যুগ্ম সম্পাদক পদে আছেন পিনাকী সরকার। এবং কোষাধ্যক্ষ করা হয়েছে দেবব্রত দে কে। এদিন অরূপ পাল বলেন, ” গত দুবছর আমরা একটা কঠিন সময় পাড় করে এসেছি। অনেক কিছু উপলব্ধি করেছি। শিখেছি। আর সেই অভিজ্ঞতা থেকেই এবার আমরা সমস্ত হোটেল ও রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ীদের এক ছাতার তলায় নিয়ে আসার প্রক্রিয়া শুরু করেছি। এই মুহূর্তে আমাদের সংগঠনের সঙ্গে ৪০জন ব্যবসায়ী যুক্ত হয়েছেন। বর্ধমান শহরে প্রায় ৭০থেকে ৭৫জন এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত আছেন। আমরা চেষ্টা করছি বাকিদের সঙ্গে কথা বলে খুব শীঘ্রই সকলকে এক ছাতার তলায় নিয়ে আসার।”
শুভ্রম সেনগুপ্ত বলেন,” আমাদের এই ব্যবসার সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে কয়েক হাজার মানুষের রুজি রোজগারের প্রশ্ন জড়িয়ে আছে। গত দু বছরে কিভাবে আমরা সংসার চালিয়েছি, এমনকি আমাদের সঙ্গে যুক্ত কর্মী ও তাঁদের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছিলাম সেই অভিজ্ঞতা আমাদের অনেক কিছু শিখিয়েছে। আগামীদিনে কিভাবে পরবর্তী কোন বিপর্যয়ের মোকাবিলা আমরা সংঘবদ্ধ ভাবে করতে পারি তার জন্যই এই প্রয়াস। পাশাপাশি এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের কিভাবে আরো উন্নত জীবনযাত্রা দেওয়া যায় সে ব্যাপারেও আমরা ভাবনা চিন্তা করছি।”
সংগঠনের সম্পাদক মলয় সামন্ত বলেন,” ব্যবসা চালানোর পাশাপাশি আমরা সরাবছর বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কর্মসূচি পালন করে থাকি। করোনা অবহেও আমরা দুঃস্থ মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছি। এছাড়াও বৃক্ষরোপণ, ছোটদের শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ প্রভৃতি কর্মসূচি সারাবছর বিভিন্ন সময়ে গ্রহণ করে থাকি। আগামীদিনে এই সমস্ত কর্মসূচি ছাড়াও আরো অন্যান্য সমাজসেবামূলক কাজ এই সংগঠন করবে। এরই সাথে এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ী ও কর্মীদের জীবন জীবিকা যাতে আরও সুরক্ষিত করা যায় সেব্যাপারেও সংগঠন চিন্তাভাবনা করবে।