ফোকাস বেঙ্গল ডেস্কঃ তীরে এসে তরী ডোববার উপক্রম। রাজ্যের মধ্যে করোনামুক্ত অন্যতম জেলা হিসেবে চিহ্নিত পূর্ব বর্ধমানেও এবার করোনার অনুপ্রবেশ। পাওয়া গেলো করোনা আক্রান্ত রোগীর হদিস। আর জেলা প্রশাসনের তরফে এই ঘোষণার পরই জেলা জুড়ে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে ব্যাপক চাঞ্চল্য।
জেলা প্রশাসনের কড়া নজরদারী, প্রতি মূহূর্তে প্রচার সব কিছুই কার্যত প্রশ্ন চিহ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিলেন জেলার খণ্ডঘোষ ব্লকের এক বছর চল্লিশের যুবক। তাঁর রক্ত পরীক্ষায় করোনা পজিটিভ মেলায় রীতিমত উৎকন্ঠার পাশাপাশি আতংকও বাড়ল গোটা দক্ষিণ দামোদর জুড়েই। পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক বিজয় ভারতী রবিবার জানিয়েছেন, ওই যুবকের রক্ত পরীক্ষায় করোনা পজিটিভ পাওয়া গেছে।
এদিকে, পূর্ব বর্ধমান জেলায় প্রথম করোনা পজিটিভ
রোগীর খবর মেলার পরই এদিন জেলা প্রশাসনের সমস্ত উর্ধতন আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করে যান করোনা সংক্রান্ত রাজ্যের পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বীরভূম, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান জেলার দায়িত্বে থাকা রাজ্য সরকারের তপশীলি উন্নয়ন দপ্তরের সচীব রাজেশ সিনহা। এদিন তিনি বর্ধমানের পজিটিভ কেস নিয়ে কিছু বলতে চাননি। তিনি জানিয়েছেন, করোনা সংক্রান্ত বিষয়ে যে চিকিৎসাকেন্দ্রগুলি রয়েছে সেগুলিতে ঠিকঠাক চিকিৎসা চলছে কিনা এবং বাড়ি বাড়ি খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে কিনা সে বিষয় নিয়েই এদিন আলোচনা হয়েছে।
বর্ধমান সার্কিট হাউসে এই বৈঠকের পরই রাজীব সিনহা পশ্চিম বর্ধমানের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে যান। অন্যদিকে, জেলাশাসক , জেলা পুলিশ সুপার সহ এদিন প্রশাসনিক আধিকারিকরা জেলার কৃষি ভবনে সরকারী কোয়ারেণ্টাইন সেণ্টার পরিদর্শনে যান। জেলাশাসক এদিন জানিয়েছেন, মোট ২০টি রক্তের নমুনা পাঠানো হয়েছিল। তার মধ্যে একটা পজিটিভ এসেছে। ওই ব্যক্তিকে দুর্গাপুরে কোভিড হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এরই পাশাপাশি ওই ব্যক্তির সংস্পর্শে এখনও পর্যন্ত যাঁরা যাঁরা এসেছেন বলে চিহ্নিত করা গেছে তাঁদের সকলকেই কোয়ারেণ্টাইন সেণ্টারে নিয়ে আসা হয়েছে।
এখনও পর্যন্ত ৩১জনকে বর্ধমানের ক্যামরি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। আরও কেউ আছেন কিনা তা খোঁজ খবর করা হচ্ছে। এদিন জেলা পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, আক্রান্ত ওই যুবকের গোটা গ্রামকে সিল করে দেওয়া হয়েছে শনিবার রাত থেকেই। ওই গ্রামে কাউকে ঢুকতে বা বার হতে দেওয়া হচ্ছে না। গ্রামবাসীদের যা প্রয়োজন তা প্রশা্সনের পক্ষ থেকে সাহায্য করা হচ্ছে।
এদিকে করোনা নিয়ে লাগাতার প্রচার চালানো হলেও এখনও যে কিছু মানুষ তাঁকে মানছেন না এবং একইসঙ্গে লকডাউন ভাঙার প্রবণতা রয়েছে তার
পরিণাম নিয়ে রবিবার সকাল থেকেই টের পেতে শুরু করলেন পূর্ব বর্ধমান জেলার মানুষ। উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক করোনা আতংক যখন গোটা দেশে জুড়ে বেড়েই চলেছে, সেই সময় শনিবার পর্যন্তও পূর্ব বর্ধমান জেলা ছিল কার্যতই নিশ্চিন্তে। কিন্তু খণ্ডঘোষে করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর সরকারি ভাবে ঘোষণা হতেই জেলা জুড়ে রীতিমত আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে।