ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: সরকারি নির্দেশ কে অন্যান্য করে দিনের পর দিন অবৈধভাবে নদী বাঁধের গা ঘেঁসে মেশিন দিয়ে বালি তুলে পাচার করছে একশ্রেণীর বালি মাফিয়ারা। ফলে দেখা দিয়েছে নদী বাঁধে ভাঙন। ধীরে ধীরে ধ্বসে পড়ছে বাঁধের মাটি। সরে যেতে শুরু করেছে নদীর গতিপথ। আর বালি মাফিয়াদের এই দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে এবার এককাট্টা হতে শুরু করল নদীর তীরবর্তী বসবাসকারী এলাকার সমস্ত শ্রেণীর মানুষ। ঘটনটি ঘটছে পূর্ব বর্ধমানের খন্ডঘোষ থানার গৈতানপুর চরমানা এলাকায়। স্থানীয় এলাকাবাসী দের সহ্যের সীমা অতিক্রম করার পর গতকাল অর্থাৎ সোমবার প্রায় কয়েকশ গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে পড়ে বালি মাফিয়ারা।
বিজ্ঞাপন
গ্রামবাসীরা যৌথ ভাবে বালি উত্তোলন বন্ধ করে দেয় অরোরা,অভিষেক সহ একাধিক বালি উত্তোলন কারী সংস্থার কাজ। নদী থেকে টেনে বের করে দেওয়া হয় বালি তোলার নৌকা। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, দিনের পর দিন এই সমস্ত কোম্পানি এই এলাকায় নদী বাঁধের একদম গা ঘেঁষে মেশিন নামিয়ে বালি তুলে চলেছে। ফলে একদিকে যেমন নদীর স্বাভাবিক গতি পথ পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে চর মানা এলাকার ফসলের জমি ও আশপাশের একাধিক গ্রাম চরম সংকটের সম্মুখীন হয়ে পড়েছে। খন্ডঘোষ ব্লকের বিএলআরও রোহিতরঞ্জন ঠাকুর বলেন, ‘আমি আজই বিষয়টি জানতে পেরেছি। কালই ঘটনাস্থলে রেভিনিউ ইন্সপেক্টার কে পাঠিয়ে তদন্ত করানো হবে। নদী বাঁধের মাটি বা বালি কোনভাবেই কেউ কাটতে পারেননা। এমনটা হয়ে থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
গ্রামবাসীদের আরো অভিযোগ, সামনেই বর্ষা আসছে। নদীর জল বাড়বে। এর আগেও নদী থেকে নিয়ম না মেনে বালি তোলার ফলে বাঁধ ভেঙে এলাকার জমিতে জল ঢুকে গিয়েছে। তবে এবার যেভাবে একেবারে বাঁধের গা ঘেঁষে বালি তোলা চলছে এবং তার ফলে নদী তার স্বাভাবিক গতিপথ পরিবর্তন করে দিয়েছে – তাতে নদীর জল বাড়লে এই এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়বে। হাজার হাজার মানুষ ঘরছাড়া হয়ে পড়বে। এই বিষয়ে পূর্ব বর্ধমান জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক তথা ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দপ্তরের আধিকারিক ঋদ্ধি ব্যানার্জি জানিয়েছেন, এখনও তার কাছে কোনো অভিযোগ আসেনি। তবে খন্ডঘোষের বিএলআরও এর সঙ্গে কথা বলে এলাকার পরিস্থিতি জানা হবে। প্রয়োজনে ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।
ইতিমধ্যেই এলাকাবাসীরা যৌথভাবে খন্ডঘোষ ব্লক ভূমি রাজস্ব আধিকারিকের কাছে লিখিতভাবে তাদের এলাকার সমস্যার কথা জানিয়েছেন। এদিকে গতকাল নদী বাঁধের কাছ থেকে বালি তোলা বন্ধ করে দিতেই মাফিয়াদের গুন্ডা বাহিনীর সঙ্গে রীতিমত সংঘাতের সৃষ্টি হয় প্রতিবাদী গ্রামবাসীদের। গ্রামবাসীরা অবশ্য জানিয়েছেন, তারা তাদের এলাকা রক্ষার জন্য যতদূর আন্দোলন করতে হয় তারা করবেন। প্রশাসনের এই বিষয়ে অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করার আবেদন জানিয়েছেন এলাকাবাসী।