আউসগ্রামে অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তির খুনের ১৩দিনের মধ্যে খুনের কিনারা করল জেলা পুলিশ, বিহার থেকে গ্রেফতার ২

Souris  Dey

Souris Dey

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তির খুনের তদন্তে নেমে মাত্র ১৩ দিনের মাথায় খুনের কিনারা করল পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ। জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, চলতি মাসের ১ তারিখে আউসগ্রাম থানার বিল্লগ্রাম পঞ্চায়েতের বরাগ্রাম লাগোয়া এন এইচ ২-বি সড়কের ধরে নয়নজুলি থেকে ৪৫ বছর বয়সী এক অজ্ঞাত পরিচয় পুরুষের মৃতদেহ উদ্ধার করে গুসকরা বিট হাউস ফাঁড়ির পুলিশ। মৃত ব্যক্তির পরনে ছিল সাদা রঙের কুর্তা এবং পাজামা। মৃতদহ উদ্ধারের পর পুলিশ মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধান করতে একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে। প্রথমেই মৃতের ছবি বিভিন্ন থানা এলাকায় পাঠানো হয়। প্রচারও করা হয়। এরই পাশপাশি তদন্তে নেমে প্রাথমিক পর্যায়ে পুলিশ স্থানীয় এক ব্যক্তির কাছে জানতে পারে যে মৃত ব্যক্তিকে আগের রাতে গুসকারা বিট হাউস সংলগ্ন একটি হোটেলে দেখেছিলেন। পরে সেই হোটেলের মালিকও এই তথ্য নিশ্চিত করেন। তবে নিহতের পরিচয় সেইসময় জানা যায়নি।

বিজ্ঞাপন

পুলিশ জানিয়েছে, এরপর গুসকরা বিট হাউসের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করা হয়। সেখানে দেখা যায় একটি গাড়ি ৩১মে হোটেলের দিক থেকে এসে বর্ধমানের দিকে যাচ্ছিল রাত ১০টা ৪৮নাগাদ। একই ধরণের এবং রঙের গাড়িটি ফের ১জুন ভোর ৩.৩০নাগাদ ফিরে আসে। এরপর সিসি টিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণের কাজ আর তীক্ষ্ণ করা হয়। বিভিন্ন রাস্তায় অন্যান্য সিসিটিভি ফুটেজ অনুসন্ধান শুরু করা হয়। আউসগ্রাম থানার কয়রাপুর মোড়ের কাছে এই গাড়িটিকেই ফের দেখতে পাওয়া যায়। গাড়িটি গুসকরার দিকে আসছিল। এরপর পুলিশের বিভিন্ন বিভাগের সহায়তায় সিসি টিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে জানা যায় গাড়িটি ঝাড়খণ্ডের দিকে চলে গেছে। 

পুলিশ জানিয়েছে, পরে ওসি এসওজি এবং মামলার আইওর সহায়তায় ঝাড়খণ্ডের দিকে সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়ার জন্য চেষ্টা শুরু করা হয়। রাস্তার পাশের খাওয়া হোটেল, পেট্রোল পাম্প ইত্যাদির সমস্ত সিসিটিভি যাচাই করে শেষ পর্যন্ত বিহারের ভাগলপুরে এসে পৌঁছায় জেলা পুলিশের টিম এবং গাড়ির নম্বরটি সনাক্ত করা যায়। এরপর গাড়ির মালিকের ব্যাপারেও নিশ্চিত হয়ে যায় পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, এই গাড়িটিই ৩১মে রাতে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল।

সমস্ত তথ্য এবং সম্ভাবনার নিরিখে পুলিশ নিশ্চিত হওয়ার পর বিহারের সমস্তিপুর জেলার বিথান থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করতে এবং গাড়িটিকে আটক করতে সক্ষম হয় পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ। পাশপাশি মৃত ব্যক্তির পরিচয়ও জানিয়েছে পুলিশ। নাম মহ: খালিদ আনোয়ার ওরফে জুগনু। বাড়ি লাধ কাপাসিয়া, বিথান থানা, জেলা সমস্তিপুর। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, মৃত ব্যক্তি ভূট্টা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বিভিন্ন ভাবে নগদ ২২ লাখ টাকা নিয়ে এলাকা থেকে পালিয়ে যায়। তদন্তে নেমে জেলা পুলিশ এবং বিহার পুলিশ প্রাপ্ত তথ্য থেকে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছে, ধৃত ব্যক্তি সম্ভবত গাঁজা এবং অস্ত্র সরবরাহকারী ছিলেন।

আরো পড়ুন