আচমকাই শুকিয়ে যাচ্ছে রাস্তার ধারের বহু প্রাচীন বৃক্ষ, চোরা শিকারীদের উপদ্রব নাকি প্রাকৃতিক – তদন্তে বনদপ্তর

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,মেমারী: মেমারীর জিটি রোড বরাবর আচমকাই শুকিয়ে যাচ্ছে বড় বড় গাছ। আদপেই এই অবস্থার জন্য প্রাকৃতিক কোন কারণ দায়ী নাকি এর পিছনে রয়েছে দুষ্কৃতীদের কোন বিরাট চক্র – তানিয়ে এবার শুরু হয়েছে ব্যাপক চাঞ্চল্য। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, মেমারীর জিটিরোড বরাবর বেশ কিছু বহু প্রাচীন বিশালকার বৃক্ষগুলি আচমকাই শুকিয়ে যাওয়ায় এলাকার বাসিন্দাদের সন্দেহ – এর পিছনে বড়সড় কোনো চক্র জড়িত রয়েছে। যারা এই সমস্ত গাছগুলিকে রাতের অন্ধকারে বিষ দিয়ে মেরে দিচ্ছে। আর শুকিয়ে যাবার সময় তাদেরই একটি অংশ প্রথমে গাছের ছালগুলি ছিঁড়ে নিচ্ছে এরপর ডালপালা কাটতে কাটতে একটা সময় আস্ত গুড়িওয়ালা গাছগুলিকেই কেটে দিচ্ছে। ধাপে ধাপে পরিকল্পনামাফিক চলছে এই কাজ।

 উল্লেখ্য, সম্প্রতি বর্ধমানের তেলিপুকুর এলাকাতেও আচমকাই বেশ কিছু বড় গাছ এভাবেই শুকিয়ে নষ্ট হয়। একের পর এক এই ধরণের ঘটনায় এবার নড়চড়ে বসেছে জেলা বন দপ্তরও। এব্যাপারে জেলা বনাধিকারিক দেবাশীষ শর্মা জানিয়েছেন, তাঁরা এই ধরণের কিছু অভিযোগ পেয়েছেন। ঠিক কি কারণে গাছগুলি মারা যাচ্ছে সে ব্যাপারে তাঁরা একটি সার্ভেও করাচ্ছেন। তিনি জানিয়েছেন, অনেক সময় দেখা যায় কিছু গাছের বহু বয়স হওয়ার জন্য প্রাকৃতিক নিয়মেই সেগুলি মারা যায়। আবার অনেক সময় গাছের ছাল যদি সব ছাড়িয়ে নেওয়া হয় তাহলেও সেই গাছ মারা যেতে পারে। এরই পাশাপাশি চোরা কাঠশিকারীরাও রয়েছে। তারাও বিষ দিয়ে গাছ মেরে দেয়। দেবাশীষবাবু জানিয়েছেন, তাঁরা প্রথম ধাপে একটি সার্ভে করে দেখতে চাইছেন, যে গাছগুলি মারা যাচ্ছে সেগুলি একই ধরণের এবং একই প্রজাতির গাছ কিনা। তাহলে তাঁরা বোটানিক্যাল সার্ভে বিভাগকে দিয়ে এর কারণ জানবেন। কিন্তু যদি দেখা যায় নানা ধরণের গাছ মারা যাচ্ছে তাহলে তাঁরা সেব্যাপারেও উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবেন।

 অন্যদিকে, হটাতই জেলার বিশেষ বিশেষ প্রান্তে এভাবে বড় বড় বৃক্ষের অপমৃত্যুর ঘটনায় প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ চেয়েছেন পূর্ব বর্ধমান জেলার গাছ মাষ্টার বলে পরিচিত শিক্ষক অরূপ চৌধুরী। অরুপবাবু জানিয়েছেন, এটা অত্যন্ত চিন্তার কারণ। তিনি জানিয়েছেন, অনেক সময় জলের অভাবে গাছ মারা যেতে পারে। আবার চোরা শিকারীদের বা অসাধু মানুষরাও এভাবেও গাছ মেরে তা বিক্রির চেষ্টা চালান। তাই এব্যাপারে প্রশাসনিক দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন। একইসঙ্গে যে সমস্ত এলাকায় এই সমস্ত গাছ আচমকা মারা যাচ্ছে তার যথার্থ কারণ খুঁজে বার করে তার প্রতিকারও করা দরকার। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট এলাকায় আরও বেশি করে গাছ লাগানোও প্রয়োজন।