আজ বর্ধমানে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি, বিভ্রান্তিও চরমে

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: আজ শনিবার বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা। হাইভোল্টেজ এই সফরকে ঘিরে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক পারদ তুঙ্গে উঠেছে। গোটা শহরকে বিজেপির কর্মীরা গেরুয়া পতাকায় মুড়ে দিয়েছে। তৈরী করা হয়েছে একাধিক ওয়েলকাম গেট। লাগানো হয়েছে প্রচুর কাট আউট। বিজেপির রাজ্য মিডিয়া ইনচার্জ সপ্তর্ষি চৌধুরী জে পি নাড্ডার যে সফর সূচি সংবাদ মাধ্যমকে দিয়েছেন তাতে শনিবার সকাল ১১টায় অণ্ডাল বিমান বন্দরে নামবেন নাড্ডা। সেখান থেকে হেলিকপ্টারে তিনি যাবেন কাটোয়ার রাধাগোবিন্দ মন্দিরে। সকাল ১১টা ৪০ নাগাদ তিনি ওই মন্দিরে পুজো দিয়েই জগনন্দপুর গ্রামের মাঠে কৃষক সুরক্ষা সভা করবেন। 

দুপুর ১২টা ৪৫ নাগাদ ওই গ্রামেই বাড়ি বাড়ি ঘুরে চাল সংগ্রহ কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন। দুপুর ১টা নাগাদ গ্রামেরই এক কৃষকের বাড়িতে দুপুরের আহার করবেন। দুপুর ২টো ৫ নাগাদ বর্ধমানে পৌঁছাবেন হেলিকপ্টারে। ৩টে ৫ নাগাদ তিনি বর্ধমানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী সর্বমঙ্গলা মন্দিরে পুজো দেবেন। এরপর সেখান থেকে সরাসরি চলে আসবেন শহরের বীরহাট ঘড়ি মোড়ে। সেখান থেকে প্রায় ১ কিমি তিনি রোড শোয়ে অংশ নেবেন কার্জনগেট পর্যন্ত। রোড শো-এর শেষে তিনি চলে যাবেন নবাবহাট এলাকার অভিজাত একটি হোটেলে। সেখানেই তিনি বিকাল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ সাংবাদিক বৈঠক করবেন। সন্ধ্যে সাড়ে সাতটা নাগাদ তিনি অণ্ডাল থেকে ফের দিল্লীর উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন। এরই মাঝে ওই হোটেলে তিনি জেলার কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি বৈঠকও করবেন বলে বিজেপি সূত্রে জানা গেছে।

এদিকে, নাড্ডার এই বর্ধমান সফরকে ঘিরে শুরু হয়েছে চুড়ান্ত বিভ্রান্তিও। কারণ নাড্ডার সফরসূচীতে বর্ধমানের সর্বমঙ্গলা মন্দিরে তাঁর দুপুর ৩টে ৫ নাগাদ পুজোর দেবার কথা জানানো হলেও শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত এব্যাপারে মন্দিরের কমিটির কাছে কোনোরকম বার্তাই পৌঁছায় নি। মন্দিরের ট্রাষ্ট কমিটির সম্পাদক সঞ্জয় ঘোষ জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত তাঁরা কোনো কিছুই জানেন না। তাঁদের কিছু জানানোও হয়নি। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, সর্বমঙ্গলা মন্দিরের একটি নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। তা সকলেই মেনে চলেন। এক্ষেত্রেও তার কোনো ব্যতিক্রম হবে না – তা সে তিনি যেই হোন না কেন। সঞ্জয়বাবু জানিয়েছেন, প্রতিদিন দুপুর ১টা নাগাদ দেবীর ভোগের পরই দেবীকে তাঁর শয়নকক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। ফের বিকাল ৪টে নাগাদ তাঁকে মূল মন্দিরে নিয়ে আসা হয়। এই সময়ের মধ্যে মন্দিরের গেট বন্ধই থাকে। তা কোনো কারণেই খোলা হয়না। আজ পর্যন্ত এই নিয়মের কোনো ব্যতিক্রমই হয়নি। ফলে দুপুর ৩টে ৫ নাগাদ নাড্ডার যে সূচীতে তাঁর সর্বমঙ্গলা মন্দিরে আসার বিষয় রয়েছে তা নিয়ে চুড়ান্ত বিভ্রান্তি তৈরী হয়েছে।
যদিও এব্যাপারে বিজেপির জেলা কমিটির কোনো নেতাই কিছু বলতে চাননি। বিজেপির রাজ্য মিডিয়া ইনচার্জ সপ্তর্ষি চৌধুরী জানিয়েছেন, তাঁর কাছে নাড্ডাজীর সফর সূচী সংক্রান্ত যে তালিকা পাঠানো হয়েছে তাই তিনি জানিয়েছেন। এব্যাপারে বিশদ তিনি কিছু জানেন না। অপরদিকে, জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নাড্ডার এই রোড শো-এর জন্য ৪জন এসপি পদমর্যাদার পুলিশ অফিসার সহ প্রায় ২০০০ পুলিশ কর্মীকে নিযুক্ত করা হচ্ছে। বীরহাটা থেকে কার্জনগেট পর্যন্ত এই রাস্তার সঙ্গে সংযুক্ত অন্যান্য রাস্তাগুলিকে ওই সময়কালে অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেবার পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে। যাতে নাড্ডার রোড শোয়ে হঠাত করেই কোনো গাড়ি বা কেউ ঢুকে পড়তে না পারেন। এরই পাশাপাশি জেলা বিজেপি সূত্রে জানা গেছে, নাড্ডার এই বর্ধমান শহরে আসা, তাঁকে স্বাগত জানাতে ৬ হাজার গোলাপ, ৭ হাজার গাঁদা ফুলের চেন আনা হয়েছে। ৬ হাজার গোলাপ ফুলের পাঁপড়ি এবং ওই গাঁদা ফুলের পাঁপড়িকে ছড়ানো হবে। শেষমেষ আগামীকাল নাড্ডার এই রোড শো কে কেন্দ্র করে বর্ধমান শহর যে কার্যত দুপুর থেকেই অচল হতে শুরু করবে তাই নিয়ে শহরবাসীর একাংশের মধ্যে অসন্তোষ দেখা গেছে।

Recent Posts