আমফানে ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা সঠিক কিনা তার হিসাব নিতে ব্লক ভিত্তিক সার্ভের নির্দেশ নবান্নের

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: ত্রাণ নিয়ে দলবাজি এবং আমফানে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্থদের বদলে অন্যদের হাতে পৌঁছে গেছে সরকারী আর্থিক সাহায্য – বিরোধীদের এহেন লাগাতার অভিযোগের প্রেক্ষিতেই এবার জেলায় জেলায় সরাসরি সার্ভে করার নির্দেশিকা জারী করল নবান্ন। একইসঙ্গে বৃহস্পতিবার থেকেই পূর্ব বর্ধমান জেলায় ব্লকে ব্লকে শুরু হয়ে গেল এই সার্ভে করার কাজ।

বর্ধমানের অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) অরিন্দম নিয়োগী জানিয়েছেন, রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বুধবার রাতেই এই নির্দেশ এসেছে। এরপরই বৃহস্পতিবার থেকে প্রতিটি ব্লকে ব্লকে আমফানে ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা অনুসারে সার্ভে করার নির্দেশ জারী করা হয়েছে। সেই কাজ এদিন থেকেই শুরু হয়ে গেছে। তিনি জানিয়েছেন, প্রতিটি ব্লক থেকে ক্ষতিগ্রস্থদের যে তালিকা রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে সেই তালিকা অনুসারেই ব্লক পিছু ন্যূনতম ১০০টি বাড়ি সার্ভে করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, রাজ্য সরকার এব্যাপারে যে নির্দেশ জারী করেছে সেই নির্দেশে পরিষ্কার বলা হয়েছে, সরকারের নির্দেশ অনুসারে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্থরাই যে ক্ষতিপূরণের অর্থ পেয়েছেন তা নিশ্চিত করতেই এই সার্ভে সংক্রান্ত রিপোর্ট দ্রুত পাঠাতে হবে রাজ্যে। উল্লেখ্য, আমফানে বিশেষত সম্পূর্ণ বাড়ি ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষেত্রে ২০ হাজার টাকা এবং আংশিক ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষেত্রে ৫ হাজার টাকা সরকারীভাবে দেওয়ার কাজ চলছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, পূর্ব বর্ধমান জেলায় আমফানে প্রায় ১০৯৪টি বাড়ির সম্পূর্ণ ক্ষতি হয় এবং ১০ হাজারের কাছাকাছি আংশিক বাড়ির ক্ষতি হয়।
ইতিমধ্যেই ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা তৈরী করে তা রাজ্যে পাঠানোর পর রাজ্য বিপর্যয় ব্যবস্থাপন দপ্তরের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্থদের আর্থিক সাহায্য দেবার কাজও শুরু হয়েছে। কিন্তু এরই মাঝে বিরোধীরা অভিযোগ তুলতে শুরু করেছেন, আমফানের ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকায় প্রচুর ভূয়ো নাম তোলা হয়েছে। এমনকি প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্থদের নাম বাদ দিয়ে নিজেদের পছন্দমত ব্যক্তিদের এই আর্থিক বরাদ্দ পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। পূর্ব বর্ধমান জেলার ক্ষেত্রেই এমন কিছু ব্লক রয়েছে সেই সমস্ত ব্লকগুলিতে প্রভাবশালী তৃণমূল নেতাদের মদতে ত্রুটিপূর্ণ তালিকা তৈরী হয়েছে। আর এই কারণেই এবার ব্লক ভিত্তিক প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্থরাই এই সাহায্য পেয়েছেন কিনা তা খতিয়ে দেখা শুরু হয়েছে।
অতিরিক্ত জেলাশাসক জানিয়েছেন, পূর্ব বর্ধমান জেলার ক্ষেত্রে এখনও পর্যন্ত আমফানে ক্ষতিপূরণের টাকা না পাওয়া বা অন্য কোনো ধরণের একটাও অভিযোগ আসেনি। তিনি জানিয়েছেন, সিংহভাগ আবেদনই এসেছে রাস্তাঘাট মেরামত বা খারাপ থাকা নিয়ে। যেহেতু রাজ্য সরকারের নির্দেশ, তাই সেই নির্দেশ মেনেই বৃহস্পতিবার থেকে এই খতিয়ে দেখার কাজ শুরু হয়েছে। এই কাজে নিয়োজিত রয়েছেন ব্লকের বিপর্যয় ব্যবস্থাপন দপ্তরের আধিকারিক সহ বিডিও,এসডিও এবং ব্লক স্তরের আধিকারিকরা। উল্লেখ্য, এই সার্ভের সঙ্গে সঙ্গে প্রাপকদের বাড়ির ছবিও তোলা হচ্ছে স্বচ্ছতা বজায় রাখতেই।

Recent Posts