আলুর দাম বৃদ্ধি নিয়ে রাজ্য সরকারের দ্বিচারিতা প্রকাশ্যে, ক্ষোভে ফুঁসছেন আলু ব্যবসায়ীরা

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: একদিকে যখন খোদ রাজ্য সরকার বাজারে খুচরো আলুর দাম ২৫ টাকার মধ্যে বেঁধে দেবার কথা ঘোষণা করেছেন, সেই সময় খোদ রাজ্য সরকারের মিড ডে মিল বিভাগ আসন্ন সেপ্টেম্বর মাসে মিড ডে মিল বাবদ আলু কেনার জন্য সরকারী দামই দিল ৩০ টাকা প্রতি কেজি। কার্যত রাজ্য সরকারের এই দ্বিচারিতার ঘটনায় ফুঁসে উঠেছেন আলু ব্যবসায়ীরা। কারণ বৃহস্পতিবার আলু ব্যবসায়ীদের জন্য রাজ্য টাস্ক ফোর্সের বৈঠকে আলু ব্যবসায়ীদের ২২টাকা কেজি দরে আলু কিনে তা ২৩ টাকায় কলকাতায় দেবার কথা বলা হয়েছে।
রাজ্য আলু ব্যবসায়ী সংগঠনের রাজ্য সভাপতি সাগর সরকার জানিয়েছেন, সরকার ঠিক কি চাইছেন এটাই তাঁদের কাছে স্পষ্ট নয়। একদিকে তাঁদের বলা হচ্ছে ২২টাকা কেজি দরে আলু কিনে তা ২৩টাকা দরে বিক্রি করতে হবে। আবার সেই সরকারই সরকারী রেটে বাজার থেকে আলু কিনতে চলেছে ৩০ টাকা কেজি দরে। শুধু তাইই নয়, আগষ্ট মাসেই সরকার ২৮টাকা কেজি দরে আলু কিনেছে। আর বাজারে আলুর দাম বৃদ্ধি পাবার সঙ্গে সঙ্গে সেই সরকারই ৩০ টাকা কেজি দরে আলু কিনতে নির্দেশ দিচ্ছেন।
সাগরবাবু জানিয়েছেন, তার থেকে অনেক ভাল সরকার চাল কিনে যেমন বিনামূল্যে রেশনের মাধ্যমে তা দিচ্ছেন আলুও তাই করুন। কারণ ব্যবসায়ীদের ওপর অহেতুক চাপ দিয়ে কোনো লাভ নেই। কারণ তাঁরা কার আলু কাকে বিক্রি করবেন ২২ টাকা – ২৩ টাকা দরে। সাগরবাবু জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গের বাইরে অন্যান্য রাজ্যগুলিতে চলতি সময়ে আলুর দাম অনেকটাই বেশি। তাই বাংলা থেকেই আলুর চাহিদা বাড়ছে। সেই সঙ্গে রাজ্যের চাহিদাও পূরণ করতে হচ্ছে। অথচ তিনি জানিয়েছেন, এই মূহূর্তে গোটা রাজ্যে হিমঘরে যা আলু মজুদ রয়েছে তার ৫০ শতাংশ আলুই বেড়িয়ে গেছে। বাকি যে ৫০ শতাংশ আলু রয়েছে তাতে আগামী সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর এবং জানুয়ারী মাসের প্রথম দিকটায় ঘাটতি মেটাতে হবে। ফলে বাজারে বাংলার আলুর যোগান কমে যাবে।
সাগরবাবু জানিয়েছেন, বর্তমানে হিমঘর থেকে আলু বার করে ঝাড়াই, বাছাই সহ অন্যান্য খরচ মিলিয়ে গড়ে ২৭টাকা কেজি প্রতি দাম পড়ছে। ফলে কিভাবে রাজ্য সরকারের নির্দেশ মেনে তাঁরা ২২ টাকা কেজি দরে কিনে ২৩ টাকা দরে বিক্রি করবেন ? উল্লেখ্য, চলতি সময়ে খুচরো বাজারে আলুর দাম ৩০ টাকা কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে। আলুর পাশাপাশি কাঁচা শাক সব্জীর দামও আকাশ ছুঁতে চাইছে। অথচ এখনও পর্যন্ত সরকারী তথাকথিত টাস্ক ফোর্সকে রাস্তায় তথা বাজারে হানাদারী চালাতে দেখা না যাওয়ায় ক্রমশই সরকারের তথা প্রশাসনের সদিচ্ছার ওপর প্রশ্ন চিহ্ন উঠতে শুরু করেছে।