এবার করোনার প্রভাব পতিতাপল্লীতে, দেখা নেই গ্রাহকের, মাথায় হাত যৌনকর্মীদের

Souris  Dey

Souris Dey

বিজ্ঞাপন
ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান ও কালনা: আশঙ্কা ছিলই, এবার করোনা আতংকের প্রভাব সরাসরি পড়তে শুরু করলো জেলার পতিতাপল্লী গুলোতে। রীতিমত প্রায় সারাদিন বসেই কাটিয়ে দিতে হচ্ছে অতিব্যস্ত বর্ধমানের মহাজনটুলী থেকে কালনার স্টেশন সংলগ্ন নিষিদ্ধপল্লীর যৌন কর্মীদের। গ্রাহকদের আশায় 
সুসজ্জিত হয়ে বসে রয়েছেন বারবণিতারা। তবু দেখা মিলছে না মধু পিপাসুদের। পূর্ব বর্ধমানের কালনা এবং বর্ধমান শহরের পতিতাপল্লিতে বৃহস্পতিবার এমন চিত্রই দেখা গেলো। 
বিশ্বজুড়ে মানুষ এখন আতঙ্কিত কোরোনা ভাইরাসের ভয়ে। বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলির পর এখন এই মারণ ভাইরাস একটু একটু করে থাবা বসাচ্ছে ভারতেও। পুরো বিশ্বে প্রায় কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে এই ভাইরাসের সংক্রমন থেকে। আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে প্রায় লক্ষাধিক। ভারতে এখনো পর্যন্ত ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত ১৩৮ জন। প্রতিদিন ভারতে লাফিয়ে লাফিয়ে সংক্রমণের হার বাড়ছে। 
আর এবার করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক থাবা বসাতে শুরু করলো যৌনপল্লীগুলোতেও । উল্লেখ্য, যেখানে রাত বাড়লেই ভিড় জমে বিভিন্ন বয়সী পুরুষের, সেখানে সন্ধ্যার পরই যেন মনে হচ্ছে ভুতপুরী। করোনা ভাইরাসের প্রকোপে প্রায় লাটেই উঠেছে দেহ লালসা, একই সাথে দেহ ব্যবসাও। শারীরিক মিলনের ছোঁয়াতে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে, এই আশংকায় দেখা নেই গ্রাহকদের। ঘোর সমস্যায় যৌন কর্মীরা। তবু পসার সাজিয়ে গ্রাহকের আশায় বসে আছেন তাঁরা। 
বর্ধমানের মহাজনটুলীর মিনতি,শেফালী,রিমা রা ( নাম পরিবর্তিত ) জানালেন, করোনা তাদের ব্যবসা লাটে তুলে দিয়েছে। কিছুদিন আগেও যেখানে গড়ে ১৫ থেকে ২০জন গ্রাহক আসতো, করোনার পর সেটা ৬-৭টায় এসে ঠেকেছে। তার মধ্যে যাদের সর্দি, কাশি আছে তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ফলে ব্যবসার হাল করুন। বাড়ি মালিক কে বাড়ি ভাড়ার টাকাও দিতে পারছেন না তাঁরা। কোনোরকমে কষ্টে শিষ্টে চলছে সংসার। অন্যদিকে, কালনার নিষিদ্ধপল্লীর এক কর্মী জানালেন, যৌনকর্মীরা তাঁদের ব্যবসা চালু রাখলেও খদ্দেরের দেখা নেই। ফলে জেলার সব থেকে বড় যৌনপল্লিতে এখন মন্দার বাজার। সংক্রমণের ঝুঁকি রয়েছে, তবু পেটের তাগিদে যৌনকর্মীরা ব্যবসা বন্ধ করতে পারেননি।
দুর্বার মহিলা সমিতির কো অর্ডিনেটর গঙ্গা দাস জানালেন, এই মুহূর্তে মনুষ্য সমাজের কাছে সবথেকে বড় সমস্যার নাম করোনা ভাইরাস। যৌনকর্মীরাও সমাজের অঙ্গ, তাই তারাও আতঙ্কিত। তিনি জানান, যৌনকর্মীদের জানানো হয়েছে যে সব গ্রাহক সর্দি কাশি নিয়ে আসবেন, তাদের ফিরিয়ে দিতে হবে। প্রয়োজনে এই অবস্থায় গ্রাহক কম নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি সচেতনতার বার্তা প্রত্যেক যৌন পল্লীতে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। সবার কাছে মাস্ক ও সানিটাইজার দেওয়ার ব্যাবস্থাও করা হচ্ছে।

আরো পড়ুন