এবার গলসি কেন্দ্রে তৃণমূল-বিজেপির হাড্ডাহাড্ডি লড়াই

Souris  Dey

Souris Dey

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,গলসী: রাত পোহালেই ষষ্ঠ দফার ভোট। পূর্ব বর্ধমান জেলার ষষ্ঠ দফার নির্বাচনে গলসী, আউশগ্রাম, ভাতার, মঙ্গলকোট, কেতুগ্রাম, কাটোয়া, পূর্বস্থলী উত্তর ও পূর্বস্থলী দক্ষিণ বিধানসভার ভোট অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। সোমবারই এই ৮টি বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারপর্ব শেষ হয়েছে। এখন চলছে রাজনৈতিক দলগুলির চুলচেরা বিশ্লেষণ। গেরুয়া হাওয়া নাকি ঘাসফুল শিবিরের উন্নয়ন – কার দিকে জনতার রায় – তা নিয়ে চলছে জোরকদমে চর্চাও। জেলার গলসী বিধানসভায় এবার মূল লড়াই তৃণমূল বনাম বিজেপি। সংযুক্ত মোর্চার এই কেন্দ্রের প্রার্থী ফরওয়ার্ড ব্লকের নন্দদুলাল পণ্ডিত। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনেও তিনি প্রার্থী ছিলেন। পেয়েছিলেন ৮৪ হাজার ৪৩২টি ভোট। এই কেন্দ্রে জয়ী হন তৃণমূল কংগ্রেসের অলোক মাঝি। তিনি পেয়েছিলেন ৯৫ হাজার ২০৩টি ভোট। বিজেপির প্রার্থী সুন্দর পাশোয়ান পেয়েছিলেন ২১ হাজার ৪৩৫টি ভোট। 

বিজ্ঞাপন
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে এই গলসী কেন্দ্র থেকে বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী পেয়েছিলেন ৮৩ হাজার ৫৫৬টি ভোট। বিজেপির সুরেন্দ্রজিত সিংহ অহলুবালিয়া পেয়েছিলেন ৯৩ হাজার ১৭৭টি ভোট। অন্যদিকে সিপিএমের প্রার্থী পেয়েছিলেন ২১ হাজার ৭১২টি ভোট। স্বাভাবিকভাবেই গত বিধানসভা এবং লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে এবার ২০২১এর গলসী বিধানসভার ভোটে কার্যতই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হচ্ছে। কারণ এই কেন্দ্রে গতবারের বিজয়ী অলোক মাঝিকে সরিয়ে সেখানে প্রার্থী করা হয়েছে নেপাল ঘড়ুইকে। নেপাল ঘড়ুই রায়না থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হিসাবে ২০১৬ সালে জয়ী হয়েছিলেন। কিন্তু এবছর অন্যান্য বিধানসভা কেন্দ্রের পাশাপাশি গলসী বিধানসভার রাজনৈতিক অবস্থান অনেকটাই পাল্টিয়েছে। ভোটের প্রার্থী ঘোষণার পর থেকে রীতিমত নেপাল ঘড়ুইকে হিমসিম খেতে হয়েছে দলীয় কোঁদল মেটাতে। শেষমেষ সকলকে সাথে নিয়েই ভোট যুদ্ধে নেমে পড়েছেন তিনি।
বাদ নেই মূল প্রতিপক্ষ বিজেপিও। মনোনয়নপত্র জমা দিতে এসে প্রার্থীকে ফিরে যেতে হয়েছে। আচমকাই পরিবর্তন করা হয়েছে বিজেপি প্রার্থীকে। ফলে লড়াই এখানে মূলতই তৃণমূলের নেপাল ঘড়ুইয়ের সঙ্গে বিজেপির বিকাশ বিশ্বাসের। তৃণমূল শিবিরের দাবী, এবারের ভোটে কমপক্ষে তাঁরা সাড়ে ৫ থেকে ৬ হাজার ভোটে জয়ী হচ্ছেনই। অন্যদিকে, গেরুয়া শিবিরের দাবী, তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠী কোঁদল এবং তৃণমূল কংগ্রেসের অত্যাচার, তোলাবাজির বিরুদ্ধে ভোটাররা বিজেপি প্রার্থীকেই জয়ী করবেন। উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে গলসী ১ অঞ্চলের দু জায়গায় পরপর মজুদ বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। উদ্ধার হয় কিছু বোমাও। কোনো হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও পরপর এই ঘটনায় আতংকিত হয়ে রয়েছেন গলসী অঞ্চলের মানুষ। 
রাজনৈতিক মহল সূত্রে জানা গেছে, গলসী বিধানসভা এলাকায় প্রায় ৩০ শতাংশ মুসলিম সম্প্রদায় মানুষের বসবাস। সেই ভোটের একচেটিয়া পাওয়ার আশায় রয়েছেন ঘাসফুল শিবির। এই কেন্দ্রে বিজেপি বা তৃণমূলের জয়ের পিছনে বামেরা কতটা ভোট কাটতে পারেন তার দিকেও তাকিয়ে রয়েছেন এই দুই মূল প্রতিপক্ষ। যদি বামেরা বেশি ভোট কাটতে পারেন তাহলে তৃণমূল প্রার্থীর জয়ের পথ ততটাই সুগম হবে – মনে করছেন ঘাসফুল শিবির। যদিও গেরুয়া শিবির এই অংককেই মানছেন না, তাঁরা মনে করছেন গেরুয়া ঝড়ের দাপটে খড়কুটোর মতই উড়ে যাবে ঘাসফুল শিবির।

আরো পড়ুন