এবার বর্ধমানেও দুপুরের খাওয়া মাত্র পাঁচ টাকায়, মিলবে ডিম-ভাত, ‘মায়ের রান্নাঘর’-এর শুভ সূচনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী নবান্নের সভাঘর থেকে সোমবার ‘মায়ের রান্নাঘর’ বা ‘মা কিচেন’-এর শুভ সূচনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যেখানে মাত্র পাঁচ টাকায় মিলবে ডিম-ভাত। পাশাপাশি থাকবে ডাল এবং একটি সবজিও।গোটা রাজ্যের পাশাপাশি বর্ধমান শহরের তিনকোনিয়া বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় মুখ্যমন্ত্রী (ভার্চুয়াল মাধ্যমে) এই প্রকল্পের উদ্বোধন করলেন। এদিন এই প্রকল্প উদ্বোধন অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন রাজ্যের প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, বর্ধমান পৌরসভার মুখ্য আধিকারিক অমিত গুহ, সহ প্রশাসনিক আধিকারিক বৃন্দ । এদিন মন্ত্রী নিজেই সাধারণ মানুষের সঙ্গে এক পাতে বসে কুপন কেটে এই ৫টাকার দ্বিপ্রহরিক আহার সেরে নেন।

বস্তুত অর্থনৈতিক মন্দার এই বাজারে ভাত, ডাল, সব্জি এবং ডিম – সব মিলিয়ে ৫টাকায় দুপুরের ভরপেট এই খাবার কেন্দ্রের উদ্বোধন হওয়ায় এদিন রীতিমত উল্লসিত বর্ধমান শহরের বিশেষত, গরীব খেটে খাওয়া মানুষ সহ সাধারণ নাগরিকরাও। জানা গেছে, বর্ধমান পৌরসভার তত্ত্বাবধানে এই প্রকল্প চলবে। রান্নার কাজ করবেন কয়েকটি স্বনির্ভর গোষ্ঠী। প্রতিদিন কতজনকে খাওয়ানো হবে সে সম্পর্কে এখনও কোনো সুস্পষ্ট নির্দেশিকা তৈরী না হলেও নির্দিষ্ট কুপনের বিনিময়েই এই খাবার দেওয়া হবে বলে জানা গেছে। একসঙ্গে প্রতিবার ৫০জন একসাথে খেতে পারবেন এই ভবনে বলে জানিয়েছেন পৌর কর্তৃপক্ষ।

মাথা পিছু বরাদ্দ করা হয়েছে ১৫টাকা। যার মধ্যে পৌর উন্নয়ন দপ্তর দেবে ১০টাকা এবং প্রয়োজনীয় চাল। ৫টাকা দেবে উপভোক্তা। উল্লেখ্য, গোটা রাজ্যের মধ্যে প্রথম বর্ধমানে ২০১৫ সালের মে দিবসের দিন তৎকালীন জেলাশাসক ড. সৌমিত্র মোহনের মস্তিষ্কপ্রসূত ১০ টাকায় পেটভর্তি খাবারের এই প্রকল্প চালু হয়। এজন্য শহরের বিভিন্ন ব্যবসাদার এবং বিভিন্ন পেশার মানুষকে নিয়ে একটি কমিটিও গঠন করা হয়। তৈরী হয় অন্নপূর্ণা ফাউণ্ডেশন নামে একটি সংস্থাও। পাঞ্জাবের লুধিয়ানায় ১ টাকার বিনিময়ে পেটভর্তি দুপুরের খাবারের ঢঙেই চালু হওয়া বেশ কয়েকবছর এই প্রকল্প ভালভাবে চললেও আস্তে আস্তে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার অভাবে বন্ধ হয়ে যায় অন্নপূর্ণা নামে ওই প্রকল্প।

জানা গেছে, সেই সময় গড়ে প্রতিদিন কয়েকশো মানুষ নিরামিষ এই খাবার খেতেন ১০ টাকার বিনিময়ে। এজন্য সকাল সাড়ে নটা থেকে দুপুর সাড়ে বারোটা পর্যন্ত ১০ টাকার বিনিময়ে কুপন দেওয়া হত। জানা গেছে, আস্তে আস্তে ক্রমশই লোকসানের বহর বাড়তে থাকে এই প্রকল্প চালু রাখতে। ২০১৯ সালের আগষ্ট মাসে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় এই প্রকল্প। এবার সরকারীভাবে ভর্তুকিযুক্ত মাত্র ৫টাকায় মা প্রকল্প চালু হওয়ায় শহরের এবং শহরে বিভিন্ন কাজে আসা গরিব খেটে খাওয়া অগণিত মানুষ সরকারের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য সোমবার নবান্ন থেকে ভারচুয়ালি একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। কলকাতার ওয়েবল মোড়ে চারটি আইটি পার্কের উদ্বোধন করেন। এরপর শ্রী শ্রী পূর্ণব্রহ্ম গুরুচাঁদ ঠাকুরের মূর্তি উন্মোচন করেন। এছাড়া চিত্তরঞ্জন সেবা সদন হাসপাতালে ‘মাতৃ মা’ ভবনও উদ্বোধন করেন। আর এরপরই ‘মায়ের রান্নাঘর’ প্রকল্পের উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Recent Posts