বিজ্ঞাপন
ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: প্রতিশ্রুতি দিলেও মেলেনি উপযুক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা। মেলেনি প্রতিশ্রুতি মোতাবেক অর্থ ও পদোন্নতিও। অথচ চলতি করোনা উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গোটা রাজ্যের ১২৬টি পুরসভার প্রায় ১০ হাজার পৌর স্বাস্থ্য কর্মী নিজের এবং গোটা পরিবারের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে চলেছেন। বারবার আবেদন জানিয়েও কোনো ফল না পাওয়ায় গোটা রাজ্যে ২৭ জুলাই থেকে বিক্ষিপ্তভাবে আন্দোলন শুরু হলেও পূর্ব বর্ধমান জেলায় শুক্রবার থেকে আন্দোলনের পথে পা বাড়ালেন পৌর স্বাস্থ্য কর্মীরা।
শুক্রবার বর্ধমান পুরসভায় বিক্ষোভও দেখান তাঁরা। পৌর স্বাস্থ্য কর্মীদের প্রতিনিধি পাপিয়া দত্ত চক্রবর্তী জানিয়েছেন, গত দশ বছর ধরে গোটা রাজ্যের প্রায় ১০ হাজার পৌর স্বাস্থ্য কর্মীদের দুটি ষান্মানিক অর্থ কাঠামোয় কাজ করতে হচ্ছে ৩৩৩৮ ও ৩১২৫ টাকায়। যা আজকের দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সময়ে একেবারেই বেমানান। এই অর্থ দিয়ে তাঁরা সংসার প্রতিপালন করতে পারছেন না। অথচ তাঁদের নিয়োগ কর্তারা চলতি করোনা পরিস্থিতিতে কাজ করতেই হবে বলে নির্দেশ দিয়েছেন।
পাপিয়াদেবী জানিয়েছেন, সম্প্রতি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের জন্য ঘোষণা করেছিলেন এপ্রিল, মে ও জুন মাসে করোনা পরিস্থিতির জন্য মাসিক ১০০০ টাকা করে ভাতা দেবেন। কিন্তু এপ্রিল ও মে মাসে তাঁরা সেই ভাতা পেলেও জুন মাসের ভাতা জুলাই মাসের শেষেও পাননি। তিনি জানিয়েছেন, এমতবস্থায় তাঁদের প্রতিদিনই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যেতে হচ্ছে। তিনি জানিয়েছেন, মার্চ মাসে করোনা শুরুর সময় পুরসভার পক্ষ থেকে তাঁদের পলিথিনের একটি পিপিই, মাস্ক ও ১০০ মিলিগ্রাম স্যানিটাইজার দেওয়া হয়েছিল। সাধারণত ময়লা পরিষ্কারের কাজ যাঁরা করেন তাঁদের উপযুক্ত গ্লাভসও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ওই পিপিই পড়ে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। গ্লাভসগুলি মহিলাদের কাজে আসছে না। একটিমাত্র মাস্ক বা ১০০ মিলিগ্রাম স্যানিটাইজারে কতদিন চলা সম্ভব প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা।
এরই পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, ৬০ বছর বয়স হলেই তাঁকে বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অথচ ২ বছর আগে তাঁরা যখন মুখ্যমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দিতে গিয়েছিলেন সেইসময় মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, তাঁদের বেতন বৃদ্ধি এখনই সম্ভব না হলেও তাঁদের কাজের বয়সসীমা ৬৫ বছর পর্যন্ত তিনি করে দিচ্ছেন। কিন্তু এখনও তা ফলপ্রসু হয়নি। তিনি জানিয়েছেন, এর ফলে বহু পৌর স্বাস্থ্যকর্মীকে ৬০ বছরের পর রাস্তায় ভিক্ষে করতে হচ্ছে। তাঁদের নেই অবসরকালীন সুযোগ সুবিধাও।
তাই তাঁরা চান তাঁদের স্থায়ী চাকরির স্বীকৃতি সহ জুলাই মাস থেকেই ন্যূনতম মাসে ৫হাজার টাকা করে ষান্মানিক দেওয়া হোক। একইসঙ্গে করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তাও দেওয়া হোক। এব্যাপারে পৌরসভার তরফে সমস্ত দিক পর্যালোচনা করে ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দিয়েছেন পৌরসভার মুখ্যকার্যনির্বাহী আধিকারিক অমিত গুহ।