করোনার গ্রাফ ফের উর্দ্ধমুখী! সকলকে সচেতন হওয়ার বার্তা বর্ধমান জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের
ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: করোনা ভাইরাসের সেকেন্ড ওয়েভের পরে অনেকেই ভেবেছিলো যে, কোভিড-19 সংক্রমণ শেষের পথে। কিন্তু বিগত ৭-১০ দিনে এই রোগ ফের মাথাচারা দিয়ে উঠেছে বলেই রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের রিপোর্টে দেখা গেছে। চলতি সপ্তাহে রাজ্যের দৈনিক করোনা সংক্রমণের সংখ্যা ১০০০ এর গন্ডি ছাড়িয়ে গিয়েছে। গত ২৮ জুলাই রাজ্যের নতুন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৯৫৪ ছিল। সেই সংখ্যাই জুলাইয়ের শুরুতেই যথাক্রমে ১৭৩৯ ও ১৪৯৯। যেখানে জুন মাসের শুরুতে এই সংখ্যাটা মাত্র ১০০-১৫০ এর মধ্যে ছিলো, সেখানে এক লাফে সংক্রমন এতটা বেড়ে যাওয়াই যথেষ্ট উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। পজিটিভিটি রেটও প্রায় ১৩ ছুঁই ছুঁই। ফলে এরই মধ্যে বিশেষজ্ঞরা ফের করোনার প্রকোপ বাড়ার সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছেন।
পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দৈনিক কোভিড রিপোর্ট শেষবার প্রকাশ করা হয়েছিল গত ১৭মার্চ। তারপর থেকে আর কোনো রিপোর্ট সরকারিভাবে প্রকাশ করেনি জেলা প্রশাসন। কিন্তু ২জুলাই থেকে ফের নতুন করে জেলায় করোনা সংক্রমণের কি অবস্থা, তার বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা শুরু হয়েছে। আর সেই রিপোর্টেই দেখা গেছে, গতকাল জেলায় নতুন করে করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন মোট ৩৯জন। তার মধ্যে জেলার ৬টি পুরসভার মধ্যে চারটি পুরসভায় মোট ১২জন আক্রান্তের শিকার। জেলার বাইরে থেকে এসে সংক্রমিত হয়েছেন ৭জন। এবং বাকি ২৩টি ব্লকের মধ্যে বেশ কয়েকটি ব্লক মিলিয়ে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা ২০ জন। বর্ধমান পুরসভা এলাকায় নতুন করে ৯জন আক্রান্ত হয়েছেন বলে স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গেছে।
জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণব রায় বলেন,” সাধারণ মানুষকে আরো বেশি সচেতন হতে হবে। নিয়মিত মাস্ক, স্যানিটাইজার ব্যবহারের অভ্যাস রাখতে হবে। ভিড় এড়িয়ে চলাই বাঞ্ছনীয়। সকলেরই গত দুবছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাই গাফিলতি করা চলবে না। বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নতুন করে ২জন করোনা সংক্রমিত রোগী ভর্তি হয়েছেন। আমরা পরিস্থিতির দিকে লক্ষ্য রাখছি। শনিবার যে ৩৯জনের রিপোর্ট আমাদের কাছে এসেছে তাদের সকলেই উপসর্গহীন।” উল্লেখ্য, বিগত এক দুমাসে সাধারণ নাগরিকরা কোভিড স্বাস্থ্যবিধি একেবারেই মানছেন না। নতুন স্ট্রেনের পাশাপাশি এই অসাবধানতাকেও ডাক্তাররা ফের করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ার জন্য দায়ী করছেন।
তাই ফের স্বাস্থ্যদপ্তর থেকে সাধারণ মানুষদের মাস্ক পড়া ও স্যানিটাইজার ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। প্রসঙ্গত চীনেও কিন্তু দ্বিতীয় ওয়েভের পরে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে বলে আশা করা হয়েছিলো, কিন্তু তাদের দেশে কিছুদিন আগেও নাগরিকদের কঠোরভাবে লকডাউন পালন করতে হয়েছে। তাই অতিরিক্ত অসাধাবধানতা ও অসতর্কতার ফলে আমাদেরও যেন একই পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে না হয় সেবিষয়ে প্রত্যেককে নজর রাখার আবেদন জানানো হচ্ছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে।