বিজ্ঞাপন
ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,কাটোয়া: কি কান্ড! এই রাজ্যেরই সামান্য উত্তরবঙ্গ থেকে বাড়ি ফেরার পর করোনা আতঙ্কে এবার নিজের স্বামীকে ঘরে ঢুকতে দিলেন না স্ত্রী। আর এই ঘটনা চাউর হতেই রীতিমত চাঞ্চল্য ছড়ালো পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার স্টেডিয়াম পাড়ায়।
শরীরে করোনা সংক্রমণ হতে পারে এই সন্দেহে স্বামীকে আগে চিকিৎসা করিয়ে তবেই ঘরে ঢুকতে দেওয়া হবে বলে জানিয়ে দেন স্ত্রী কল্পনা মন্ডল। বাধ্য হয়ে স্বামী অরুণ মন্ডল সরাসরি কলকাতার বেলেঘাটা আই ডি হাসপাতালের চিকিৎসকদের কাছ থেকে করোনা মুক্ত সার্টিফিকেট নিয়ে ফিরে আসেন বাড়িতে। আর তারপরই ঘরের দরজা খোলেন স্ত্রী। যদিও তাতেও নিস্তার পাননি অরুণ বাবু। এখন চিকিৎসক ও স্ত্রীর নির্দেশে ১৪ দিন বিশেষ পর্যবেক্ষণে নিজের বাড়িতে আলাদা ঘরে থাকতে হচ্ছে অরুণ বাবুকে।
ঘটনার সূত্রপাত গত ১৩ মার্চ। কাটোয়া শহরের ব্যবসায়ী স্বামী অরুন মণ্ডল গত ৬ মার্চ বাড়ির অমতেই দার্জিলিং বেড়াতে গিয়েছিলেন । ১৩ মার্চ বিকালে তিনি ফিরে আসেন। কিন্তু এরই মাঝে দেশ জুড়ে করোনা ভাইরাস নিয়ে একের পর এক নানান খবরে প্রভাবিত হয়ে পড়েন স্ত্রী কল্পনা মণ্ডল। তাই অরুণ বাবু ফিরতেই করোনা সংক্রমণের আশঙ্কায় কোনো ঝুঁকি নিতে না চেয়ে স্বামীকে বাড়িতে ঢুকতে বাধা দেয়। স্ত্রী কল্পনা মন্ডলের দাবি, যেভাবে চারিদিকে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের খবর শুনছেন, তাতে সে যেই হোক চিকিৎসকের কাছ থেকে করোনা মুক্ত সার্টিফিকেট ছাড়া বাড়িতে বসবাস করতে দেওয়া যায়না।
আর এরপরই স্ত্রীর মতিগতি বুঝেই নিজেদের ৩৫ বছরের দাম্পত্য জীবনে অশান্তি বাড়াতে না চেয়ে সাত সকালেই ছুটলেন নিজেকে করোনামুক্ত প্রমাণের তাগিদে কলকাতায়। শেষমেষ কলকাতার বেলেঘাটা আই ডি হাসপাতালের চিকিৎসকের দেওয়া সার্টিফিকেট নিয়ে তবেই রেহাই মিলল অরুণ মন্ডলের। রেহাই মিললেও বাড়ির সিঁড়ির নিচে একচিলতে ছোট্ট ঘরে ঠাঁই মিলেছে অরুন মণ্ডলের। আলাদা থালা, আলাদা গ্লাস, নিয়ে কোনরকমে চলছে কোয়েরেন্টাইন জীবন যাপন। আশার কথা, ১৪ দিনের মধ্যে তিনদিন পার করেছেন অরুণ বাবু। স্ত্রী কল্পনা মণ্ডলের মুখে হাসি ফুটলেও দিন গোনা এখনও শেষ হয়নি স্বামী অরুণ মন্ডলের।