কালনা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে প্রসূতিদের কাছে টাকা নেওয়ার অভিযোগ, তদন্তের আশ্বাস কর্তৃপক্ষের

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,কালনা: কালনা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের ভিতরে এবং বাইরে বিভিন্ন জায়গায় লাগানো রয়েছে বড়বড় বোর্ড। যেখানে হলুদ রঙের বোর্ডে নীল কালিতে বাংলায় লেখা রয়েছে – ‘হাসপাতালের সকল পরিষেবা বিনামূল্যে দেওয়া হয়। চিকিৎসার জন্য কোনো আর্থিক লেনদেন করবেন না। কেউ কোনো টাকা চাইলে ৬২৯৬৭৪৬৯৫০ এই নম্বরে যোগাযোগ করুন।’  কিন্তু, তারপরেও সরকারি হাসপাতালের রোগীদের কাছ থেকে বিভিন্ন কারণে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠে আসছে। 

কালনা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগেই চলছে রোগীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার চক্র। ট্রলি ঠেলে ওয়ার্ডে পৌঁছে দেওয়া থেকে শুরু করে, হাতের চ্যানেল লাগানো বা খুলে দেওয়া, এমনকি ছেলে হলে ৫০০টাকা আর মেয়ে হলে ৩০০টাকা দিতে হবে বলে ফরমান জারি করেছে প্রসূতি বিভাগের ওয়ার্ড গার্ল দের একাংশ। ফলে টাকার অভাবে সরকারী হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসা করাতে এসে গরীব রোগীদের কার্যত গুনতে হচ্ছে মোটা টাকা। অনেকেই ভয়ে অভিযোগ করতে চাইছেন না।

অভিযোগ কালনা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের আউটডোর বিভাগের উপরে চারতলা থেকে তিনতলার প্রসূতি বিভাগে চলে এই টাকার খেলা। কোন নির্দিষ্ট অভিযোগ জমা পড়েনি, তাই কিছু করা সম্ভব নয়-দাবী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। সিজার করে বাচ্ছা হওয়া মায়েদের ট্রলি প্রয়োজন হয়। তাই তাঁদের উপড়েই কোপ পড়ে বেশি। যদিও প্রসূতির সঙ্গে আসা তাদের আত্মীয় হীরা হেমব্রম, সুফিয়া বেগম রা বলেন,” নরমাল ডেলিভারি হওয়া প্রসূতি মায়েদের কাছে এরা বেশি টাকা দাবি করে। তিনশোর জায়গায় ২০০টাকা দিতে গেলে নেয় না। বলে, এটাই রেট। দিতে হবে। ছেলে হলে ৫০০। আমরা গরীব মানুষ, বিনা পয়সায় চিকিৎসা করাবো বলে সরকারি হসপিটালে এসেও টাকা দিতে হচ্ছে।”

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক রোগীর পরিজন জানান, সবার কাছেই এই টাকা চাওয়া হচ্ছে। সবাই দিচ্ছে। ওদের দাবী, এটাই নাকি নিয়ম। কিন্তু আমরা গরীব মানুষ, বিনা পয়সায় চিকিৎসা পেতে এখানে পরে আছি। আমাদের কাছেও এইভাবে টাকা নিলে কি করে চলবে?
কালনা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের সহকারী সুপার সুব্রত সামন্ত কে এই বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে বলেন,” এই ধরনের কোনো অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি। তবে আপনাদের কাছে শুনলাম। খোঁজ নিয়ে দেখা হবে। যদি এই ধরনের ঘটনার সঙ্গে কেউ যুক্ত থেকে প্রমাণ হয় তাহলে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সরকারি হাসপাতালে কেউ পরিষেবা দেওয়ার জন্য টাকা দাবি করতে পারেন না।”

Recent Posts