কোনো রাজ্য সরকারই ইউপিএ আইনের যথার্থ প্রয়োগ করছেন না – ডা. কাফিল খান

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: উত্তরপ্রদেশ সরকারের বিরোধিতায় যাঁকে একাধিক মামলায় জর্জরিত করা হয়েছিল, সেই ডঃ কাফিল খান সোমবার রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় স্বাস্থ্য শিবির করার পর বর্ধমানের ক্ষেতিয়া অঞ্চলে এসে দেশের প্রায় সব রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ইউএপিএ আইন এর সঠিক ব্যবহার না করার বিরুদ্ধে সোচ্চার হলেন। কি উত্তরপ্রদেশ সরকার কি অন্য রাজ্য সরকার কেউই ইউএপিএ আইনকে যথাযথভাবে ব্যবহার করছেন না বলে এদিন তিনি জানিয়েছেন। গত ৪দিন ধরে বাংলার বিভিন্ন জায়গায় স্বাস্থ্য শিবির করার পর সোমবার ৮২তম শিবিরে বর্ধমানের ক্ষেতিয়া গ্রামে একটি স্বাস্থ্য শিবিরে  এসে যোগ দেন তিনি। সোমবার বর্ধমানের ক্ষেতিয়া গ্রামে প্রয়াস ও কোয়েস্ট ফর লাইফ নামে দুটি সংগঠনের উদ্যোগে একটি স্বাস্থ্যশিবিরের আয়োজন করা হয়। আর সেখানেই ডাঃ কাফিল খান কার্যত এই আইনের অপপ্রয়োগ করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন।

তিনি জানিয়েছেন, এটা অত্যন্ত ভাল দিক যে বাংলার মানুষ বিজেপিকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। উল্লেখ্য, বর্ধমানের আগে ডা. খান কলকাতা সহ সুন্দরবন, গোসাবাতেও স্বাস্থ্য শিবিরে অংশ নেন। এদিন এই শিবির যারা করেছেন তারা জানিয়েছেন, এই শিবিরে প্রায় ৪৫০জন মানুষের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। যার মধ্যে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. কাফিল খান নিজেই ১৬০টি শিশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। এদিন এই ক্যাম্পে হাজির ছিলেন বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আরও ১০জন চিকিৎসক।
তিনি এদিন জানিয়েছেন, আরএসএস যে আদর্শ নিয়ে চলছে তাতে মানুষের মধ্যে বিভাজন তৈরী করা হচ্ছে। তিনি এর বিরুদ্ধে। তাঁর মত, মানুষ সকলেই সমান। সমাজে সকলেরই সমানাধিকার রয়েছে। সকলেরই নিজ নিজ ধর্ম পালনের অধিকার রয়েছে এই সমাজে – যা সংবিধান স্বীকৃত। কিন্তু ওরা তা চাইছে না। তিনি এদিন জানিয়েছেন, কেবলমাত্র যোগী সরকারই নয়, বিভিন্ন রাজ্য সরকারও এই ইউএপিএ আইনের অপপ্রয়োগ করছেন। তিনি এদিন জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে কি হবে তা তিনি জানেন না। তবে প্রয়োজন হলে তিনি এই আরএসএসের আদর্শের বিরোধিতায় রাজনীতিতে যোগ দিলেও দিতে পারেন।
তিনি জানিয়েছেন, ভারতবর্ষের অনেক রাজ্যে মানুষ এখনও ওষুধের পরিবর্তে দুবেলা দুমুঠো খাবার চান। এই ব্যবস্থার পরিবর্তন হওয়া দরকার। তিনি জানিয়েছেন, কোভিড ভ্যাকসিনই একমাত্র করোনাকে জয় করার হাতিয়ার। কিন্তু বহু মানুষ এ সম্পর্কে জানেন না। উল্লেখ‌্য, যোগীর দেশে অক্সিজেনের অভাবে ৭০টি শিশুর মৃত্যু নিয়ে সরব হয়েছিলেন ডা. খান। তাঁকে ঘিরে গোটা দেশ জুড়েই মোদি সরকার তথা যোগী সরকারের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছিলেন চিকিৎসক মহল থেকে সাধারণ মানুষ।
এদিন ডা. কাফিল খান জানিয়েছেন, তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মিথ্যা মামলা করেছিল যোগী সরকার। তাঁর বিরুদ্ধে ইউএপিএ আইন লাগু করা হয়েছিল। তাঁর ওপর অত্যাচার করা হয়। কিন্তু তাঁকে আটকে রাখা যায়নি।
মানবিক অধিকার রক্ষায় নামা ডা. কাফিল খানকে দেখতেই এদিন কয়েকশো মানুষ হাজির হয়েছিলেন বর্ধমানের ক্ষেতিয়া গ্রামে।