খবরের জের – বর্ধমানে স্বাভাবিক হলো পশু হাসপাতাল, তবে পশু আসার সংখ্যা কম

Souris  Dey

Souris Dey

বিজ্ঞাপন
ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: মঙ্গলবার সকাল থেকেই সচল থাকলো বর্ধমানের রাজ্য প্রাণী স্বাস্থ্য কেন্দ্র। গতকালই ফোকাস বেঙ্গল খবর প্রকাশ করেছিল লকডাউন ঘোষণার পরই বন্ধ সরকারি পশু হাসপাতাল। আর এরপরই তৎপর হয় পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন। মঙ্গলবার সকালে নির্ধারিত সময়েই খুলে দেওয়া হয় শহরের কার্জন গেটের পাশেই এই সরকারি প্রাণী স্বাস্থ্য কেন্দ্রের গেট। 
যথারীতি ডাক্তারবাবু থেকে সাপোর্ট স্টাফ সকলেই হাজির ছিলেন পশুদের চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার জন্য। শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রচুর মানুষও এদিন তাঁদের পোষ্য ও গৃহপালিত প্রাণীদের নিয়ে হাজির হয়েছিলেন চিকিৎসার জন্য। যদিও এই পশু হাসপাতালের ল্যাবরেটরি ইনচার্জ বাসুদেব ঘোষ ছুটিতে থাকায় তিনি উপস্থিত ছিলেন না। পরিবর্তে অপর পশু চিকিৎসক ডাঃ মহ: মোজাফ্ফর এবং তাঁকে সাহায্য করার জন্য একজন স্টাফ সারাদিন প্রায় ১৭ টি বিভিন্ন পশুর চিকিৎসা করলেন।
ডা: মোজাফ্ফর জানালেন, এদিন সকাল থেকে ১১ টি কুকুর, ৪টি ছাগল এবং দুটি খরগোশের এর চিকিৎসা হয়েছে এই হাসপাতালে। তিনি জানিয়েছেন, অন্যান্য সময়ে যেখানে গড়ে ৩৫ থেকে ৪০ টি পশুকে চিকিৎসার জন্য তাদের বাড়ির লোক এই হাসপাতালে নিয়ে আসেন, সেখানে আজকের এই সংখ্যা ছিল খুবই কম। তিনি জানিয়েছেন, বর্তমানে করোনা সংক্রমণের কারণে সরকার লক ডাউন ঘোষণা করায় যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। ফলে পশুদের নিয়ে আসতেও অসুবিধা হচ্ছে। আবার অনেকে নিজেকে এবং তাদের পোষ্য কে সুরক্ষিত রাখতে এই মুহূর্তে খুব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউই হাসপাতালে আসছেন না। 
এদিকে জেলা প্রাণী স্বাস্থ্য কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ থেকে বাঁচতে যখন সরকারি এবং বেসরকারি উদ্যোগে স্যানিটাইজার, মাস্ক প্রভৃতি বিতরণ করা হচ্ছে, তখন পশু হাসপাতালের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় এখনো পাঠানোই হয়নি এই সমস্ত জিনিস। ফলে রীতিমত বিপদ মাথায় নিয়েই এখানে  কাজ করে চলেছেন চিকিৎসক থেকে কর্মীরা। এমনকি পশুর চিকিৎসা করাতে যাঁরা এই হাসপাতালে আসছেন তাঁরাও অসুরক্ষিত অবস্থায় এই হাসপাতালে ঢুকে পড়ছেন। 
চিকিৎসক মোজাফ্ফর জানিয়েছেন, যেভাবে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে  তাতে স্যানিটাইজার, মাস্ক এই মুহূর্তে প্রত্যেক নাগরিকের প্রয়োজন। তাঁরা সারাদিন পশুদের নিয়ে পড়ে থাকলেও তাঁদের কাছে এখনো স্যানিটাইজার, মাস্ক কোনোটাই পৌঁছায়নি। এই নিয়ে কিছুটা হলেও আশংকায় আছেন তাঁরা। এব্যাপারে পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধারা জানিয়েছেন, সমস্ত সরকারি দপ্তরে কর্মীদের জন্য ইতিমধ্যেই স্যানিটাইজার, মাস্ক পাঠানো হচ্ছে। প্রয়োজনের তুলনায় যোগান কিছুটা কম থাকলেও খুব শীঘ্রই পশু হাসপাতালেও স্যানিটাইজার, মাস্ক পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
অন্যদিকে, বর্ধমান শহরের পশু প্রেমী সংগঠন ভয়েস ফর ভয়েসলেসের সম্পাদক অভিজিৎ মুখার্জি জানিয়েছেন, শহরের ৫ নং ইছলাবাদে তাঁদের অ্যানিম্যাল কেয়ার উইনিটের টোল ফ্রি নম্বরে ফোন করেছেন অনেকে। এঁদের মধ্যে জরুরি ভিত্তিতে ৪ টি কুকুরের চিকিৎসা করেন তাঁদের চিকিৎসক। এছাড়াও একটি বিড়ালের রোগের লক্ষণ শুনে ওষুধ ফোনে জানিয়ে দেওয়া হয়। অভিজিৎ বাবু জানিয়েছেন, সরকার যতদিন না লকডাউন তুলছেন ততদিন এই পরিষেবা তাঁরা চালু রাখবেন।

আরো পড়ুন