গণ আত্মঘাতী পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে পুজোয় – মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে আতংকের কথা জানালেন চিকিৎসকরা

ফোকাস বেঙ্গল ওয়েব ডেস্ক: রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশকে মাথায় রেখেই গোটা রাজ্যের পাশাপাশি পূর্ব বর্ধমান জেলা জুড়েই শুরু হয়ে গেছে দুর্গাপুজোর প্রস্তুতি। করোনা আবহকে মাথায় রেখে সমস্ত রকমের বিধি নিষেধকে মান্যতা দিয়েই পুজো উদ্যোক্তারা পুজোর আয়োজনও শুরু করে দিয়েছে। এদিকে আসন্ন পুজোর এই উন্মাদনাকে ঘিরে রীতিমত আশঙ্কা ব্যক্ত করলেন চিকিৎসক মহল। 

ইতিমধ্যেই তাঁরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে কার্যত করোনা সংক্রমণ বাড়ার আশংকা করে দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা নেবারও আবেদন জানালেন চিকিৎসকদের জয়েন্ট ফোরাম। ওয়েস্ট বেঙ্গল জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টরস ফোরামের যুগ্ম আহ্বায়ক ডাঃ হীরালাল কোঙার এবং ডাঃ পুণ্যব্রত গুণ জানিয়েছেন, তাঁরা আসন্ন দুর্গাপুজোয় করোনা সংক্রমণ আরও বৃদ্ধি পাবার আশংকা করছেন। আর তাই এব্যাপারে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।

চিকিৎসকদ্বয় জানিয়েছেন, শারদোৎসব বাঙালির আবেগ আনন্দ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করার সবচেয়ে বড় উৎসব। উৎসব পালনের উন্মাদনা বিশ্বের নানা দেশের সঙ্গে এই রাজ্যেও আছে। কিন্তু এখন করোনা কাল চলছে। তাঁরা জানিয়েছেন, মহারাষ্ট্রে গণেশ চতুর্থী নিয়ে মাতামাতি আটকানো গেছে । নবরাত্রিতে ঐতিহ্যশালী গর্বা নাচও বাতিল করেছে গুজরাট, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র সরকার। এমনকি বাংলাতেও প্রশাসনের সঠিক ভূমিকায় ঈদ, মহরম পালিত হয়েছে ঘরের মধ্যেই।
তাঁরা জানিয়েছেন, এরই পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধিতে শিথিলতা ঘটলে কি ভয়ংকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় তার পরিচয় মিলেছে কেরালায়। ওনাম-এর লাগামহীন উৎসব পালনের পর সেই রাজ্যে কোভিড সংক্রমণ বেড়ে গেছে সাড়ে সাতশো শতাংশ। ভয়াবহ পরিস্থিতির কারণে সেখানে রাজ্যজুড়ে ১৪৪ ধারা জারি হয়েছে। স্পেনে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপনে ফুটবল ম্যাচের জনসমাগমের পর সে দেশে কোভিড সংক্রমণ তুঙ্গে ওঠে।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এই রাজ্যেও মহালয়া ও বিশ্বকর্মা পুজোর পর থেকে লক্ষ্যণীয় ভাবে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটা অশনি সংকেত। এইসব ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে চিকিৎসা বিজ্ঞানের বাস্তবতা বিচার করে তাঁদের ধারণা আসন্ন পূজোর সময় উপযুক্ত সাবধানতার অভাব ঘটলে এই রাজ্যের নাগরিকদের জন্য এক গণ আত্মঘাতী পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। 

সংক্রমণের সুনামি ঘটে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। চিকিৎসক স্বাস্থ্য কর্মীদের, পুলিশ প্রশাসন কর্মীদের একটানা এতদিনের সব পরিশ্রম জীবনদান ও সরকারের এতদিনের সব সদর্থক উদ্যোগ কয়েকদিনের সাময়িক আনন্দ উন্মাদনার জন্য নষ্ট হতে দেওয়া যায় না। চিকিৎসকরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এব্যাপারে দু দফা দাবীও জানিয়েছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, এবারের পূজোয় যেকোনও উপায়ে জনস্রোত বন্ধ করার জন্য যথযথ এবং কার্যকারী ব্যবস্হা নেওয়া এবং বাড়ির বাইরে প্রতিটি নাগরিকের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করার আবেদন জানানো হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে।

Recent Posts