গলসিতে কোটি টাকার দামি গাছ কেটে বিক্রির অভিযোগ, চাঞ্চল্য

Souris  Dey

Souris Dey

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,গলসি: বেআইনি ভাবে দীর্ঘদিন ধরে পঞ্চায়েতের অধীনে রাস্তার একাধিক গাছ কেটে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল গলসি ২ ব্লকের মসজিদপুর এলাকায়। বৃহস্পতিবার এই বিষয়ে বিডিও (গলসি ২) সঞ্জীব সেনেরর কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। অভিযোগে তাঁরা উল্লেখ করেছেন, গত দুমাস ধরে রাস্তা সংস্কারের অজুহাতে রাস্তার দুধরের প্রায় দু হাজার গাছ কেটে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। তাঁরা আশংকা প্রকাশ করেছেন দ্রুত প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ না হলে বাকি যে সমস্ত গাছ আছে সেগুলোও আর থাকবে না। 

বিজ্ঞাপন
অভিযোগকারীদের দাবি, কাটা গাছগুলির বর্তমান বাজারদর অন্তত ৮০ লক্ষ থেকে ১ কোটি টাকা। বিডিও সঞ্জীব সেন বলেন, “অনুমোদন ছাড়া গাছ কাটা যায় না। অভিযোগ বন দফতরে পাঠিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছে।” ডিএফও (বর্ধমান) নিশা গোস্বামী বলেন, “এই ধরণের কোনো অভিযোগ আমি পাইনি। পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গলসি থেকে শিকারপুর যাওয়ার দূরত্ব প্রায় ১৪ কিলোমিটার। এই রাস্তার বেশিরভাগ অংশই মসজিদপুর পঞ্চায়েতের অন্তগর্ত। রাস্তার দু’পাশেই রয়েছে কয়েশো গাছ। মাস ছ’য়েক আগে ওই রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। আর তারপর থেকেই রাস্তা সম্প্রসারণের বাহানায় রীতিমত অবৈধ ভাবে মাস দু’য়েক ধরে গাছগুলি কাটা শুরু হয়। প্রথমদিকে গ্রামবাসীরা কিছু জানতে না পারলেও পরবর্তীকালে গাছ কেটে বিক্রি করে দেওয়ার যে একটা চক্র কাজ করছে সেটা প্রকাশ্যে চলে আসে। 

আর এরপরই এদিন এই অনৈতিক কাজের সঙ্গে যারা যুক্ত তাদের নাম উল্লেখ করে প্রশাসনিক মহলে অভিযোগ দায়ের করেন গ্রামবাসীরা। অভিযোগে নির্দিষ্ট করে উল্লেখ করা হয়েছে গুসকরা, পাত্রহাটি ও জাগুলীপাড়ার ব্যবসায়ীরা কাটা গাছগুলি নিয়ে যাচ্ছে। আর এই কাজে মদত দিচ্ছে স্থানীয় কিছু তৃণমূল নেতা। যে সমস্ত গাছ রাস্তার দুধারে লাগানো ছিল সেগুলো হল সোনাঝুরি, শিরিশ, বাবলা সহ একাধিক জাতের বৃক্ষ। যদিও তৃণমূলের পক্ষ থেকে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। 

মসজিদপুর পঞ্চায়েত প্রধান অশোক বাগদি জানিয়েছেন, গাছ কাটার বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। এমনকি এই ঘটনার সঙ্গে কারা যুক্ত সেব্যাপারেও তিনি কিছু জানেননা বলেই জানিয়েছেন। পাশপাশি গলসি-১ পঞ্চায়েত সমিতির বন ও ভূমি কর্মাধক্ষ্য সাবিরুদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, যে পঞ্চায়েত এলাকায় গাছ কাটা হয়, সেই পঞ্চায়েত সরকারি নিয়ম মেনে টেন্ডার নোটিস করে স্থায়ী সমিতির মিটিং ডেকে সিদ্ধান্ত পঞ্চায়েত সমিতিতে পাঠায়। পরবর্তীতে সমিতি সেই বিষয়ে মিটিং করে গাছ কাটার অনুমোদন চেয়ে বনবিভাগের কাছে পাঠায়। বনবিভাগ নির্দেশ দিলে পঞ্চায়েত সেই সমস্ত গাছ কাটাতে পারে। গাছ কাটার পর তা বিক্রির টাকা পঞ্চায়েতেই জমা হয়। পঞ্চায়েত সমিতির কাছে সেই টাকা আসেনা। সুতরাং এই বিষয়ে তাঁর কাছে এর বেশি তথ্য নেই।

আরো পড়ুন