ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,গলসি: গলসী থানার মসজিদপুর পঞ্চায়েতের প্রায় ১০ কিমি রাস্তার দুপাশে থাকা প্রায় ১ কোটি টাকা মূল্যের গাছ গত দুমাস ধরে কেটে পাচার করার ঘটনাকে ঘিরে গোটা গ্রাম জুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। এই ঘটনার পিছনে স্থানীয় বেশ কয়েকজন তৃণমূল নেতার নাম করে গলসী বিডিও-র কাছে ২২তারিখ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন গ্রামবাসীরা। একইসঙ্গে জেলা বনাধিকারিকের কাছেও তাঁরা এব্যাপারে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চেয়ে আবেদন করেছেন। অন্যদিকে, মসজিদপুর অঞ্চলের ইটারু গ্রামের বাসিন্দা তথা তৃণমূলের জয়হিন্দ বাহিনীর সভাপতি গুল মহম্মদ মোল্লা সহ একাধিক তৃণমূল নেতার নামে অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর শুক্রবার পাল্টা খোদ গুল মহম্মদ মোল্লাই বিডিওর কাছে গাছ চুরির পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চেয়ে আবেদন জানিয়েছেন। আর এরপরই গোটা ঘটনায় চাঞ্চল্যকর মোড় নিতে শুরু করেছে। সবমিলিয়ে গোটা ঘটনাকে ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনাও তৈরী হয়েছে গ্রামে।
মসজিদপুর পঞ্চায়েতের একাধিক গ্রামবাসীদের অভিযোগ, গত দুমাস ধরে রাস্তা সংস্কারের অজুহাতে রাস্তার দুধারের প্রায় দু হাজার গাছ কেটে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। তাঁরা আশংকা প্রকাশ করেছেন দ্রুত প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ না হলে বাকি যে সমস্ত গাছ আছে সেগুলোও আর থাকবে না। অভিযোগকারীদের দাবি, কাটা গাছগুলির বর্তমান বাজারদর অন্তত ৮০ লক্ষ থেকে ১ কোটি টাকা। গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, গলসি থেকে শিকারপুর যাওয়ার দূরত্ব প্রায় ১৪ কিলোমিটার। এই রাস্তার বেশিরভাগ অংশই মসজিদপুর পঞ্চায়েতের অন্তগর্ত। রাস্তার দু’পাশেই রয়েছে কয়েশো গাছ। মাস ছ’য়েক আগে ওই রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। আর তারপর থেকেই রাস্তা সম্প্রসারণের বাহানায় রীতিমত অবৈধ ভাবে মাস দু’য়েক ধরে গাছগুলি কাটা শুরু হয়।
যদিও গুল মোহাম্মদ মোল্লা এই ঘটনায় তার নাম জড়ানোর বিষয়ে বলেন, এটা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কাজ। তাঁকে রাজনৈতিক ভাবে বদনাম করার জন্যই কয়েকজন কোনো তথ্য ছাড়াই তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। তিনি অভিযোগে জানিয়েছেন, এই ঘটনার তদন্তে প্রশাসনকে সবরকম সহযোগিতা করতে তিনি প্রস্তুত। কারণ এর আগেও ২০২০সালে নভেম্বর মাসে এই এলাকার গাছ চুরির বিষয়ে মসজিদপুর এলাকার বাসিন্দারা গলসি থানায় অভিযোগ জানিয়েছিলেন। কেউ ধরা পড়েনি। এবারও যারা এই গাছ কেটে পাচারের ঘটনায় জড়িত তাদের গ্রেফতার করুক পুলিশ।
মসজিদপুর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান অশোক বাগ্দী বলেন, আমরা আগে বিডিও অফিসে বলেছিলাম। তাদের কথামত থানায় অভিযোগও করেছিলাম। কিন্তু কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় দুস্কিতীদের সাহস বেড়ে গেছে। এখন ব্যবস্থা না নিলে আর যে কটি গাছ বাকি আছে তাও চুরি হয়ে যাবে। পঞ্চায়েত সমিতির বন ও ভূমির কর্মাধক্ষ্য সেখ সাবিরউদ্দিন আহম্মেদ বলেন, গতকাল এলাকার মানুষ কোটি টাকা মুল্যের গাছ চুরির অভিযোগ করছেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে তিনিও চান ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্ত মুলক সাজার ব্যবস্থা করুক বনবিভাগ।