ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: কি সাংঘাতিক কান্ড, বাবা, মা, ঠাকুমা, বাড়ির কাজের লোকের নজরদারির মধ্যে থেকেই চলন্ত রাতের ট্রেন থেকে লাইনে পরে গেল সদ্য হাটতে শেখা দেড় বছরের ফুটফুটে কন্যা সন্তান। কি ঘটে গেল বুঝে ওঠার আগেই তখন পরিবারের লোকেদের রক্ত হিম হওয়ার জোগাড়। রাতের অন্ধকারে চলন্ত ট্রেন থেকে আর কিছুই দেখা গেল না। শুধুই হা হুতাশ। উপায় বলতে পরের স্টেশনে নেমে ফিরে গিয়ে সন্তানের খোঁজ করা।
শুত্রুবার রাত ৮টা ৪২মিনিট নাগাদ হাওড়া বর্ধমান কর্ড লাইনের পাল্লারোড স্টেশনের কাছে ঘটে যায় এই মর্মান্তিক ঘটনা। বর্ধমানের দিকে পরবর্তী স্টেশন শক্তিগড়ে সবাই নেমেই ছুটে যান সাহায্যের জন্য আরপিএফ এর কাছে। ঘটনার কথা জানানোর সঙ্গে সঙ্গে রেল লাইন ধরে টর্চ জ্বালিয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করে রেল পুলিশ। রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় শিশু কন্যাটিকে। দ্রুততার সঙ্গে পাঠানো হয় বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। জানা গেছে শিশুটির মাথায় চোট রয়েছে। যদিও শিশুটির শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় রাতেই কলকাতায় রেফার করেছে বর্ধমান মেডিকেল।
কিন্তু পরিবারের সকলের উপস্থিতিতেও কি করে ঘটে গেল এমন ঘটনা? জানা গেছে, সবেমাত্র একটু আধটু হাটতে শিখছে শিশু কন্যাটি। ট্রেনে সবার সামনেই খেলা করছিল সে। হঠাৎই ট্রেনের দরজার সামনে চলে যায় ওই শিশু। আর তখনই ঘটে যায় বিপত্তি। মুহূর্তের অসচেতনতায় ট্রেনের ঝাকুনি আর দমকা হাওয়ায় দরজা থেকে নিচে পড়ে যায় শিশু কন্যাটি। সম্বিৎ ফিরতেই দম বন্ধকর পরিস্থিতি তৈরি হয় বাবা মায়ের। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, দের বছরের শিশু বাবা মায়ের হাত ছেড়ে দরজার কাছে গেল কিভাবে!
এই প্রশ্নই এখন সকলের মনে। রেল পুলিশ থেকে শুরু করে হাসপাতালের ডাক্তার নার্স সকলেই একই প্রশ্ন তুলছেন। রেল পুলিশ প্রাথমিক তদন্তের পর জানিয়েছে, বাবা মায়ের চরম গাফিলতির জন্যই এই ঘটনা ঘটেছে বলেই মনে করা হচ্ছে। ট্রেনের কামরায় ঘোরাঘুরি করতে করতে শিশুটি গেটের কাছে চলে এলে এই বিপত্তি ঘটে।
এদিকে রেল সূত্রে জানা গেছে, লিলুয়া থেকে বর্ধমানে যাচ্ছিল একটি পরিবার। বিজয় চৌধুরি নামে এক ব্যক্তি, তাঁর স্ত্রী সীমা, সাত বছরের ছেলে, দেড় বছরের মেয়ে, মা ও এক আত্মীয়কে নিয়ে লিলুয়া থেকে বর্ধমান হাওড়া কর্ড লাইন লোকাল ধরেন। বর্ধমান স্টেশন থেকে প্রতাপ এক্সপ্রেস ধরে রাজস্থান যাওয়ার কথা ছিল তাঁদের। আর এরই মধ্যে ঘটে যায় এই মারাত্মক ঘটনা। যা নিয়ে শুরু হয়ে তীব্র আলোড়ন।