ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,আসানসোল ও বর্ধমান: বেআইনি একটি অর্থলগ্নি সংস্থার সঙ্গে আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগে গ্রেপ্তারের পর সিবিআই হেফাজতে চারদিন কাটিয়ে বর্ধমান পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলী বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রণব চট্টোপাধ্যায়কে সোমবার ফের পেশ করা হল আসানসোল সিজেএম আদালতে। দু পক্ষের আইনজীবীদের প্রায় দু’ঘন্টা সওয়াল-জবাব শেষে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তরুণ কুমার মন্ডল প্রণব চট্টোপাধ্যায়ের জামিন নাকচ করে ১৪দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। আগামী ২৭ ডিসেম্বর ফের প্রণব চট্টোপাধ্যায়কে আদালতে পেশ করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
এদিন প্রণববাবুর জামিনের পক্ষে আসানসোল আদালতের আইনজীবী শেখর কুন্ডু ছাড়াও বর্ধমান আদালতের একাধিক আইনজীবী সওয়াল করেন। যাঁদের মধ্যে বর্ধমান বার এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও সম্পাদকও হাজির ছিলেন। আইনজীবীরা বলেন, চার্জশিট ও এফআইআরে নাম না থাকা সত্বেও তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁরা আরো বলেন, সুপ্রিম কোর্টের কিছু পর্যবেক্ষণ রয়েছে যে কোভিড পরিস্থিতিতে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া বয়স্ক মানুষদের জেলে না রাখার বিষয়ে। আর এই প্রসঙ্গে আইনজীবীরা প্রণববাবুর ৭১ বছর বয়সের কথাও উল্লেখ করেন আদালতে। এমনকি তাঁর শারীরিক সমস্যাও কথাও বিচারককে জানানো হয়। আর এরপর প্রণববাবুর আইনজীবীরা যে কোন শর্তে তাঁর জামিন মঞ্জুরের আবেদন করেন আদালতের কাছে।
পাশাপাশি এদিন সিবিআইয়ের আইনজীবী এস শশাঙ্ক জামিনের তীব্র বিরোধিতা করে প্রণব চট্টোপাধ্যায়ের প্রভাবশালী হওয়ার কথা তুলে ধরেন আদালতে। তিনি বলেন, অভিযুক্তর মাধ্যমে ৩ কোটি ৭৬ লক্ষ টাকার লেনদেন হলেও, এই কেলেঙ্কারি প্রায় ৯০ কোটি টাকার। নামেই তিনি ঐ সংস্থার লিগ্যাল এ্যাডভাইজার ছিলেন। আসলে ওই অর্থলগ্নি সংস্থার সবকিছু তিনিই ছিলেন। এদিন সিবিআইয়ের আইনজীবী প্রণব চট্টোপাধ্যায়কে নতুন করে হেফাজতে না চাইলেও, তার জামিনের তীব্র বিরোধিতা করেন।
প্রসঙ্গতঃ, এই কেলেঙ্কারিতে ভারতীয় দন্ডবিধির ৪০৬, ৪০৯, ৪১৯, ৪২০, ৪৬৮ ও ১২০/বি নম্বর ধারায় মামলা হয়েছে ( নম্বর কুলটি থানা ১৯/১৪, তারিখ ২১/১/১৪)। যদিও জানা গেছে, ধৃত প্রণব চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ভারতীয় দন্ডবিধির ৪০৯ ও ১২০/বি নং ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে। এই মামলায় সৌমদীপ ভৌমিক সহ মোট দুজন ও আরো দুটি সংস্থার নাম এফআইআরে রয়েছে। প্রায় ৪ কোটি টাকার কেলেঙ্কারি হয়েছে বলে সিবিআই প্রথমে আদালতে জানিয়েছিলো।