চুড়ান্ত সতর্কতা বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে, বন্দিদের স্নান করিয়ে ঢোকানো হচ্ছে সংশোধনাগারে

Souris  Dey

Souris Dey

বিজ্ঞাপন
ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: এবার করোনা ভাইরাস নিয়ে কড়া সতকর্তা অবলম্বন করল পূর্ব বর্ধমান জেলা কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার কতৃপক্ষ।  জানা গেছে, সোমবারই রাজ্য সংশোধনাগার দপ্তর থেকে জয়েণ্ট সেক্রেটারীর নির্দেশনামা এসে পৌঁছেছে বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে। যদিও তার আগে থেকেই করোনা পরিস্থিতির দিকে লক্ষ্য রাখছিলেন সংশোধনাগার কতৃপক্ষ।সংশোধনাগারের সিনিয়র মেডিকেল অফিসার ডা. দেবাশীষ সরকারের নির্দেশে সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ আগেই শুরু করে দিয়েছিলেন করোনা ভাইরাস নিয়ে নানান সতর্কতামূলক ব্যবস্থা। 
বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের সুপার আশীষ বণিক জানিয়েছেন, আগাম সর্তকতা হিসাবে সংশোধনাগারের যে সব বন্দিদের আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বা নিয়ে আসা হচ্ছে – তাদের ভাল করে মেডিকেটেড সাবান দিয়ে স্নান করানো হচ্ছে। তারপরেই সংশোধনাগারের তাঁদের নির্দিষ্ট জায়গায় পাঠানো হচ্ছে। শুধু এটাই নয়, সংশোধনাগারের যে সমস্ত কর্মী এই সব বন্দিদের নিয়ে যাওয়া আসা করছেন তাঁদের জন্যও গ্লাভস, মাস্ক সহ প্রতিষেধক ব্যবস্থা হিসাবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। 
আশীষবাবু জানিয়েছেন, যেহেতু বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে প্রায় সময়ই অতিরিক্ত বন্দি থাকেন তাই চলতি সময়ে করোনা ভাইরাস নিয়ে তাঁরাও যথেষ্ট চিন্তিত। তিনি জানিয়েছেন, যেহেতু এই সমস্ত বন্দিদের কারও এই করোনা ভাইরাস হলে ভয়ংকর সমস্যা দেখা দিতে পারে – তাই দপ্তরের নির্দেশনামা আসার আগে থেকেই তাঁরা চিকিৎসকের পরামর্শমত সতর্কতা অবলম্বন করেছেন। নিয়ম করে এখন সংশোধনাগারের বন্দি ও কর্মীদের গরম জলে হাত, পা, মুখ ধোওয়া এবং কুলকুচি (গারগেল) করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। 
এরই পাশাপাশি প্রতিটি জায়গাকে নিয়মিত পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার ওপরও জোড় দেওয়া হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, শুধু বন্দিরাই নন, একইসঙ্গে সংশোধনাগারের কর্মী, অফিসারদেরও এই নিয়ম পালন করার জন্য বলা হয়েছে। উল্লেখ্য, বর্ধমান কেন্দ্রীয় এই সংশোধনাগারের বন্দি থাকার ক্ষমতা রয়েছে ৭৬৯ জনের। কিন্তু অধিকাংশ সময়ই এই বন্দি সংখ্যা দ্বিগুণও ছাপিয়ে যায়। সোমবারই বন্দি সংখ্যা রয়েছে ১০৩৮জন। সংশোধনাগারে রয়েছে ৫টি ওয়ার্ড। যেখানে প্রতিটি ওয়ার্ডে রয়েছেন কমবেশি ১৫০ জন করে। 
আগে প্রতিটি ওয়ার্ডে বন্দিদের শোওয়ার জন্য সিমেণ্টের বাঁধানো বেদি থাকত। কিন্তু তার ফলে জায়গা সংকুলান নিয়ে সমস্যা দেখা দেওয়ায় ওই বেদিগুলি ভেঙে ফেলা হয়েছে ২০১৮ সালে। উল্লেখ্য, স্বাস্থ্য দপ্তরের নির্দেশানুসারে চলতি করোনা ভাইরাসের জন্য এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তির দূরত্ব ন্যূনতম ৪ মিটার রাখার নির্দেশ রয়েছে। আশীষবাবু জানিয়েছেন, এই নিয়ম পালন করা সম্ভব হচ্ছে না তাঁদের পক্ষে। কারণ বন্দিদের চাপ এতটাই বেশি যে এই নিয়ম মানতে গেলে এই বন্দিরা যাবে কোথায়। 
স্বাভাবিকভাবেই বর্তমান পরিস্থিতিতে ব্যক্তি দূরত্ব বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে ২ ফুটের বেশি রাখাও যাচ্ছে না। আশীষবাবু জানিয়েছেন, যেহেতু এখনও বর্ধমানে এই ধরণের কোনো করোনা আক্রান্তের খবর নেই, এমনকি খোদ এই সংশোধনাগারেও এইরকম কোনো বিষয় ঘটেনি। কিন্তু তা সত্ত্বেও তাঁরা সতর্কতা অবলম্বন করার ক্ষেত্রে কোনোরকম ঘাটতি রাখছেন না। সর্বতোভাবে তাঁরা চেষ্টা করছেন এব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করতে। আশীষ বাবু জানিয়েছেন, বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের বন্দিরাই মেডিকেটেড সাবান তৈরী করে – যা অন্যান্য কয়েকটি সংশোধনাগারেও সরবরাহ করা হয়। তিনি জানিয়েছেন, মেডিকেটেড সাবান বা স্যানিটাইজারের কোনো অভাব নেই তাঁদের।

আরো পড়ুন