জোটে কংগ্রেস থাকলেও ২ ফেব্রুয়ারী বর্ধমানে বামেদের কেন্দ্রীয় সমাবেশে নেই কংগ্রেস

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: কংগ্রেস নয়, বামপন্থীদের একক শ্লোগান – ফেরাতে হাল, ধরো লাল। কংগ্রেসের সঙ্গে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে নির্বাচনী জোট হলেও বামপন্থীরা নিজেদের ক্ষমতায় লড়াই করার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। তাই আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে খোদ বর্ধমান শহরকে কার্যত অচল করে নিজেদের ক্ষমতা যাচাই করতে আগামী ২ ফেব্রুয়ারী বর্ধমানে কেন্দ্রীয় সমাবেশ ডাকল সিপিআইএমের পূর্ব বর্ধমান জেলা কমিটি। রবিবার বর্ধমানের পার্কাস রোডে সিপিএমের জেলা অফিসে সাংবাদিক বৈঠক করলেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক অচিন্ত্য মল্লিক, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অমল হালদার, জেলা কৃষকসভার সম্পাদক সৈয়দ হোসেন এবং জেলা কমিটির সদস্য তাপস সরকার। 

এদিন অচিন্ত্যবাবু জানিয়েছেন, গত ডিসেম্বর মাস জুড়ে তাঁরা লাগাতার কেন্দ্রের বিজেপি সরকার এবং রাজ্যের তৃণমূল সরকারের অপশাসন, দুর্নীতি, স্বজনপোষণ এবং জনস্বার্থবিরোধী আইনের বিরোধিতায় আন্দোলন করেছেন। গ্রামে গ্রামে জাঠা করা হয়েছে। অচিন্ত্যবাবুর দাবী, এই জাঠায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে মানুষ এগিয়ে এসেছেন। এদিন অচিন্ত্যবাবু জানিয়েছেন, আগামী ২ ফেব্রুয়ারী বর্ধমান টাউন হলে গোটা জেলার কেন্দ্রীয় সমাবেশ ডাকা হয়েছে। এই সমাবেশের মূল বক্তা ত্রিপুরার প্রাক্তন মন্ত্রী মানিক সরকার। অচিন্ত্যবাবু জানিয়েছেন, গ্যাস, পেট্রোল ডিজেল, বিদ্যুত সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি রোধ করা, বেকারদের কাজ দেওয়া, কেন্দ্রের কৃষি আইন বাতিল, নয়া শ্রম কোড চালু করা, দলবাজি বন্ধ করে সকলের হাতে রেশন কার্ড তুলে দেওয়া, স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের নামে ভাঁওতাবাজির বিরোধিতা সহ কয়েকদফা দাবীকে সামনে রেখে এই কেন্দ্রীয় সমাবেশ ডাকা হয়েছে। আর নির্বাচনের আগে গোটা জানুয়ারি মাসে জুড়ে রাজনৈতিক অস্ত্র শানাতে বামপন্থীরা গোটা জেলা জুড়ে নেমেছেন অর্থ সংগ্রহ অভিযানে।

 অচিন্ত্যবাবু জানিয়েছেন, এটা নির্বাচনী তহবিল সংগ্রহ অভিযান নয়। নির্বাচনী তহবিল সংগ্রহের অভিযান তাঁরা পরে করবেন। এই অর্থ সংগ্রহ করা হয়েছে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাবার স্বার্থেই। উল্লেখ্য, গত বিধানসভা ভোটের মতই এবারও আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে কংগ্রেসের সঙ্গে নির্বাচনী জোট করেছে বামেরা। এদিন অচিন্ত্যবাবু জানিয়েছেন, ২ ফেব্রুয়ারী যে সমাবেশের ডাক তাঁরা দিয়েছেন তা কার্যতই নির্বাচনী সমাবেশ। কিন্তু এই সমাবেশে ডাক পাননি কোনো কংগ্রেস নেতাই। কিন্তু কেন? অচিন্ত্যবাবু জানিয়েছেন, বামেদের একক ক্ষমতা যাচাইয়ের লক্ষ্য নিয়েই এই সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়েছে। কংগ্রেসের সঙ্গে নির্বাচনী জোট হলেও এব্যাপারে তাঁরা কংগ্রেসের সঙ্গে কোনো আলোচনা করেননি। 

শুধু এটাই নয়, আরও তাত্পর্য্যপূর্ণ কথা বলেছেন এদিন অচিন্ত্যবাবু। তিনি বলেছেন, বর্তমান জেলা কংগ্রেস সভাপতি প্রবীর গাঙ্গুলীর সঙ্গে এখনও তাঁদের দেখাই হয়নি। গত নির্বাচনে জেলা কংগ্রেস নেতা কাশীনাথ গাঙ্গুলী সহ কয়েকজনের সঙ্গে তাঁদের আলাপ আলোচনা হলেও এখনও কার্যতই বর্ধমান জেলায় কংগ্রেস – সিপিএম জোটের কোনো লক্ষণই দেখা যায়নি। অচিন্ত্যবাবু এদিন জানিয়েছেন, সম্প্রতি বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা বর্ধমানে রোড শো করেছেন কয়েক কোটি টাকা খরচ করে। এমনকি তৃণমূলও পাল্টা রোড শো করেছে। কিন্তু ২ ফেব্রুয়ারী গোটা বর্ধমান শহর তাঁরা অচল করে দেবেন সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে। যা ওই দুটি রোড শোকে হার মানাবে। আর এজন্য বাইরের রাজ্য বা বাইরের জেলা থেকে তাঁদের লোক আনতে হবে না। পূর্ব বর্ধমান জেলার সমস্ত বুথ থেকেই তাঁদের কর্মী সমর্থকরা অংশ নেবেন এই সমাবেশে – দাবী অচিন্ত্যবাবুর।

Recent Posts