টাকা লুঠ করতে গিয়ে বৃদ্ধকে খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার বর্ধমানের এক বিজেপি নেতা সহ ৩, চাঞ্চল্য

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: লক্ষাধিক টাকা লুঠ করতে গিয়ে এক বৃদ্ধকে নৃশংস্যভাবে খুনের ঘটনায় ভোটের মুখে বিজেপির শক্তিকেন্দ্রের প্রমুখ এক নেতা সহ তাঁর দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তার করল বর্ধমান থানার পুলিশ। এই ঘটনায় ভোটের মুখে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস এই ঘটনায় বিজেপির আসল চেহারা কি তা ভোটের মুখে তুলে ধরার উদ্যোগও নিয়েছে। ফলে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে শুরু হয়ে গেছে ব্যাপক চাঞ্চল্য। 

জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ধৃতদের নাম জয়ন্ত সাঁতরা, সিরাজুল হক মন্ডল ওরফে টগর শেখ এবং গৌতম মণ্ডল। এর মধ্যে জয়ন্ত সাঁতরার বাড়ি বর্ধমান শহরে। তিনি বর্ধমান উত্তর বিধানসভার ২৭ নম্বর জেলা পরিষদের বিজেপির ‘শক্তিকেন্দ্র প্রমুখ’। বাকিদের মধ্যে সিরাজুল হক মণ্ডলের বাড়ি সরাইটিকর এলাকায় এবং গৌতম মণ্ডলের বাড়ি বেচারহাট এলাকায়।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ৯ মার্চ সন্ধ্যায় রায়নার পোস্ট অফিস পাড়ার বাড়িতে নৃশংসভাবে খুন হন বৃদ্ধ জীবন কানাই সেনগুপ্ত (৭৪)। খুনের ঘটনার পরেই জেলা পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়ের নির্দেশে এসডিপিও (বর্ধমান দক্ষিন) আমিনুল ইসলাম খান বিশেষ টিম গঠন করে তদন্তে শুরু করেন। ঘটনার ৯ দিনের মাথায় মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর থেকে সিরাজুল হক মন্ডলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বাকি দু’জনকে বর্ধমান থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ধৃতরা জেরায় খুনের ঘটনা কথা স্বীকার করেছে বলে পুলিশের দাবি। ধৃতদের মধ্যে গৌতম ও সিরাজের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় নানা অপরাধমূলক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।

এসডিপিও (বর্ধমান দক্ষিন) আমিনুল ইসলাম জানিয়েছেন, ধৃতদের মধ্যে সিরাজের শাশুড়ি নিহতের বাড়িতে আয়ার কাজ করত। তার কাছ থেকেই ধৃতরা জানতে পারে রায়না পোস্ট অফিস পাড়ার একটি বাড়িতে শুধু তিনজন বৃদ্ধ-বৃদ্ধা থাকেন। সেই বৃদ্ধর ঘরের আলমারিতে কয়েক লক্ষ টাকা রয়েছে। এরপরেই টাকা লুটের পরিকল্পনা শুরু করে সিরাজ। বন্ধু গৌতমও সিরাজের সঙ্গে যোগ দেয়। খুনের ঘটনার দিন জয়ন্তকে সঙ্গে নিয়ে গৌতমের মোটরবাইকে চড়ে তিনজন রায়না বাজারে পৌঁছায়। কিছুটা দূরে মোটরবাইক রেখে বাড়ির ভিতরে ঢোকে তারা। এরপর বৃদ্ধ জীবন কানাইবাবুকে বন্দুক দেখিয়ে মুখ টিপে ধরে ভয় দেখানোর সময়েই দুর্ঘটনা ঘটে যায়। এদিকে, ভোটের মুখে খুনের ঘটনায় বিজেপি নেতা গ্রেপ্তারের ঘটনায় রাজনৈতিক মহলে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা মুখপাত্র প্রসেনজিত দাস জানিয়েছেন, এই ঘটনায় বিজেপির আসল চেহারা প্রকাশিত হয়ে পড়েছে। পুলিশ আইনানুযায়ী উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।