ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: পুর নির্বাচনের ১০৮টি পুরসভার তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হতেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের সঙ্গে বর্ধমানেও শুরু হয়ে গেল প্রার্থী নিয়ে বিক্ষোভ, আন্দোলন। শুক্রবার বিকেলে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক পার্থ চট্টোপাধ্যায় সাংবাদিক সম্মেলন করে সবকটি পুরসভার প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হচ্ছে বলে ঘোষণা করেন। এরপর দলের ফেসবুক পেজে সেই তালিকা প্রকাশ করা হয়। মুহুর্তের মধ্যেই সেই প্রার্থী তালিকা ভাইরালও হয়ে যায়। আর এরপরই একের পর এক ওয়ার্ডে পছন্দের প্রার্থীর দাবিতে বিক্ষোভ, রাস্তা অবরোধ, অগ্নিসংযোগ, ঘেরাও অভিযান শুরু করে দেয় তৃণমূলেরই একাংশ কর্মী, সমর্থকরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে রাস্তায় নামতে হয় পুলিশকে।
জায়গায় জায়গায় এই বিক্ষোভের খবরও পৌঁছে যায় জেলা থেকে রাজ্যে। আর এরপরই আশ্চর্যজনকভাবে কয়েকঘন্টার মধ্যেই ফের একাধিক পুরসভার প্রার্থী তালিকায় বদল ঘটিয়ে আরেকটি দলের শীলমহোর দেওয়া তালিকা প্রকাশ্যে চলে আসে। স্বাভাবিকভাবেই নতুন প্রার্থী তালিকা নিয়েও বিস্তর বিভ্রান্তি সৃষ্টি হতে শুরু করেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার একাধিক পুর এলাকায়। অনেকে আবার এই তালিকাকেও ভুয়ো বলে দাবি করেছেন। আবার অনেকে বলেছেন, আগামীকাল আবার নতুন তালিকা সামনে আসছে। শুধু সময়ের অপেক্ষা। যদিও তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য নেতৃত্ব এই তালিকাই চূড়ান্ত বলে জানিয়ে দিয়েছে।
ফলে প্রার্থী তালিকা যে কোনটা চূড়ান্ত তা নিয়েই খোদ তৃণমূলের অন্দরে ব্যাপক জলঘোলা শুরু হয়ে গেছে। দলেরই একাংশ ক্ষোভ উগরে দিয়ে জানিয়েছেন, আদৌ সর্বজনগ্রাহ্য সম্পূর্ন প্রার্থী তালিকা দল প্রকাশ করতে পারে কিনা তা সময় বলবে। এদিকে মনোনয়ন পত্র পেশের জন্য দলের হাতে থাকছে মাত্র চারটে দিন। সেক্ষেত্রে কেবল পূর্ব বর্ধমান জেলাতেই রয়েছে ৬টি পুরসভা। যার মোট তৃণমূল প্রার্থীর সংখ্যা ১১৯জন। এছাড়াও প্রতিদ্বন্দ্বী অন্যান্য রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা রয়েছেন।
এদিকে গতকাল সন্ধ্যা থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত বর্ধমান পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে বিক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। শুক্রবার ১৯নং ওয়ার্ড থেকে এই বিক্ষোভ শুরু হয়। পরবর্তীতে ২১,২৮,২,১১,৫,৩৫,৩০ ও শনিবার সকাল থেকে ৩নং ওয়ার্ডের স্টেশন সংলগ্ন মেহেদীবাগান এলাকা কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। দলের অনুমোদিত প্রার্থীর গোষ্ঠীর সঙ্গে দলেরই আরেক গোষ্ঠী সম্মুখসমরে নেমে পরে। পরিস্থিতি হাতাহাতির পর্যায়ে পৌঁছোয়। বর্ধমান থানার আই সির নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুপক্ষকেই ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
এদিকে বর্ধমানের একাধিক ওয়ার্ডে যখন অপছন্দের প্রার্থীদের নিয়ে বিক্ষোভের আগুন জ্বালাচ্ছে তৃণমূলের একটি অংশ সেই সময়ই শহরের ২৫,১৬,২৩,২৪নং ওয়ার্ডের প্রার্থীরা সরস্বতী মায়ের আশীর্বাদ নিয়ে নেমে পড়েছেন প্রচারে। এমনকি দেওয়াল লিখনের কাজও শুরু করে দিয়েছেন ১৫নং ওয়ার্ডের প্রার্থী। ফলে আসন্ন পুর নির্বাচন কে কেন্দ্র করে বর্ধমান পুরসভা এলাকার রাজনৈতিক উত্তাপ চরমে উঠতে শুরু করেছে।