তেজষ্ক্রিয় পদার্থের নামে ৫০লক্ষ টাকার লেনদেনের আগেই বর্ধমানে পুলিশের জালে তিন ব্যক্তি,আলোড়ন
ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: তেজষ্ক্রিয় পদার্থ বলে ৫০লক্ষ টাকার বিনিময়ে বর্ধমানের ষাঁড়খানা গলির তাবরেজ সেখ নামে এক ব্যক্তির মাধ্যমে হুগলি, রায়না ও বর্ধমানের তিন ব্যক্তি একটি ধাতব বস্তুকে অন্যজনের কাছে বিক্রি করার পরিকল্পনা করছিল। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে রবিবার বর্ধমান শহরের পারবিরহাটা এলাকা থেকে কলকাতা এসটিএফ ও বর্ধমান থানার পুলিশ অভিযান চালিয়ে তিন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে। বাজেয়াপ্ত করেছে তামাটে রঙের আয়তকার ৯৪৩গ্রাম ওজনের একটি ধাতব বস্তু।
প্রাথমিকভাবে ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতরা এই বস্তুটির কোনো বিশ্বাসযোগ্য কাগজ দেখাতে পারেনি। এমনকি যে বস্তুটিকে তেজষ্ক্রিয় পদার্থ বলে দেখিয়ে মোটা টাকার লেনদেন করা হচ্ছিল, সেটা আদৌ সেই ধরনের কোনো বস্তু কিনা তা জানতে নির্দিষ্ট ধাতু পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষা করানোর জন্য পাঠানো হবে বলেই জানিয়েছে পুলিশ। আর তারপরই আসল তথ্য জানা যাবে। তবে এক্ষেত্রে এই অবৈধ লেনদেনের সঙ্গে যুক্ত ধৃতরা কোন প্রতারণা চক্রের সঙ্গে যুক্ত কিনা তা জানতে পুলিশ ইতিমধ্যেই ধৃতদের পুলিশি হেফাজত চেয়ে আদালতে আবেদন জানিয়েছে।
পুলিশ সোমবার ধৃত নিমাই দাস (৫৯),পার্থ পাল(৩৫), ও আশিষ চ্যাটার্জি(৩৮) কে বর্ধমান আদালতে পেশ করেছে। ধৃতদের বাড়ি যথাক্রমে বর্ধমান শহরের শ্যামলাল কলোনি। হুগলীর উত্তরপাড়া থানার কানাইপুর এবং রায়না থানার নাড়ুগ্রাম এলাকায়। ধৃতদের বিরুদ্ধে প্রতারণা, চুক্তিভঙ্গ, বৈধ কাগজপত্র ছাড়া তেজষ্ক্রিয় পদার্থ বলে ব্যবসার উদ্দেশ্যে কোনো বস্তু নিয়ে ঘোরা ইত্যাদির ধারায় মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। এই চক্রের সঙ্গে আর কারা জড়িত আছে তাদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে বর্ধমান থানার পুলিশ।
এদিকে তিন ব্যক্তিকে রবিবার দুপুরে গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পেরেছে, হুগলীর উত্তরপাড়া থানার কোন্নগরের কানাইপুরের বাসিন্দা ধৃত পার্থ পাল তার এক বন্ধুর কাছ থেকে এই রেডিও অ্যাক্টিভ বস্তুটি পায়। বস্তুটির বাজার মূল্য প্রচুর বলেও ধৃত পুলিশ কে জানায়। সে জানিয়েছে, সে ও তার এক বন্ধু দুজনে পূর্ব বর্ধমানের রায়না থানার নাড়ুগ্রামের বাসিন্দা আশিষ চ্যাটার্জি র মাধ্যমে এই বস্তুটি বিক্রি করার পরিকল্পনা করে। আশিষ চ্যাটার্জি এই উদ্দেশ্যে পার্থ পাল কে বর্ধমানে আসার আমন্ত্রণ জানায় এবং সেখানেই বর্ধমান শহরের শ্যামলাল এলাকার বাসিন্দা নিমাই দাসের সঙ্গে পরিচয় করায়।
পুলিশ জানিয়েছে, নিমাই দাস স্বীকার করেছে এই ধাতব বস্তু টিকে বর্ধমানের ষাঁড়খানা গলির বাসিন্দা তাবরেজ সেখ নামে এক ব্যক্তির মাধ্যমে ৫০লক্ষ টাকার বিনিময়ে বিক্রি করার কথা হয়েছিল। এরপরই গতকাল গোপন সূত্রে খবরের ভিত্তিতে কলকাতা স্পেশাল টাস্ক ফোর্স ও বর্ধমান থানার পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে শহরের পারবিরহাটা মোড় এলাকা থেকে তিনজন কে বমাল ধরে ফেলে। এদিন ধৃতদের বর্ধমান আদালতে পেশ করা হয়েছে।