বাকি ১০ জনের বয়স এখনও ১৮-য় না পৌঁছানোয় তাঁরা নিয়োগের অনুমতি পেলেও বয়সজনিত কারণে তারা যোগ দিতে পারলেন না। উদয়াচল ক্লাবের সদস্য মানগোবিন্দ অধিকারী জানিয়েছেন, আজ থেকে প্রায় ৬ বছর আগে এই মেয়েদের দেখে তাঁর মনে হয়েছিল এরা একদিন ভাতারের মুখ উজ্জ্বল করতে পারবে। আর তারপর থেকেই খেটে খাওয়া পরিবারের এই ১৫জন মেয়েকে নিয়ে তিনি এবং ক্লাবের কয়েকজন সদস্য নিরলস পরিশ্রম করে গেছেন। ২০১৯ সালের জেলা পুলিশের উদ্যোগে আয়োজিত রাঙামাটি উৎসবে বর্ধমানের স্পন্দন ময়দানে কালনা দলের কাছে হেরে গিয়ে রানার্স হয় তারা।
এই মহিলা ফুটবল দলের জুনিয়র কোচ রাজু বাগ জানিয়েছেন, এই মহিলা ফুটবল দলের জন্য জেলা স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের কোনো সাহায্য তাঁরা পাননি। কার্যত বিডিএসএ এই মহিলা ফুটবল নিয়ে খুব বেশী আগ্রহীও নন। কার্যত এই দলের যাবতীয় সাহায্য করেন মানগোবিন্দবাবুই। মহিলা ফুটবল দলের পাশাপাশি ছেলেদের ফুটবল দলেরও কোচিং হয় এখানে। সপ্তাহে ৩দিন কোচিং দিতে আসেন রসুলপুরের বাসিন্দা ভাইটু। বাকি সারা সপ্তাহে এই দলের কোচিং দেন রাজু বাগ এবং কিশোর মুখার্জ্জী।
মানগোবিন্দবাবু জানিয়েছেন, এই মেয়েদের অনেকেই মণিপুর সহ বেশ কয়েকটি রাজ্যে বাংলার হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছে। কয়েকজন ন্যাশনালও খেলেছে। এদিন সিভিক ভলেণ্টিয়ারের কাজে যোগ দেওয়া সোমা মণ্ডল এবং ছন্দা মাঝিরা পড়া ছেড়ে দিলেও নূরজাহান, মন্দিরা এবং সাবিনারা গুসকরা কলেজের বিএ প্রথম বর্ষে পড়াশোনা করছেন। বাকিরা সকলেই মাধ্যমিক উত্তীর্ণ এবং ফুটবলের পাশাপাশি পড়াশোনাও চালিয়ে যাচ্ছেন। মানগোবিন্দবাবু জানিয়েছেন, এই মেয়েদের প্রত্যেকেরই পরিবার আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল। খেলাধূলা করা কার্যত তাদের কাছে বিলাসিতাই। কিন্তু তিনি এবং তাঁরা হাল ছাড়েননি।
তিনি জানিয়েছেন, বাকি ১০জন মেয়ের বয়স ১৮ ছুঁতে কয়েকমাস দেরী আছে। তাঁদের বয়স ১৮ হলেই তাঁরাও সিভিক ভলেণ্টিয়ারের কাজে যোগ দেবে। কার্যত গোটা জেলার মধ্যে রীতিমত নজীর এই ঘটনা সম্পর্কে প্রদেশ যুব তৃণমূল কোর কমিটির অন্যতম সদস্য শান্তনু কোঁয়ার জানিয়েছেন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যে সকলের জন্য ভাবেন তাঁদের পাশে দাঁড়ান আবারও তা প্রমাণিত হল। তিনি জানিয়েছেন, গোটা রাজ্যের মধ্যে ভাতারের এই ঘটনা নজীর সৃষ্টি করল। কার্যতই দীপাবলীর রাতে ভাতারের এড়ুয়ার গ্রামের ১৫টি বাড়িতে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে জ্বলে উঠল খুশী আর আনন্দের বাতি।