দীর্ঘদিন পর বর্ধমানের স্পন্দন কমপ্লেক্স এবং ময়দান নিয়ে একগুচ্ছ পদক্ষেপ জেলা প্রশাসনের

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: দীর্ঘদিন পর এবার বর্ধমানের ঐতিহ্যবাহী স্পন্দন কমপ্লেক্সের সার্বিক উন্নয়ন নিয়ে ময়দানে নামতে চলেছে জেলা প্রশাসন। উল্লেখ্য একসময় ক্যাম্পিং গ্রাউণ্ড নামে পরিচিত ছিল আজকের এই স্পন্দন কমপ্লেক্স স্টেডিয়াম। দীর্ঘ বেশ কয়েকবছর আগে এই স্টেডিয়াম তৈরির পর গত ২০১৬ সালের ১৯জানুয়ারী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই স্পন্দন স্টেডিয়ামের দর্শক আসনের উপর ছাউনি ও রেলিং নির্মাণ, খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাদের জন্য বসার স্থান নির্মাণ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। 

কিন্তু এরপরেও ধাপে ধাপে এই খেলা মাঠের একাধিক বিষয়ের উন্নয়ন এবং চাহিদা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই দাবীদাওয়া প্রশাসনের কাছে আসছিলই।  আর এরই মধ্যে বিশেষত, চলতি করোনা পরিস্থিতিতে যেহেতু মাঠে খেলাধূলা প্রায় বন্ধই, এমতবস্থায় মাঠের মধ‌্যে অসামাজিক কার্যকলাপ নিয়েও স্থানীয় মানুষজনের অভিযোগ উঠছিল। বিশেষত, রাতের দিকে মাঠের মধ্যে ঢুকে মদ্যপান করার মত অভিযোগও উঠছিল। অবশেষে গোটা বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, স্পন্দন কমপ্লেক্স নিয়ে যে প্রশাসনিক কমিটি রয়েছে সেই কমিটি সম্প্রতি একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক এই সমস্ত বিষয় নিয়ে সেরে ফেলেছে। কমিটির সদস্য তথা পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়া জানিয়েছেন, স্পন্দনের বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, স্পন্দন কমপ্লেক্সকে ঘিরে প্রায় ১৬০টি দোকানঘর রয়েছে। এই সমস্ত দোকানঘরগুলিকে ৩০ বছরের লিজ চুক্তিতে দেওয়া হয়েছিল। আগামী ২০২২ সালের মার্চ মাসে সেই সমস্ত লিজের মেয়াদ শেষ হতে চলেছে।
শম্পা ধাড়া জানিয়েছেন, ফলে নতুন করে লিজ দেবার বিষয়টির সময় এসে গেছে। এমনকি এই সমস্ত দোকানদারদের অনেকেরই ৭বছরেরও বেশি টাকা বকেয়া রয়েছে। এব্যাপারে দ্রুত যাতে সেই বকেয়া টাকা মেটানো হয় সেজন্য সংশ্লিষ্ট দোকানদারদের নোটিশ দেওয়া হচ্ছে। একইসঙ্গে যাঁরা লিজ শেষ হয়ে যাবার পর আর লিজ পুনর্নবীকরণ করবেন না, সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দোকানগুলিকে তাঁরা পুনরায় নতুন করে লিজ দেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
শম্পা ধাড়া জানিয়েছেন, স্পন্দন কমপ্লেক্সের ভেতরে অসামাজিক কার্যকলাপ নিয়ে তাঁদের কাছেও একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে। সেজন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে স্পন্দন কমপ্লেক্সের দুটি গেটেই দুজন সিভিক ভলেণ্টিয়ার তাঁরা নিয়োগ করছেন। এর মধ‌্যে একটি গেটকে বন্ধ করে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি স্পন্দন মাঠের বিদ্যুতের অত্যাধিক বিলের বিষয়টি নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। বিদ্যুত বিল লাঘব করার জন্য গোটা স্পন্দন মাঠের জন্য নতুন করে সোলার পদ্ধতি কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সভাধিপতি জানিয়েছেন, মাঠের আলো সহ অন্যান্য বিদ্যুত খরচের জন্য স্পন্দনে বসানো হচ্ছে সোলার আলো। ফলে দীর্ঘদিন পর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এবার স্পন্দন ময়দানের তথা কমপ্লেক্সের উন্নয়ন ঘটতে চলেছে বলেই মনে করছেন শহরবাসীর একাংশ।

Recent Posts