ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের ২৫জন কয়েদিকে চিকিৎসার জন্য বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসার পর সেখান থেকে পুলিশের চোখে ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে যায় একজন অপহরণ মামলায় অভিযুক্ত বিচারাধীন বন্দী। ঘটনাটি ঘটেছিল গত ২৫মে। এই ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায়। হাসপাতালের মধ্যে প্রিজনভ্যান থেকে নামাবার সময় পুলিশের চোখে ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে যায় আসানসোল জেলের বন্দী বিহারের বাসিন্দা গৌরব কুমার নামে ওই বন্দী। তারপর থেকেই জেলা পুলিশ পলাতক আসামির খোঁজে জোরদার তল্লাশি শুরু করে।
বিজ্ঞাপন
এবার পলাতক আসামী গৌরব কুমার এর বিরুদ্ধে লুকআউট নোটিশ জারি করল পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ। জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ওই বন্দীর বিরুদ্ধে অপহরণ সহ আরও বেশ কিছু মামলা রয়েছে রাজ্য সহ ভিন রাজ্যের বেশ কয়েকটি থানা এলাকায়। গৌরবের সন্ধান পেতে পুলিশ ইতিমধ্যেই জেলা ও রাজ্য সহ বেশ কয়েকটি জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছে। তদন্তের স্বার্থে সব তথ্য জানাতে না চাইলেও কোনভাবেই যাতে পলাতক আসামী বাইরে পালিয়ে যেতে না পারে তার জন্যই পুলিশ এই লুকআউট নোটিশ জারি করেছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কল্যাণ সিংহ রায় বলেন, ‘গৌরবের সন্ধান পেতেই আমরা তার ছবি সহ রাজ্য সহ সর্বত্র এই নোটিশ জারি করেছি। এমনকি দেশের সব এয়ার পোর্ট ও সমস্ত রাজ্য পুলিশের আধিকারিকদের এই নোটিশ পাঠিয়ে দিয়েছি। কার্যত পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে পলাতক বন্দীর সন্ধান পাবার জন্য।’ বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের জেলার আবদুল্লাহ কামাল বলেন,‘বন্দি পালানোর বিষয়ে আমাদের কোন গাফিলতি ছিলনা। সবটাই পুলিশের সামনে হয়েছে। আমরা বর্ধমান থানায় নির্দিষ্ট নিয়ম মেনেই অভিযোগ জানিয়েছি। পাশাপাশি নিয়ম অনুযায়ী আমাদের উচ্চ আধিকারিক দের এই বিষয়ে জানানো হয়েছে বন্দী গৌরব কুমার পালিয়ে যাবার বিষয়টি।’
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, “গৌরবের সঙ্গে আরও একজন আসামী পালানোর চেষ্টা করেছিল ওইদিন বর্ধমান মেডিক্যালে। যদিও তাকে পালানোর আগেই ধরে ফেলতে সক্ষম হয় পুলিশ। আসানসোল মহকুমা সংশোধনাগার থেকে কিছুদিন আগেই কেন্দ্রীয় সংশোধনাগের এসেছিল গৌরব কুমার। মুলত তাকে চিকিৎসা করানোর জন্যই আদালতের নির্দেশে এখানে নিয়ে আসা হয়েছিল। আসানসোলে অপহরণের একটি মামলা বিচারাধীন ছিল গৌরব কুমার।” সূত্রের খবর তার বিরুদ্ধে ঝাড়খন্ড, বিহার ও উত্তরপ্রদেশে খুন, ডাকাতি, অপহরণের আরও মামলা রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এর আগেও বেশ কয়েকবারই জেল খেটেছে গৌরব।
ঘটনার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই বর্ধমান থানার পুলিশ হাসপাতালের সিসি টিভির ফুটেজ খতিয়ে দেখে গৌরব কে চিহ্নিত করে তল্লাশি শুরুর আগেই সে পালাতে সক্ষম হয়েছে বলেই পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। পুলিশে প্রাথমিক অনুমান উত্তরপ্রদেশ বা দিল্লী এলাকার কোথাও গা ঢাকা দিয়ে থাকতে পারে। পোড় খাওয়া দুষ্কৃতী হিসেবে এই পলাতক আসামী এক জায়গা থেকে অন্যত্র পালানোর ছক কষতে পারে। কোথাও যাতে লুকিয়ে থাকতে না পারে, তারজন্যই এই লুক আউট নোটিশ জারি করা হয়েছে বলেই জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।