ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: জেলার ব্যবসায়ীদের সার্বিক স্বার্থে সম্পূর্ন নতুন চিন্তাভাবনায়, নতুন করে পরিকাঠামো সাজিয়ে কাজ শুরু করতে চলেছে পূর্ব বর্ধমান জেলা ব্যবসায়ী সুরক্ষা সমিতি। ইতিমধ্যেই সমিতির দায়িত্বে থাকা পদাধিকারীদের পদ পরিবর্তন করার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। দীর্ঘদিন সাধারণ সম্পাদকের পদে থাকা জেলার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী তথা ব্যবসায়ী সুরক্ষার সমিতির সাধারণ সম্পাদক রণধীর সিং ভুতুরিয়া কে সরিয়ে এবার এই পদে মনোনীত হলেন তরুণ অথচ অভিজ্ঞ কর্মদ্যোগী ব্যবসায়ী বিশ্বেশর চৌধুরী। এতদিন তিনি সমিতির উন্নয়ন সম্পাদক ছিলেন। যদিও সমিতির অন্যান্য পদের নির্বাচন এখনো সম্পন্ন হয়নি। তবে খুব শীঘ্রই জেলা ব্যবসায়ি সুরক্ষা সমিতির নতুন কমিটি গঠন হতে চলেছে বলে সুরক্ষা সমিতি সূত্রে জানতে পারা গেছে।
নতুন সাধারণ সম্পাদক বিশ্বেশর চৌধুরী ফোকাস বেঙ্গল এর প্রতিনিধিকে একান্ত সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, ব্যবসায়ীদের ভালোমন্দ, সুবিধা অসুবিধা, এমনকি বিপদে আপদে তাঁদের কথা নির্দিষ্ট জায়গায় তুলে ধরা এবং সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা করার জন্যই ব্যবসায়ী সুরক্ষা সমিতির জন্ম। আর তাই এই কথা মাথায় রেখেই ব্যবসায়ীদের স্বার্থে সমিতির নিয়মাবলিতে একগুচ্ছ আশু পরিবর্তন আনা হয়েছে। পাশাপাশি সারা বছর ধরে একাধিক কর্মসূচি পালনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, এর ফলে ইতিমধ্যে শহরে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ব্যবসায়ীদের এই সংগঠনে সদস্য পদ গ্রহণ করার ব্যাপক আগ্রহ দেখা দিয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, আগামী রবিবার জেলার প্রায় ৩০ জন নতুন ব্যবসাদার এই সংগঠনে যুক্ত হতে চলেছেন। এছাড়াও শহরের বাজেপ্রতাপপুর থেকে দেয়ানদীঘি পর্যন্ত প্রায় ২০০জন ব্যবসায়ী ইতিমধ্যে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।
বিশ্বেশর চৌধুরী জানিয়েছেন, এতদিন নতুন সদস্য পদ গ্রহণ করার সময় প্রত্যেক কে এককালীন মোটা অংকের অনুদান দিতে হতো। কিন্তু সেই নিয়মের পরিবর্তন করা হয়েছে। তিন জানিয়েছেন, এখন আর পাঁচ হাজার বা পঁচিশ হাজার টাকা প্রবেশ অনুদান হিসেবে নির্দিষ্ট থাকছে না, মাত্র এক হাজার টাকা দিলেই জেলা ব্যবসায়ী সুরক্ষা সমিতির ছাতার তলায় আসা যাবে। পাশাপাশি মাসিক ৫০টাকা অর্থাৎ বছরে ৬০০টাকা লাগবে সদস্যপদ বাবদ চাঁদা। মূলতঃ ছোট ব্যবসায়ীদের কথা ভেবেই এই উদ্যোগ বলে বিশ্বেশর চৌধুরী জানিয়েছেন। তবে সমিতির উন্নয়ন মূলক কাজের জন্য যে কেউ সাহায্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে পারবেন।
বিশ্বেশর চৌধুরী জানিয়েছেন, চলতি সপ্তাহেই জেলা প্রশাসনের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের একাধিক সমস্যা নিয়ে বৈঠক করা হবে। তার মধ্যে যে উল্লেখযোগ্য সমস্যা গুলো নিয়ে আলোচনা হতে পারে সেগুলো হল – ট্রেড লাইসেন্স, লকডাউনের দিনগুলোতে ব্যবসা বন্ধ থাকায় ভাড়া মুকুব, প্রপার্টি ট্যাক্স, ব্যাংক লোন সমস্যা, ব্যবসায়ীদের সুরক্ষা ইত্যাদি। তিনি জানান, একসময় অনেক সদস্য হতাশ হয়ে এই সংগঠন থেকে সরে গিয়েছিলেন। এখন আবার তাঁদের ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি আগামী দু’বছরের মধ্যে এই সমিতির সদস্য সংখ্যা ১০হাজার করাই লক্ষ্য।
বিশ্বেশর চৌধুরী আরও জানিয়েছেন, এবার প্রত্যেক ব্যবসায়িক এলাকা ভিত্তিক একটি করে জোন তৈরী করা হচ্ছে। বর্ধমানে এই রকম ২৫টি জোন তৈরির পরিকল্পনা ইতিমধ্যেই নেওয়া হয়েছে। সেই জোনগুলির একটি করে কমিটি তৈরি করা হবে। সেই এলাকার ব্যসায়িক যাবতীয় সুবিধা,অসুবিধা, সিদ্ধান্ত ওই কমিটিই নিতে পারবে। প্রত্যেক কমিটিতে সম্পাদক, সভাপতি, কোষাধ্যক্ষ প্রভৃতি পদ থাকবে। প্রতি মাসে সমস্ত সাব কমিটি কে নিয়ে জেলা পর্যায়ের মিটিং অনুষ্ঠিত হবে। বিশ্বেশর চৌধুরী জানিয়েছেন, এর ফলে ব্যবসায়িক সমন্বয় আরও সুদৃঢ় হবে। এছাড়াও ইতিমধ্যে অন্যান্য ব্যবসায়িক সংগঠনের সঙ্গেও আলাদা করে আলোচনা চালানো হচ্ছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।