ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে রাত ১১টার পর অকারণে এবং বিনা প্রয়োজনে মাস্ক ছাড়া রাস্তায় বেরোনোর অপরাধে বর্ধমান থানার পুলিশ সোমবার রাতে প্রায় ৬৩জনকে গ্রেপ্তার করেছে। বর্ধমান থানার আই সি সুখময় চক্রবর্তীর নেতৃত্বে শহরের কার্জন গেটের কাছে জিটি রোডে এদিন রাত ১১টার পর জোড়তার অভিযান চালানো হয়।
এদিন জিটি রোডে বিভিন্ন যানবাহনে যাতায়াতকারী বেশিরভাগ মানুষই মাস্ক পরে ছিলেন না বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এছাড়াও অনেকেই অন্যান্য সময়ের মতো এদিনও নাইট কার্ফিউ চালু হয়ে যাবার পর এদিক ওদিক যাতায়াত করছিলেন। বর্ধমান থানার পুলিশ এই সমস্ত পথচারীদের গ্রেপ্তার করে যাদের মাস্ক নেই তাঁদের হাতে মাস্ক তুলে দেয়। পাশপাশি প্রত্যেককে ফের রাত ১১টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রাস্তায় বের না হওয়ার যে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে তাও স্মরণ করিয়ে দেয়।
যদিও এদিন গ্রেপ্তার করা সকলকে ব্যক্তিগত বন্ডে সই করিয়ে পরে ছেড়েও দেওয়া হয়। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রথম দু একদিন সতর্ক ও সচেতন করার লক্ষ্যে পুলিশ সহনশীলতা দেখাচ্ছে। তবে এই প্রবণতা যদি চলতে থাকে সেক্ষেত্রে পুলিশ কড়া হাতেই নাইট কার্ফিউ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। উল্লেখ্য পুজো মিটতে না মিটতেই করোনা সংক্রমণের হার বাড়তে শুরু করেছে পূর্ব বর্ধমান জেলা জুড়ে। অনেকেই মনে করছেন, পুজোর সময় মণ্ডপে ভিড় করোনা সংক্রমণ বাড়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
যেহেতু পুজোর সময় করোনা পরীক্ষাও তুলনামূলকভাবে অনেক কম হয়েছে। তাই পরীক্ষার সংখ্যা বাড়লে তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যাও অনেকটাই বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। পোস্ট কোভিড বিভিন্ন উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসকের দ্বারস্থ হচ্ছেন অনেকেই। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শিশুদের জ্বর ও শ্বাসকষ্টের সংক্রমণ। গত একমাসে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি হওয়ার ৯জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এখনও প্রচুর শিশু চিকিৎসাধীন রয়েছে। শিশুদের এখনও ভ্যাকসিনের আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হয়নি।
এরই মাঝে সোমবারই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন ১৫ নভেম্বর থেকে স্কুল কলেজ খোলা হবে। স্বাভাবিক ভাবেই দুশ্চিন্তা ফের মাথা চাড়া দিতে শুরু করেছে। স্বাভাবিকভাবেই করোনার এই তৃতীয় ঢেউ আটকাতে যাবতীয় সাবধানতার ব্যাপারে বাসিন্দাদের সচেতন করতে উদ্যোগী হয়েছে জেলা পুলিশ। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হচ্ছে, দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পরও করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন এমন অনেক দৃষ্টান্ত মিলছে। তাই এখনও পরিষ্কার করে হাত ধোয়া, মাস্ক ব্যবহার ও জনবহুল এলাকায় শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা জরুরি। কার্যত সংক্রমণে লাগাম টানতেই এবার বর্ধমানের রাজপথে অভিযানে নামল পুলিশ। বাসিন্দাদের মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে জোর তৎপরতা শুরু হয়েছে। পাশাপাশি শুরু হয়েছে ধরপাকড়।