নাবালক পুত্রকে খুন করে নিজে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হলেন বাবা, তদন্তে খণ্ডঘোষ পুলিশ
ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক, খণ্ডঘোষ: মানসিক অশান্তির জেরে নিজের নাবালক পুত্র সন্তানকে শ্বাসরোধ করে খুন করে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হল বাবা। মর্মান্তিক এই ঘটনা ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের খন্ডঘোষ থানার নবগ্ৰাম কলোনী এলাকায়। মৃতের নাম অতীশ মজুমদার (৪০) ও তার পুত্রের নাম অমর মজুমদার (৮)। পুলিশ মৃতদেহ দুটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বর্ধমান হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
জানা গেছে, পারিবারিক অশান্তির কারণে প্রায় ৭-৮ মাস ধরে অতীশ মজুমদারের স্ত্রী স্বামী, পুত্র, কন্যা কে ছেড়ে নিজের বাপের বাড়ি খণ্ডঘোষের কুমিরকোলায় থাকে। অতীশ মজুমদার তার ১২ বছর বয়সী এক কন্যা ও ৮ বছর বয়সী পুত্রকে নিয়ে থাকতেন। একাধিকবার স্ত্রীকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করলেও স্ত্রী ফেরেননি। অভিযোগ তার স্বামী নাকি মানসিক রোগী। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এই অপবাদ দিয়েই বাড়ি ছেড়ে চলে যান স্ত্রী। বুধবার অতীশবাবুর পরিবারের কয়েকজন কুমিরকোলাতে যান স্ত্রী কে বুঝিয়ে শুনিয়ে বাড়িতে ফিরিয়ে আনার জন্য। কিন্তু এদিনও একই অপবাদ দিয়ে অতীশবাবুদের আত্মীয় দের ফিরিয়ে দেন তার স্ত্রী। তার স্বামীকে মানসিক চিকিৎসার জন্য রাঁচির মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করার কথা অতীশ বাবুর স্ত্রী জানান তার পরিবারের লোকজনকে।
তারা ফিরে আসার পর তাদের কাছে সব কথা শুনে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন অতীশ মজুমদার। এরপরই ঘরে তিনি ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন। ঘরের ভিতর সেই সময় তার সঙ্গে ছিল তার ৮ বছরের নাবালক পুত্র। ১২বছরের কন্যা সেই সময় স্নান করতে গিয়েছিল বলে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন। সেই সময় নাবালক পুত্রকে শ্বাসরোধ করে মেরে নিজে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হন অতীশ মজুমদার বলে পরিবারের লোকেদের অনুমান।
অনেকক্ষণ ঘর বন্ধ দেখে পরিবারের লোকেদের সন্দেহ হয়। ডাকাডাকি করেও দরজা না খোলায় দরজা ভেঙে দেখেন অতীশ বাবুর পুত্র সন্তান খাটের নীচে নিথর অবস্থায় পরে রয়েছে। আর অতীশ মজুমদার ঘরের সিলিং থেকে ঝুলছেন। খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুজনকে উদ্ধার করে খন্ডঘোষ ব্লক হাসপাতালে পাঠালে চিকিৎসক পিতা পুত্র দুজনকেই মৃত ঘোষণা করেন। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। দুই সন্তানকে রেখে মায়ের এই ধরনের আচরণের কারণ কি তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এই দিকটাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।