নির্বাচনে খরচের নিয়মের ফাঁসে এবার রাজনৈতিক দলগুলো

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: নির্বাচনী যুদ্ধ শুরু হয়ে গেলেও এবার নির্বাচন কমিশনের খরচের হিসাব সংক্রান্ত নিয়মের ফাঁসে আটকে হাঁসফাঁসিয়ে উঠতে শুরু করেছেন যুযুধান রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা। ২০২১ সালের নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন প্রার্থীদের খরচ সংক্রান্ত বিষয়ে যে নীতি নির্দেশিকা পাঠিয়েছেন তা নিয়ে এবার চুড়ান্ত বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলির মধ‌্যে।

শুক্রবার বর্ধমান জেলাশাসক তথা জেলার রির্টানিং অফিসার মহম্মদ এনাউর রহমানের নেতৃত্বে সর্বদলীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই বৈঠক ছিল মূলতই প্রার্থীদের খরচ সংক্রান্ত যথাযথ হিসাব পেশের বিষয়ে। বৈঠকে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাদের পক্ষ থেকে কিছু বিষয় নিয়ে কোনো আপত্তি না উঠলেও খোদ শাসকদলের পক্ষ থেকে বেশ কিছু বিষয় নিয়ে তীব্র আপত্তি তোলা হয়েছে। একইসঙ্গে এই সমস্ত বিষয়ে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যাও চাওয়া হয়েছে তৃণমূলের পক্ষ থেকে।

 বৈঠকে হাজির ছিলেন তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক তথা পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের মেণ্টর উজ্জ্বল প্রামাণিক। উজ্জ্বলবাবু জানিয়েছেন, নির্বাচন কমিশনের গাইডলাইন অনুযায়ী প্রত্যেক রাজনৈতিক দলের পতাকার জন্য আলাদা আলাদা দাম এবং খরচ ধার্য্য করা আছে। তিনি জানিয়েছেন, এই নির্বাচন কমিশনের নির্ধারিত দামের সঙ্গে তাঁরা সহমত হতে পারছেন না। কারণ বিশেষত, তৃণমূল কংগ্রেস একটি বা দুটি পতাকা কেনে না। তাঁরা একসঙ্গে অনেক পতাকা কেনে। ফলে তাঁদের দামও অনেকটাই কম পরে। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে সেই দাম গ্রাহ্য হবে না। ধরে নেওয়া যাক, তৃণমূলের পতাকার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতিটির ১০টাকা। কিন্তু তাঁরা যখন পতাকা এক লপ্তে কয়েক হাজার কিনছেন তখন সেই দাম ১০ টাকার পরিবর্তে ৭ থেকে ৮ টাকা পড়ছে। কিন্তু কমিশনের এবারের নির্দেশানসারে তাঁদের পতাকা পিছু খরচ দেখাতে হবে ১০ টাকা।

 অর্থাৎ প্রার্থীদের অহেতুক বেশি খরচ দেখাতে হচ্ছে। শুধু তাই নয়, উজ্জ্বলবাবু জানিয়েছেন, কোনো একটা জায়গায় মিটিং-য়ের জন্য হয়ত ১০০টি পতাকা লাগানো হল। মিটিং শেষ হওয়ার পর সেই পতাকাগুলি খুলে নেওয়া হল এবং পরবর্তী কোনো মিটিংয়ে তা লাগানো হল। এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশানুসারে দুটি মিটিংয়ের জন্য আলাদা আলাদা করে ২০০টি পতাকা লাগানোর হিসাব পেশ করতে হবে। যা অনুচিত এবং প্রার্থীর খরচ বাড়বে। এছাড়াও কমিশনের নির্দেশ অনুসারে এবারে ১০ হাজার টাকা খরচ করতে হলে চেকে পেমেণ্ট দেবার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু অনেক সময়ই কোনো মিটিংয়ের টিফিন খরচ বা খাওয়া খরচ, প্যাণ্ডেল ইত্যাদির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দোকানদার বা ব্যবসাদারদের অগ্রিম কিছু টাকা দিতে হয়। সেক্ষেত্রে চেকে পেমেণ্ট দেবার বিষয়টি করতে গেলে অগ্রিম নগদ দেওয়া টাকার কি হবে? – এর কোনো স্পষ্ট ব্যাখ্যা তাঁরা পাননি। 

উজ্জ্বল প্রামাণিক জানিয়েছেন, এব্যাপারে তাঁরা তাঁদের আপত্তির বিষয়টি জেলা প্রশাসনের কাছে জানিয়েছেন এবং সমস্যার সমাধান করার আর্জিও করেছেন। বস্তুত, তৃণমূলের পক্ষ থেকে এই আপত্তি তোলা হলেও কমিশনের নিয়মের গেড়োয় এবার সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলিরই এবার খরচের হিসাব পেশ করতে গিয়ে হাঁসফাঁস অবস্থার মধ্যে পড়তে হচ্ছে।

Recent Posts