ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: পথ শিশুদের জীবনযাত্রা নিয়ে স্বল্পদৈর্ঘ্যের একটি চলচ্চিত্র তৈরী করে সাড়া ফেলে দিলেন বর্ধমানের টাউন স্কুলের কমপিউটার বিভাগের শিক্ষক ইন্দ্রনীল দাঁ। সম্প্রতি কলকাতার ইণ্ডিয়ান এ্যাসোসিয়েশন সভাঘরে হট্টমেলায় তাঁর এই ছবি পুরষ্কারও ছিনিয়ে নিয়ে এসেছে। একইসঙ্গে আগামী মে মাসে তৃতীয় ঝাড়খণ্ড ইণ্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেষ্টিভ্যালে তাঁর এই ছবি প্রদর্শনের জন্য অনুমোদিতও হয়েছে।
ইন্দ্রনীলবাবু জানিয়েছেন, প্রায় দশবছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি অভিনয় তথা নাট্যচর্চার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। সাম্প্রতিককালে এই সমস্ত পথ শিশু যাঁদের জন্মের পরই তাঁদের বাবা-মারা রাস্তায় ছেড়ে দিয়ে চলে যান – শেষমেষ কি হয় তাদের পরিণতি ? এটা জানার চেষ্টা চালান। আর কিছুটা গবেষণাধর্মীভাবেই তাঁর কাছে উঠে আসে সমাজজীবনের এক করুণ চিত্র।
তিনি জানিয়েছেন, একটু বড় হতেই যখন তাদের বোধবুদ্ধি জাগ্রত হয় তখনই সে বা তারা জীবনের মূল স্রোতে আসতে চেষ্টা করে। সেও চায় আর পাঁচজনের মতই জীবনের মূল স্রোতে থাকার, এমনকি পড়াশোনা করতেও। কিন্তু সেখানে বাধা হয়ে দাঁড়ায় তাদের বাবা-মার পরিচিতি। বাবা-মার পরিচিতি না থাকায় সমাজের মূল স্রোতে ফিরে আসতে পারে না তারা।
ইন্দ্রনীলবাবু জানিয়েছেন, তাঁর এই স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবি ভ্রাখ তৈরী করেছেন। ডাচ শব্দ ভ্রাখের অর্থ প্রশ্ন। কার্যত একটি রেল ষ্টেশনেই বড়ো হয়ে ওঠা কিশোরের জীবনের এক টুকরো অংশকে তিনি তুলে ধরতে চেয়েছেন তাঁর এই ছবিতে। যেখানে ওই শিশু চেষ্টা করে জীবনের মূলস্রোতে ফিরতে। কিন্তু পারে না। অনেক চেষ্টা করেও সে হেরে যায় বাস্তবের সঙ্গে লড়াইয়ে। ফিরে যায় নিজের জায়গা রেল ষ্টেশনে।
ইন্দ্রনীলবাবু জানিয়েছেন, এই ছবিতে মুখ্য অভিনয় করেছে বর্ধমান টাউন স্কুলের ছাত্র ঐশিক দাঁ। এছাড়াও অভিনয় করেছেন শুভাশীষ চক্রবর্তী, মধুমিতা পিরি, শরত বটব্যাল প্রমুখ শিল্পীরা। ক্যামেরাম্যান তন্ময়ের ছবি দর্শকদের মনে কিছুটা হলেও দাগ কাটবে বলেই তিনি আশা প্রকাশ করেছেন। বিশ্বজিত সেনের কাহিনী অবলম্বনে ছবির পরিচালক ইন্দ্রনীল দাঁ জানিয়েছেন, ওমকার ক্রিয়েশন লাইভ প্রোডাকশান হাউসের সহযোগিতায় ইতিমধ্যেই আরও কয়েকটি জায়গায় এই ছবিকে পাঠানো হয়েছে। ছবির শ্যুটিং হয়েছে বর্ধমান ষ্টেশন, বর্ধমান কোর্ট চত্বর, মশাগ্রাম ষ্টেশন প্রভৃতি জায়গায়।