পরিবর্তন নাকি প্রত্যাবর্তন, অপেক্ষা ২মের, গণনার জন্য তৈরী পূর্ব বর্ধমান প্রশাসন

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: ৮দফার আর এক দফা বাকি। ২৯ এপ্রিল শেষ দফার ভোট। আর তার ৪৮ ঘন্টা পর ২মে ভোট গণনা। ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক দলগুলোর স্নায়ুর চাপ দুর দুর করে বাড়তে শুরু করেছে। পাড়ার মোড়ে অথবা বিভিন্ন আড্ডার ঠেকে এখন একটাই আলোচনা, ২তারিখ কার ভাগ্যের চাকা ঘুরবে। 

পরিবর্তন নাকি প্রত্যাবর্তন – এই নিয়ে রীতিমত চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। অন্যান্যবারের তুলনায় এবার পূর্ব বর্ধমান জেলার ১৬টি আসনের মধ্যে কোনো আসনকেই কোনো রাজনৈতিক দল তাঁদের অনুকূলে নিশ্চিত বলতে পারছে না। কার্যতই এই জেলায় সমস্ত আসনেই মূলত লড়াই হয়েছে দ্বিমুখী – তৃণমূল বনাম বিজেপির মধ্যে। সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থীদের নিয়ে তেমন কোনো আলোচনা বাজারে হচ্ছেও না। যদিও বা হচ্ছে তা শুধুই ভোট কাটাকাটির অঙ্কে কোন দল সুবিধা বেশি পাবে – তা নিয়ে। স্বাভাবিকভাবেই সকলের চোখ এখন ২মের দিকে।

 আগামী ২ মে বর্ধমান উত্তর ও দক্ষিণ মহকুমার ৯টি বিধানসভার গণনা হবে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউআইটি এবং সাধনপুর টেকনিক্যাল কলেজে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, করোনা জনিত কারণে এবার ভোটগণনা হবে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে। ২টি ঘরে ৭টি করে মোট ১৪টি টেবিলে এবার ভোটগণনা হবে। সকাল ৮টা থেকে গণনার কাজ শুরু হবে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গণনা কেন্দ্রে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রার্থী ছাড়া কেবলমাত্র একজন নির্বাচনী এজেন্ট থাকতে পারবেন। বর্ধমানের অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) অনির্বাণ কোলে জানিয়েছেন, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ অনুসারে প্রতিটি রাউণ্ডের গণনার পর সংশ্লিষ্ট টেবিলে দায়িত্বে থাকা অবজার্ভাররা গণনা নিয়ে সন্তুষ্ট হলে তাঁরা সেই রিপোর্ট রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে পাঠাবেন। তারপরেই সেই রাউণ্ডের ফলাফল ঘোষণা করা হবে। 

সেক্ষেত্রে বিহার নির্বাচনের অভিজ্ঞতা থেকে জেলা প্রশাসন মনে করছেন পূর্ব বর্ধমান জেলাতে চুড়ান্ত ফলাফল প্রকাশিত হতে সন্ধ‌্যে হয়ে যেতে পারে। এমনকি কোনো বিধানসভায় যদি ৪০০-র কাছাকাছি বুথ থাকে সেক্ষেত্রে ২৮ থেকে ৩২ রাউণ্ড পর্যন্ত গণনা হতে পারে। স্বাভাবিকভাবেই সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিধানসভার ভোটের ফলাফল প্রকাশ হতে অধিক রাত হলেও তা অস্বাভাবিক হবে না। এই সমস্ত সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখে গণনা কেন্দ্রের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও নিশ্ছিদ্র করা হচ্ছে। কার্যতই এবারের ভোট গণনা প্রক্রিয়া নিয়ে জেলা প্রশাসন রীতিমত উদ্বিগ্নও।

অতিরিক্ত জেলাশাসক জানিয়েছেন, তাঁরা গণনার দিন সমস্ত রকম ব্যবস্থাই গ্রহণ করেছেন নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ অনুসারে। প্রত্যেক ভোট কর্মীর জন্য থাকছে পর্যাপ্ত পরিমাণে স‌্যানিটাইজার এবং মাস্কের ব্যবস্থাও।
সামাজিক দুরত্ববিধি মেনে গণনা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার উপরেও জোর দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, খণ্ডঘোষ বিধানসভার ৩৪১টি বুথের জন্য ২৫ রাউণ্ড গণনা হবে। জামালপুরে ৩২৮টি বুথের জন্য ২৪ রাউণ্ড গণনা হবে। বর্ধমান উত্তর বিধানসভার ৩৮৫টি বুথের জন্য ২৮ রাউণ্ড গণনা হবে। রায়না বিধানসভার ৩৬২টি বুথের জন্য ২৬ রাউণ্ড এবং গলসী বিধানসভার ৩৫২টি বুথের জন্য ২৬ রাউণ্ড গণনা হবে।

বর্ধমান দক্ষিণ বিধানসভার ৩৫৮টি বুথের জন্য ২৬ রাউণ্ড গণনা হবে। আউশগ্রাম বিধানসভার ৩৩৬টি বুথের জন্য ২৪ রাউণ্ড গণনা হবে। মেমারী বিধানসভার ৩৫৭টি বুথের জন্য ২৬ রাউণ্ড এবং ভাতার বিধানসভার ৩৪৪টি বুথের জন্য ২৫ রাউণ্ড গণনা হবে। অন্যদিকে, মন্তেশ্বর বিধানসভা কেন্দ্রের ৩৪৭টি বুথের জন্য ২৫ রাউণ্ড, কালনা বিধানসভার ৩৩২টি বুথের জন্য ২৪ রাউণ্ড, পূর্বস্থলী দক্ষিণ বিধানসভার ৩৫৪টি বুথের জন্য ২৬ রাউণ্ড, পূর্বস্থলী উত্তর বিধানসভার ৩৪৬টি বুথের জন্য ২৫ রাউণ্ড, কাটোয়া বিধানসভার ৩৮৩টি বুথের জন্য ২৮ রাউণ্ড, কেতুগ্রামের ৩৬৫টি বুথের জন্য ২৭ রাউণ্ড এবং মঙ্গলকোটের ৩৫১টি বুথের জন্য ২৬ রাউণ্ড গণনা হবে।