পূর্ব বর্ধমান জেলার মন্তেশ্বর ব্লকের শুশুনিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত পশ্চিম মামুদপুর এবং বর্ধমান ১ব্লকের ভান্ডারডিহির সংযোগকারী খড়ি নদীর উপর পাকা সেতু আজও হল না। ফলে যতদিন যাচ্ছে ততই এই এলাকার মানুষের ক্ষোভ চরমে উঠতে শুরু করেছে। দফায় দফায় এলাকার বিধায়ক থেকে জেলা প্রশাসনের কর্তারা আশ্বাসের বুলি আওড়ালেও আজও হয়নি এই সেতু। কার্যত প্রাণ হাতে নিয়েই প্রতিদিন ভাঙ্গা সেতুর উপর দিয়ে পারাপার করছেন শতাধিক মানুষ।
ফলে এই অঞ্চলের মানুষকে চরম আতঙ্কে দিন কাটাতে হচ্ছে। গত আগষ্ট মাসে বন্যায় কাঠের সেতুটি ভেঙে যাবার পর এখন সেই ভাঙা সেতু দিয়ে বিপজ্জনক অবস্থায় পারাপার করছেন এপার ওপারের বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ। অথচ খোদ মন্তেশ্বরের বিধায়ক রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী থেকে জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়া বারবার জানিয়েছেন খুব শীঘ্রই হয়ে যাবে এই খড়ি নদীর ওপর পাকা সেতু। কিন্তু আজও হয়নি।
এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, প্রায় ৩০ বছর আগে এই সেতুটি নির্মিত হয়। কিন্তু শেষ প্রায় ১২ বছর ধরে সেতুটি দুর্বল হয়ে পড়ে। মাঝে মাঝে পঞ্চায়েত থেকে মেরামত করা হয়। কিন্তু গত বছর থেকেই সেতুটি প্রায় ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়ে।
আর তারপরেই গত আগস্টে প্রবল জলের তোড়ে সেতুটি ভেঙে বেশ কয়েক ফুট দূরে ছিটকে যায়। কুড়মুন হাইস্কুলের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র গোপালনগরের দেবজিৎ মন্ডল জানিয়েছে, সেই আগস্ট মাস থেকে তাদের প্রাণ হাতে নিয়ে টিউশনে যাতায়াত করতে হচ্ছে। আর এই ভাঙ্গা সেতু ছাড়া তাদের যাতায়াতের কোনো উপায়ও নেই। নিত্যযাত্রী পশ্চিম মামুদপুরের সন্দীপ দাস, রাজীব পোড়েল, সিরাজপুরের কৃষ্ণ বাগ প্রমুখরা জানিয়েছেন, এভাবে ভাঙা সেতুর ওপর দিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে সেতু থেকে পড়ে তাঁরা চোটও পাচ্ছেন।
গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন পশ্চিম মামুদপুর, বৈষ্ণবডাঙ্গা, রাজগাছি, গোপালনগর, সরিষাডাঙ্গা, ভান্ডার ডিহি, খেরুর, ছাতনী প্রভৃতি গ্রামের প্রায় হাজার দেড়েক লোক প্রতিদিন যাতায়াত করে এই সেতু দিয়ে। এদিকে, এই পরিস্থিতিতে স্থানীয় পঞ্চায়েতের উদ্যোগে নদীর ওপর ঢালাই পাইপ দিয়ে মাটি ফেলে অস্থায়ীভাবে রাস্তা তৈরী করে যাতায়াতের ব্যবস্থা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে এই যাতায়াতের যন্ত্রনার কবে পাকাপাকি ভাবে সমাধান হবে সেই বিষয়ে সবাই অন্ধকারে। এক কথায় এই এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, প্রশাসনের চরম উদাসীনতাই কয়েক হাজার মানুষকে বিপদের মুখে ঠেলে দিয়েছে।