পুকুরে মাছ ধরার সময় ছিপে উঠে এলো সাদা কচ্ছপ, রং বদলে হয়ে গেল হলুদ, চাঞ্চল্য

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: পুকুরে মাছ ধরার সময় ছিপে উঠে এলো আস্ত একটা কচ্ছপ। গায়ের রং সাদা। কিন্তু কিছুক্ষন পরেই সেই কচ্ছপের রং পাল্টে হলুদ হয়ে যেতেই রীতিমত অবাক হয়ে গেলেন উপস্থিত গ্রামের বাসিন্দারা। আর এই ঘটনার কথা ছড়িয়ে পড়তেই হৈচৈ পরে যায় গ্রামে। ঘটনাটি ঘটেছে অষ্টমীর দিন বর্ধমানের ১নং ব্লকের কলিগ্রাম দাসপুরে। 

কলিগ্রাম দাসপুরের বাসিন্দা বামদেব ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, অষ্টমীর দিন তিনি তাঁর এক বন্ধুর পুকুরে ছিপ দিয়ে মাছ ধরছিলেন। সেই সময় বঁড়শিতে উঠে আসে সাদা রঙের কচ্ছপটি। তিনি সেটিকে একটি বালতির জলে রাখার পরই কচ্ছপের গায়ের রং হলুদ হতে শুরু করে। খবর পেয়ে বর্ধমান সোসাইটি ফর অ্যানিম্যাল ওয়েলফেয়ারের সদস্যরা বামদেববাবুর কাছ থেকে হলুদ রঙের কচ্ছপটি উদ্ধার করে নিয়ে এসেছে।

 সংস্থার সদস্য অর্ণব দাস জানিয়েছেন, কচ্ছপটির দেহে কিছু আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। চিকিৎসা করা হবে। তারপর বনদপ্তরের হাতে তুলে দেওয়া হবে কচ্ছপটিকে। তিনি জানিয়েছেন, এটা আলাদা কোনও প্রজাতি নয়। ইন্ডিয়ান সফট সেল কচ্ছপ। দেড় বছরের এই মহিলা কচ্ছপটির শারীরিক কিছু সমস্যার জন্য হলুদ রঙের হয়েছে। তবে এর হলুদ রঙ হওয়াটা খুবই বিরল। এর আগে উড়িষ্যায় একটা এই রকম কচ্ছপ উদ্ধার হয়েছিল। একইভাবে সাম্প্রতিককালে কাকদ্বীপেও চাষের জমিতে এই হলুদ রঙের কচ্ছপ উদ্ধার হয়। 

অর্ণববাবু জানিয়েছেন, মেলানিন কম বা মিউটেশনের জন্য এই রকম হতে পারে। অন্যদিকে, বামদেব বাবু জানিয়েছেন, কচ্ছপটি ছিপে ধরা পড়ার সময় তার গায়ের রঙ সাদাই ছিল। বালতির জলে রাখার পর তা আস্তে আস্তে হলুদ রঙের হয়ে যায়। কিন্তু এই তথ্য মানতে চাননি অর্ণব দাস। প্রাণীবিদদের মতে, অ্যালবিনিজমের কারণে মানুষ ছাড়াও অন্যান্য মেরুদণ্ডী প্রাণী সাদা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ওই প্রাণীটিকে বলে অ্যালবিনো। যদিও অর্ণব দাস জানিয়েছেন এটা অ্যালবিনো নয়। এটার রঙ হলুদ। অ্যালবিনো হলে রঙ সাদা হবে, চোখের রঙ লাল হবে।

বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক গৌতম চন্দ্র জানিয়েছেন, এই কচ্ছপটি একটি বিরল প্রজাতির। চলতি বছরেই বালাসোরে প্রথম এই ধরণের হলুদ রঙের কচ্ছপ পাওয়া গেছিল। তিনি জানিয়েছেন, মায়ানমার, পাকিস্তান প্রভৃতি প্রদেশে এই ধরণের কচ্ছপ পাওয়া যায়। তবে, কিভাবে পুকুরে এই কচ্ছপ এলো এবং আরো এই ধরণের কচ্ছপ পুকুরে আছে কিনা তার জন্য বনদপ্তরের পক্ষ থেকে অনুসন্ধান করার দাবি জানিয়েছেন গ্রামবাসীদের একাংশ।