পুজোর আগে জোড়া ফলায় বিদ্ধ বর্ধমানের ব্যবসা, নিজেদের বাঁচাতে ফের ব্যবসায়ী সংগঠনের আর্জি প্রশাসনের কাছে
ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান:পুজোর ঢাকে কাঠি পড়ে গেছে। শুরু হয়ে গেছে জোরকদমে পুজোর প্রস্তুতি। পুজো কমিটির উদ্যোক্তা থেকে বাড়িতে বাড়িতে চলছে পুজোর প্রস্তুতি, কেনাকাটা, নানান পরিকল্পনা। একদিকে যখন আনন্দের ছোঁয়া লাগতে শুরু করেছে, তখন জোড়া ফলায় বিদ্ধ হয়ে রীতিমত মাথায় হাত দিয়ে বসেছেন বর্ধমান শহরের ব্যবসায়ীরা। দীর্ঘদিন ধরেই বর্ধমান শহরের ওপর দিয়ে বিভিন্ন রুটের বাসচলাচল বন্ধ হয়েছে। তার প্রভাব পড়েছে ব্যবসায়ীদের ওপর। ক্রেতারা আসছেন না শহরে।
উল্লেখ্য, বর্ধমান শহরের ব্যবসার একটি মূল অংশ নির্ভর করে বর্ধমান শহর ছাড়াও আশপাশের গ্রাম গঞ্জের ওপর। কিন্তু বিভিন্ন রুটের বাস শহরে ঢোকা নিষিদ্ধ হওয়ার পর থেকে সেই সমস্ত ক্রেতারা আর শহরে ঢুকতে চাইছেন না অতিরিক্ত অর্থ খরচ করে। ফলে তার প্রভাব এসে পড়েছে শহরের ব্যবসাদারদের ওপর। আর তাই ফের বর্ধমান শহরের ওপর দিয়ে বিভিন্ন রুটের বাস চালানোর দাবী জানালো পূর্ব বর্ধমান চেম্বার অব ট্রেডার্স সংগঠনের। মঙ্গলবার বর্ধমান পুরসভার চেয়ারপার্সন প্রণব চট্টোপাধ্যায়ের কাছে সংগঠনের পক্ষ থেকে দুটি বিষয়ে স্মারকলিপিও দেওয়া হল।
সংগঠনের সম্পাদক চন্দ্রবিজয় যাদব এবং নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান বিশ্বেশ্বর চৌধুরী জানিয়েছেন, বর্ধমান শহর জুড়ে ব্যবসাদারদের ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে। তাঁরা জানিয়েছেন, এমনিতেই গত কয়েকবছর ধরে অনলাইন কেনাকাটায় মানুষের ঝোঁক ব্যাপক হারেই বাড়তে শুরু করেছে। প্রচুর সংখ্যক মানুষ ঘরে বসেই পুজোর বাজারের কেনাকাটা সেরে ফেলছেন। রীতিমত ঘাম ঝরিয়ে এ-দোকান ও-দোকান ঘুরে পুজোর নানান কেনাকাটার দিন প্রায় এখন অতীত। ঘরে বসেই পেয়ে যাচ্ছেন পছন্দের জিনিস। তার ওপর শহরের মধ্যে দিয়ে বাস চলাচল না করায় ক্রেতারা আর যাতায়াতের ঝক্কি নিয়ে দোকানে আসছেন না – এর ফলে লক্ষ লক্ষ টাকা লগ্নি করেও তাঁদের ব্যবসায় দেখা দিচ্ছে ব্যাপক মন্দা।
তাই এদিন পুর প্রশাসক প্রণব চট্টোপাধ্যায়ের কাছে তাঁরা পুজোর সময় যাতে শহরের মধ্যে দিয়ে বাস চলাচল করতে পারে বিভিন্ন রুটের – ব্যবসা বাঁচাতে সেই আকুতিই জানানো হয়েছে। প্রণববাবুও গোটা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করার আশ্বাস দিয়েছেন। এরই পাশাপাশি শহরের ব্যবসাদারদের ট্রেড লাইসেন্স সম্পর্কেও এদিন স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। চন্দ্রবিজয় যাদব জানিয়েছেন, পুর প্রশাসক তাঁদের জানিয়েছেন, ট্রেড লাইসেন্সের সরলীকরণ করার চেষ্টা চলছে। খুব শীঘ্রই হয়ত ক্যাম্প মোডে ব্যবসাদারদের ট্রেড লাইসেন্সের সমস্যা মেটানো হতে চলেছে। উল্লেখ্য, তৃতীয়বারের জন্য বর্ধমান উন্নয়ন পষর্দের চেয়ারম্যান হিসাবে আসীন হয়েই রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায় সাফ জানিয়েছিলেন বর্ধমান শহরের মধ্যে দিয়ে রুটের বাস চলাচল আর করানো যাবে না।
অন্যদিকে, শহরের মধ্যে দিয়েই এই বাস চলাচলের দাবীকে সামনে রেখেই এবারেও ব্যবসাদাররা খোকন দাসকে বিপুল ভোটে জয়ী করেছেন বলে দাবী করা হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত খোকন দাসও এব্যাপারে কোনো ইতিবাচক কিছু করে দেখাতে পারেননি। ফলে ব্যবসা বাঁচাওয়ের ডাক দিয়ে শহরের মধ্যে বিভিন্ন রুটের বাস চলাচলের দাবী করা হলেও ব্যবসাদারদের সেই দাবী কতটা পূরণ হবে তা নিয়ে ব্যবসাদাররা সংশয়ে রয়েই যাচ্ছেন।