পুর নির্বাচন নিয়ে কলকাতায় ২মার্চ দলের প্রস্তুতি সভা ঘিরে অশান্তির আবহ পূর্ব বর্ধমানে

Souris  Dey

Souris Dey

বিজ্ঞাপন
ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: তৃণমূল কংগ্রেসের অনেক বৈঠকেই বিনা আমন্ত্রণে চলে আসেন বহু কর্মী, নেতা। যে স্তরের সাংগঠনিক নেতাদের ডাকা হয় তার বাইরেও অনেকে চলে আসেন। আবার অনেক নেতাই যাঁদের আমন্ত্রণ থাকে না এমন বহু অনুগামীদের নিয়েও চলে আসেন বৈঠকে বলে খোদ দলের অন্দরেই ক্ষোভ রয়েছে। তবে এবার এই অভ্যাসের লাগাম টানতে চলেছে দল। আর তার জন্যই তৈরি হয়েছে ‘বার-কোড’ দেওয়া আমন্ত্রণ পত্র। দলের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বিশেষ করে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকা বৈঠকগুলোতে সেই কার্ড দেখিয়েই কোন স্তরের নেতা কোথায় আসন গ্রহণ করবে বা কিভাবে বৈঠকে প্রবেশ করবেন তা নির্দিষ্ট করার জন্যই এবার চালু করা হয়েছে এই বিশেষ কার্ড বলে দলীয় সূত্রে খবর।

ইতিমধ্যেই জেলায় জেলায় সেই কার্ড বিলি শুরু হয়েছে। আগামী ২ মার্চ নেতাজী ইন্ডোরে রাজ্যের পুর নির্বাচন নিয়ে বৈঠক ডেকেছেন তৃণমূলনেত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওই বৈঠকে হাজির হতে ওই কার্ড নিয়েই যেতে হবে রাজ্যের সমস্ত জেলার নেতা নেত্রীদের এই মর্মে নির্দেশও দেওয়া হয়েছে জেলা সভাপতিদের।
জানা গেছে, নতুন এই কার্ডের ব্যবস্থা করেছেন প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা ‘আইপ্যাক’।
এদিকে আগামী ২ মার্চের প্রস্তুতি বৈঠকে পূর্ব বর্ধমান জেলা থেকে কারা যাবেন তা নিয়ে প্রস্তুতি সভাকে ঘিরে বুধবার রীতিমত বিশৃঙ্খলা দেখা দিল বর্ধমান শহরের সংস্কৃতি লোকমঞ্চে। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বর্ধমানের সংস্কৃতি লোকমঞ্চে এই সভার আয়োজন করার নির্দেশ দেয় এই মুুহূর্তে তৃণমূল কংগ্রেসের পথ প্রদর্শক প্রশান্ত কিশোরের টিম। বিকাল ৪টেয় নির্ধারিত সভা আমন্ত্রিতদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হবার কথা ছিল। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও সভা শুরু না হওয়ায় ধৈয্য হারাতে থাকেন নেতারা।
উল্লেখ্য, এদিন এই বৈঠকে জেলার কারা কারা হাজির থাকবেন তা আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন পূর্ব বর্ধমান জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথ। কিন্তু চিরাচরিতভাবেই এদিনও এক একজন নেতা তাঁদের একাধিক অনুগামীদের নিয়ে সংস্কৃতি লোকমঞ্চে ঢুকে পড়়েন। তা নিয়ে শুরু হয় চাঞ্চল্য।
খোদ দলের জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথ এব্যাপারে সরাসরি হুঁশিয়ারী দেন। তিনি জানান, কেবলমাত্র তাঁরাই সভায় থাকতে পারবেন যাঁদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। বাকিদের সভার বাইরে যেতে হবে। আর এরপরেই ক্ষীপ্ত হয়ে ওঠেন কয়েকজন নেতা। এরই মাঝে পূর্বস্থলী-২ অঞ্চলের এক নেতা সাফ জানান, যাঁরা বিজেপির সঙ্গে গোপন সমঝোতা করে বিজেপির জয়গান করছে তার প্রমাণও তুলে দেওয়া হয়েছে দলীয় নেতাদের কাছে, তাঁরা সভা আলো করে থাকলেও দলের জেলা সভাপতি সে ব্যাপারে কোনো কথাই বলেননা। 
আর যাঁরা দলের জন্য দিনপাত করছেন তাঁদের সভা ছেড়ে যেতে বলা মানে অন্যায় করা। এদিকে, সভামঞ্চের বাইরে ঢুকতে না পারা নেতাদের ক্ষোভ কে সামাল দিয়ে বুঝিয়ে সভায় নিয়ে যাওয়া হয়। এদিন স্বপনবাবু জানিয়েছেন, দলের মধ্যেই যাঁরা বিতর্ক তৈরীর চেষ্টা করছেন তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, এদিনের এই সভায় জেলার সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, সহ সভাপতি, শাখা সংগঠনের সভাপতি, অঞ্চল সভাপতি এবং পুরপ্রধান ও উপ প্রধান দের ডাকা হয়। কিন্তু তবু সব ক্ষেত্রেই উপস্থিতির হার যথাযথ ছিলোনা। যদিও এদিন সংশ্লিষ্ট আমন্ত্রিত ছাড়াও অনেকেই এই সভায় ঢোকার চেষ্টা করলে শুরু হয় সমস্যা। এদিকে প্রায় সন্ধ্যে ছটার পর শুরু হয় নির্ধারিত সভা। বিলি করা হয় ২মার্চের জন্য বিশেষ কার্ডও।

আরো পড়ুন