পূর্ব বর্ধমানের এলাকার দায়িত্বে বীরভূমের নেতা কেন! নাম না করে অনুব্রতকে খোঁচা সিদ্দিকুল্লাহের

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: পূর্ব বর্ধমান জেলার অন্তর্গত আউশগ্রাম, কেতুগ্রাম, মঙ্গলকোটের দায়িত্বে থাকা বীরভূমের বেতাজ বাদশা অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে এবার নাম না করে সোচ্চার হলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সংখ্যালঘু সেলের সদ্য রাজ্য চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পাওয়া তথা রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী  সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী।

 বৃহস্পতিবার বর্ধমান সার্কিট হাউসে সাংবাদিক বৈঠকে সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী এদিন একাধিক ইস্যুতে কার্যত দলের মধ্যেই প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার মন্ত্রী সার্কিট হাউসে পূর্ব বর্ধমান জেলার সংখ্যালঘু সেলের চেয়ারম্যান হিসাবে সদ্য দায়িত্ব পাওয়া ডা. ইন্তেখাব আলম সহ সংখ্যালঘু সেলের নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেন। এদিন এই বৈঠকে হাজির ছিলেন সংখ্যালঘু সেলের জেলা চেয়ারম্যান ডা. ইন্তেখাব আলম সহ জেলা পরিষদ সদস্য নুরুল হাসান, জেলা নেতা আব্দুর রব, আইএনটিটিইউসি সভাপতি ইফতিকার আহমেদ(পাপ্পু), প্রাক্তন কাউন্সিলার সাহাবুদ্দিন খান প্রমুখরাও।

 আগামী দিনে গোটা জেলা জুড়েই সংখ্যালঘু সেলকে চাঙ্গা করার বিষয়ে একাধিক কর্মসুচী নিয়ে মন্ত্রী বিস্তারিত আলোচনাও করেন। পরে সাংবাদিক বৈঠকে সিদ্দিকুল্লাহ জানিয়েছেন, চলতি অক্টোবর মাস থেকে জানুয়ারী মাসের মধ্যে গোটা রাজ্য জুড়েই সংখ্যালঘু সেলকে চাঙ্গা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, বিজেপি ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলছে। আর তাই দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে সর্বাত্মকভাবে সংখ্যালঘু সেলকে কাজে লাগানোর উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। তিনি জানিয়েছেন, তাঁকে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সেই দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবেন। 

তিনি জানিয়েছেন, আগে কে কি করেছে বা করেনি – এটা তাঁর কাছে বিবেচ্য নয়। সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরীর নিজস্ব কাজের একটি ঢঙ রয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে একটি ভোটও যেন অন্য কোথাও না যায় সেটা দেখাই তাঁর দায়িত্ব। সেজন্য সংখ্যালঘু সেলকে ঢেলে সাজানো হবে। প্রতিটি মহকুমাস্তরে প্রতিনিধি সম্মেলন করার পর ব্লক ও বুথ স্তরেও সম্মেলন হবে। এরপর জেলা থেকে বুথ স্তর পর্যন্ত শক্তিশালী কমিটি গঠন করা হবে। এরপরেই তিনি বলেন, তৃণমূল কংগ্রেসের মূল সংগঠনকে ভাবতে হবে তাদের শাখা সংগঠন রয়েছে। তাদেরও গুরুত্ব দিতে হবে। একইভাবে তিনিও সংখ্যালঘু সেলের পক্ষ থেকে হাত বাড়াবেন মূল সংগঠনের দায়িত্বে যাঁরা রয়েছেন তাঁদের কাছে। হাত মেলালে ভাল, নাহলে তিনি তাঁর মতই চলবেন।

এজন্য জেলা থেকে বুথ স্তর পর্যন্ত অফিস তৈরী করা হবে। একদিকে উন্নয়ন যজ্ঞ চলবে অন্যদিকে, সংগঠনকে মজবুত করার কাজও চলবে। তিনি জানিয়েছেন, কেউ কারও বিরুদ্ধে যাচ্ছে – এই ধরণের হীন মানষিকতা ত্যাগ করতে হবে। মনে রাখতে হবে যে যেখানে আছে তাঁদের প্রতিটি কাজই আখেরে দলের জন্য। তাই কেউ কারও বিরুদ্ধে নয়। সিদ্দিকুল্লাহ বলেন, সিদ্দিকুল্লাহ কি – সেটা কাউকে পরিচয় করিয়ে দিতে হবে না- তিনি তাঁর কাজের মাধ্যমেই সেটা করে দেখাবেন। এরপরই তিনি বলেন, আউশগ্রাম, কেতুগ্রাম, মঙ্গলকোট পূর্ব বর্ধমান জেলার। নাম না করেই তিনি এদিন অনুব্রত মণ্ডলের উদ্দেশ্যে খোঁচা দিয়ে বলেন, বর্ধমানে খাবো আর বীরভূমে গিয়ে মুখ ধোবো এটা হয় নাকি।
আউশগ্রাম, মঙ্গলকোট, কেতুগ্রামের মানুষের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অফিস আদালত সবকিছুই বর্ধমানে – কেন বীরভূমকে তা ভাবতে হবে। সিদ্দিকুল্লাহ এদিন বলেন, তিনি এই তিনটি বিধানসভাকে দলীয়ভাবে পূর্ব বর্ধমানেই রাখার জন্য দলনেত্রীর কাছে আবেদন জানিয়েছেন। আবেদন জানিয়েছেন, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সীর কাছেও।
ভোট আসতেই সংখ্যালঘুদের উন্নয়ন নিয়ে লাফিয়ে পড়া দীর্ঘদিনের ট্রাডিশন সমস্ত রাজনৈতিক দলেরই – এব্যাপারে সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী জানিয়েছেন,আসলে সংখ্যালঘুরা যাঁরা নেতৃত্ব দেন তাঁদের কিছু শেখানো হয়না – কি করা উচিত ? কিভাবে করা উচিত এসব বিষয়ে। তিনি দায়িত্ব পাওয়ায় এসব নিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে নেতৃত্বদের। এজন্য নেতৃত্বের মধ্যে শৃঙ্খলাবোধ তৈরী করা হবে। আর সেই নিয়েই এদিনের বৈঠক।

Recent Posts