মহম্মদ ইসমাইল জানিয়েছেন, খণ্ডঘোষ ব্লকে এবছর খরিফ চাষ হয়েছে ২০ হাজার ৫০০ হেক্টর এলাকায়। এই ব্লকের ১০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ১১১টি মৌজায় কমবেশি পোকা এবং রোগের দাপটে ক্ষতি হয়েছে ১ হাজার হেক্টর এলাকায়। তিনি জানিয়েছেন, মেমারী ২ ব্লকে এবছর চাষ হয়েছিল ৮৫০০ হেক্টর এলাকায়। ক্ষতি হয়েছে ৯টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ৪৮টি মৌজার ৩ হাজার হেক্টর এলাকা। গলসী ১ ব্লকে ১৭০০০ হেক্টর এলাকায় চাষ হয়েছিল। ক্ষতি হয়েছে ৯ টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ৮১টি মৌজায় মোট ৯৫০০ হেক্টর এলাকায়। আউশগ্রাম ১ ব্লকে ১৬ হাজার হেক্টর এলাকায় চাষ হয়েছে। ক্ষতি হয়েছে ৭টি গ্রাম পঞ্চায়েত, ১টি পুর এলাকা সহ মোট ৭২টি মৌজায় ১৬০০০ হাজার হেক্টর এলাকায়। মন্তেশ্বরের ২১ হাজার ৩৫০ হেক্টর এলাকায় এবার চাষ হয়েছে। কিন্তু তার মধ্যে ১৩টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৪৪টি মৌজায় ক্ষতি হয়েছে১৩ হাজার ৪০০ হেক্টর এলাকায়।
রায়না ২ ব্লকে ১২৫০০ হেক্টর এলাকায় চাষ হয়েছে এবছর। ক্ষতি হয়েছে ৮টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ৮৯ মৌজার ৬৫০০ হেক্টর এলাকায়। কাটোয়া ১ ব্লকে এবছর ১১২০০ হেক্টর এলাকায় চাষ হয়েছে এবার। ক্ষতি হয়েছে ৯টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ৬৪টি মৌজার ৩ হাজার হেক্টর এলাকায়। বর্ধমান ২ ব্লকে এবছর খরিফ চাষ হয়েছে ১৪২৩৯ হেক্টর এলাকায়। ক্ষতি হয়েছে ৯টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ৮৬টি মৌজায় ৭ হাজার হেক্টর এলাকায়। মঙ্গলকোট ব্লকে ২৬৫০০ হেক্টর এলাকায় চাষ হয়েছে এবং ক্ষতি হয়েছে ১৫টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৩২টি মৌজার ৬৬২৫ হেক্টর এলাকা। বর্ধমান ১নং ব্লকে ১৭ হাজার হেক্টর এলাকায় চাষ হয়েছে এবার। ক্ষতি হয়েছে ৯টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ৭৪টি মৌজার ৮৯০০ হেক্টর এলাকা। রায়না ১ ব্লকে ১৫৪৩৫ হেক্টর এলাকায় খরিফ চাষ হয়েছে এবং ক্ষতি হয়েছে ৮টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ১১৩টি মৌজায় ৬৫০০ হেক্টর এলাকা।
কেতুগ্রাম ১ ব্লকে ৪৯০০ হেক্টর এলাকায় চাষ হয়েছে এবার এবং ৩টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ২৭টি মৌজায় ক্ষতি হয়েছে ৩৮০০ হেক্টর এলাকা। কেতুগ্রাম ২ ব্লকে ২৫০০ হেক্টর এলাকায় চাষ হয়েছে এবার, ক্ষতি হয়েছে ৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ৫৬টি মৌজায় ৯৫০ হেক্টর এলাকায়। ভাতার ব্লকে ৩০ হাজার হেক্টর এলাকায় খরিফের চাষ হয়েছে এবার, ক্ষতি হয়েছে ১৪টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ১০৭টি মৌজার ১৭ হাজার হেক্টর এলাকা । কাটোয়া ২ ব্লকে এবছর ১১৩৬৯ এলাকায় খরিফ চাষ হয়েছে এবং ক্ষতি হয়েছে ৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ৬০ মৌজার ২৪০০ হেক্তর এলাকা। গলসী ২ ব্লকে ১৭৯৫০ হেক্টর এলাকায় চাষ হয়েছে এবং ৯টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ৭৩টি মৌজায় ক্ষতি হয়েছে ১০ হাজার হেক্টর এলাকা। আউশগ্রাম ২ ব্লকে ১৫ হাজার হেক্টর এলাকায় খরিফ চাষ হয়েছে এবং ৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ১০৪টি মৌজায় ক্ষতি হয়েছে ৫ হাজার হেক্টর এলাকা।
মহম্মদ ইসমাইল জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই এই সমস্ত ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় কৃষি দপ্তরের উদ্যোগে কৃষকদের নিয়ে সচেতনতা শিবির করা হচ্ছে। তিনি জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত গোটা পূর্ব বর্ধমান জেলায় মোট ১৪৪১টি মৌজায় ক্ষতি হয়েছে ১ লক্ষ ২৪ হাজার ৮৫৩ হেক্টর এলাকা। উল্লেখ্য এই ১৭টি ব্লকে চাষ হয়েছে মোট ২ লক্ষ ৭০ হাজার ৭৬৩ হেক্টর এলাকা। এদিকে, রোগপোকার আক্রমণ সহ আবহাওয়া জনিত কারণে এই ক্ষতির ঘটনায় চাষীদের পক্ষ থেকে সরকারীভাবে ক্ষতিপূরণ পাবার দাবী উঠেছে।
সোমবার গলসীর বাহিরঘন্যা শ্রীরামপুর কৃষি সমবায় সমিতির ম্যানেজার কামরুল হাসান মোল্লা গলসী ২ ব্লক কৃষি আধিকারিকের কাছে জানিয়েছেন, এই সমবায়ের অধীনস্থ এলাকায় ধানের ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন সমবায়ের সদস্যরা। তাই তাঁরা যাতে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ পান সেব্যাপারে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রণের আবেদনও জানিয়েছেন তিনি। মহম্মদ ইসমাইল জানিয়েছেন, সরকার চাষীদের পাশে আছে। ক্ষতিপূরণের রিপোর্ট রাজ্যে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে নির্দেশ আসার পরই পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।