পূর্ব বর্ধমানে তৃণমূলের সম্ভাব্য প্রার্থী কারা! – এক ঝলক
ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক, পূর্ব বর্ধমান: বিধানসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার পর থেকেই যুযুধান সব রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীদের মধ্যে এখন একটাই প্রশ্ন – কবে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করবে দল। অলিগলি থেকে পাড়ার ঠেক কিম্বা অফিস কাছারি সব জায়গায় এখন বেশিরভাগ সময়ই নির্বাচনের সম্ভাব্য ফল আর নিজের নিজের এলাকায় কে কোন দলের প্রার্থী হতে পারেন সেই নিয়েই আলোচনায় ব্যস্ত আপামর জনসাধারণ।
নির্বাচনের উত্তাপের আঁচ পড়েছে পূর্ব বর্ধমান জেলাতেও। মূলত শাসক দল তৃণমূলের সম্ভাব্য প্রার্থী কারা হতে চলেছে তা নিয়েও আলোচনার অন্ত নেই জেলাজুড়ে। পাশপাশি প্রধান প্রতিপক্ষ বিজেপির কারা প্রার্থী হতে পারে সেই নিয়েও আলোচনার শেষ নেই। এরই মাঝে সোমবার এস ইউ সি আই তাদের রাজ্য জুড়ে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে দিয়েছে। অন্যদিকে ভোট ঘোষণার পরও বাম কংগ্রেস জোটের ভবিষ্যত নিয়ে প্রশ্ন
চিহ্ন তৈরি হওয়ায় আসন্ন নির্বাচনের মুখে এটাও সাধারণের চর্চার বিষয়বস্তু হয়ে পড়েছে।
আর এই আবহেই তৃণমূলের বিভিন্ন সূত্রে পূর্ব বর্ধমান জেলার ১৬টি বিধানসভার ১৩টির সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম উঠে আসছে। যদিও জেলার মঙ্গলকোট, কেতুগ্রাম এবং আউসগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রের সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম নিয়ে এখনো কোন আভাস পাওয়া যায়নি। শোনা যাচ্ছে মঙ্গলকোট থেকে গতবারের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দীকুল্লা চৌধুরী এবার আর লড়াই করবেন না বলে খোদ দলনেত্রী কে জানিয়ে রেখেছেন। ফলে এই আসনে কে প্রার্থী হতে চলেছেন এখনই টের পাওয়া যাচ্ছে না। একইভাবে কেতুগ্রাম এবং আউসগ্রাম এই দুটি আসনে শাসকদলের পক্ষ থেকে কারা লড়াই করবেন সেব্যাপারেও এখনো নিশ্চিত করে কেউ কিছু জানাতে পারছেন না।
দলীয় সূত্রে শোনা যাচ্ছে এই তিনটি কেন্দ্রের দায়িত্বে রয়েছেন বীরভূমের জেলা সভাপতি অনুব্রত মন্ডল। আসন্ন নির্বাচনে শাসকদলের পক্ষে এই তিনটি আসনেই প্রার্থীদের জিতিয়ে নিয়ে আসার জন্য অনুব্রত মণ্ডলের নির্বাচনী ‘স্ট্র্যাটেজি’ অনেকটাই নির্ভর করছে। ফলে প্রার্থী পছন্দের ব্যাপারেও অনুব্রত মণ্ডলের ‘কাছের’ মানুষেরাই এগিয়ে থাকবেন এই কেন্দ্রগুলোতে বলে দলেরই একাংশ মনে করছেন। অন্যদিকে বর্ধমান দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রে গত দুবারের জয়ী প্রার্থী রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছেন তিনি এবার আর এই কেন্দ্র থেকে লড়াই করবেন না। ফলে এই আসনে দল কাকে প্রার্থী করতে পারে তাই নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে বর্ধমান শহর জুড়ে।
এরই মাঝে এই কেন্দ্রে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসাবে বেশ কয়েকজনের নাম নিয়ে আলোচনা শুনতে পাওয়া যাচ্ছে দলীয় স্তরে। দলেরই একাংশ সূত্রে শোনা যাচ্ছে এই কেন্দ্রে প্রার্থী হতে পারেন পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি দেবু টুডু। পাশাপাশি এই জেলার কালনা ও মন্তেশ্বর বিধানসভার দুই বিধায়ক ইতিমধ্যেই বিজিপিতে যোগদান করেছে। ফলে এই দুটি আসনে প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রেও দল সতর্ক ভূমিকা গ্রহণ করছে বলে জানতে পারা যাচ্ছে। মন্তেশ্বর আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর নাম উঠে আসছে। যদিও দলের পক্ষ থেকে এব্যাপারে কোন সত্যতা এখনই পাওয়া যায়নি।
এদিকে রায়না,খণ্ডঘোষ, বর্ধমান উত্তর, পূর্বস্থলী দক্ষিণ, পূর্বস্থলী উত্তর এই আসনগুলিতে গতবারের প্রার্থীদেরই টিকিট দেওয়া হতে পারে বলেই দলীয় সূত্রে আভাস পাওয়া যাচ্ছে। এরই মধ্যে ভাতার, মেমারী, গলসি বিধানসভার আসনে এবার নতুন মুখ আনা হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে ভাতারে বাংলা চলচ্চিত্র জগতের নামকরা ব্যক্তিত্ব তথা শিল্পী, চলচ্চিত্র নির্মাতা রাজ চক্রবর্তী কে প্রার্থী করে চমক দিতে পারে দল। অন্যদিকে মেমারী আসনে টিকিট পেতে পারেন সদ্য তৃণমূলে আসা আই পি এস অফিসার হুমায়ুন কবির। গলসি বিধানসভা আসন টিতেও নতুন মুখ আনা হতে পারে বলে তৃণমূলের একাংশ সূত্রে শোনা যাচ্ছে।পাশপাশি গত বিধানসভা নির্বাচনে জামালপুর কেন্দ্র থেকে হেরে যাওয়া উজ্জ্বল প্রামানিক কে এবার ফের পূর্ব বর্ধমানের কোন একটি আসনে টিকিট দেওয়া হতে পারে বলেও জোর চর্চা শুনতে পাওয়া যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে গলসি আসনটিতে জেলাপরিষদের মেন্টর উজ্জ্বল প্রামানিক কে টিকিট দেওয়া হতে পারে বলে দলের অন্দরে চর্চা চলছে। এছাড়াও কালনা, কাটোয়া এই দুটি আসনেও নতুন মুখ নিয়ে আসছে তৃণমূল বলে শুনতে পাওয়া যাচ্ছে।