পূর্ব বর্ধমানে দুয়ারে সরকার প্রকল্পের সুবিধা পেতে ঠাণ্ডায় অধিক রাত পর্যন্ত ক্যাম্পে ক্যাম্পে ভিড় সাধারণ মানুষের, চিন্তায় প্রশাসন

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: বিধানসভা ভোটের 

মুখে চালু একগুচ্ছ সরকারী প্রকল্পকে হাতিয়ার করে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই ‘দুয়ারে সরকার’ প্রজেক্ট চালু করে মাস্টার স্ট্রোক দেবার বার্তা দিয়েছে বিরোধীদের। নামও তিনি দিয়েছেন ‘যার যখন যেখানে দরকার, আসছে আপনার দুয়ারে সরকার।’ গোটা রাজ্যের পাশপাশি ১ডিসেম্বর থেকে পূর্ব বর্ধমান জেলা জুড়েও শুরু হয়েছে এই প্রকল্পের কাজ। ১১টি প্রকল্পকে নিয়ে ১ ডিসেম্বর গোটা জেলায় ২০টি ক্যাম্প করা হয়েছে।

 কিন্তু বাস্তবে ১ ডিসেম্বর থেকেই প্রশাসনের কর্তাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলে দিয়েছেন সাধারণ মানুষ। কারণ এতদিন ধরে এই সমস্ত প্রকল্প চালু থাকলেও অনেকেই যেমন তার সুফল পাননি, আবার অনেকেই এই সমস্ত প্রকল্প সম্পর্কে বিস্তারিত জানতেনও না। যদিও এই দুয়ারে দুয়ারে সরকার এই শ্লোগান নিয়ে শুরুতেই আপত্তি উঠতে শুরু করেছে। কারণ ১ ডিসেম্বর জেলায় গ্রামীণ এলাকায় ১২টি গ্রাম পঞ্চায়েতের একটি করে মাত্র ক্যাম্প চালু করা হয়েছে। শহরাঞ্চলে করা হয়েছে ৪টি পুরসভায়। রাজ্য সরকারের হিসাব অনুযায়ী গোটা রাজ্যে প্রথম দিনেই এই ১১টি প্রকল্পে মোট আবেদন জমা পড়েছে ২ লক্ষ ১৯ হাজার ৯৯৪টি। পূর্ব বর্ধমান জেলায় রাজ্য সরকারের হিসাবে জমা পড়েছে ১০ হাজার ২৮২টি। যদিও পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ২ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৮টা পর্যন্ত ১৮৯৯৬ জন মানুষ ক্যাম্প গুলিতে উপস্থিত হয়েছেন। অর্থাৎ প্রথম দুদিনেই গোটা জেলায় এই ১১টি প্রকল্পে আবেদন জমা পড়েছে মোট ২৯ হাজার ২৭৫টি।

 জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এই প্রকল্প চালুর প্রথম দিনেই অধিক রাত পর্যন্ত ঠাণ্ডার মধ্যেই জায়গায় জায়গায় ক্যাম্পে উপচে পড়েছে ভিড়। মঙ্গলবার এই প্রকল্প চালুর দিন রাত্রি ৮টা পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের হিসাবে ২০টি ক্যাম্পে ৯ হাজার ৪০১ জন দাঁড়িয়েছিলেন। আর এরপরেই ক্রমশ ক্ষোভ বাড়তে শুরু করেছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। অনেকেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন, এই পরিস্থিতিতে কেন প্রতিটি সংসদ এলাকায় বুথে বুথে এই ক্যাম্প করা হল না? কারণ বাস্তবে দুয়ারে দুয়ারে প্রশাসনের কথা বলা হলেও সাধারণ মানুষকে কার্যত প্রশাসনের ক্যাম্পেই যেতে হচ্ছে প্রকল্পের সুবিধা আদায়ের জন্য। 

যদিও এব্যাপারে খোদ পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়া জানিয়েছেন, মঙ্গলবারই তিনি বেশ কয়েকটি ক্যাম্পে গিয়ে মানুষের ভিড় দেখতে পেয়েছেন। এরপরই তিনি সমস্ত ক্যাম্পেই আরও কাউণ্টার বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে প্রবীণ মানুষদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা, বসার ব্যবস্থাও করতে বলা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, যেভাবে সাধারণ মানুষ এই প্রকল্পের সুবিধা নিতে এগিয়ে এসেছে তাতে তাঁরা প্রতিটি বুথে এই ক্যাম্প করা যায় কিনা তা নিয়ে আলোচনা করে দেখছেন।

Recent Posts