ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সঙ্গে জেলা প্রশাসনের বিরোধ! শেষ পর্যন্ত কি এই সমস্যা মিটতে চলেছে? শনিবার সন্ধ্যের পর থেকে সোমবারও জেলা পরিষদের অন্দরে এনিয়ে চলল তুমুল আলোচনা। উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে জেলা পরিষদের অতিরিক্ত জেলাশাসক, সেক্রেটারী প্রমুখদের সঙ্গে জেলা পরিষদের সভাধিপতির ঠাণ্ডা লড়াই শুরু হয়। জেলা পরিষদের অন্দরের খবর, মূলত লড়াইয়ের মাত্রা বাড়ে এক কর্মীকে পদোন্নতি দেওয়া নিয়ে। আর এই নিয়ে রীতিমত চাপের মুখে পড়ে জেলা পরিষদের কর্তারা।
জানা গেছে, সম্প্রতি বিভিন্ন কাজের বিষয়ে সভাধিপতি অতিরিক্ত জেলাশাসক কিংবা সেক্রেটারীর সহযোগিতা পাচ্ছেন না বলে ঘনিষ্টমহলে অভিযোগ করতে শুরু করেন। পরিস্থিতি ক্রমশই এতটা ঘোরালো হয়ে ওঠে যে জেলাপ্রশাসনের সঙ্গে সবরকমের সম্পর্কে ছিন্ন করা, জেলা পরিষদ বয়কট করা কিংবা জেলা প্রশাসনের সঙ্গে দূরত্ব আরও বাড়িয়ে নিয়ে যাওয়া – এই তিনদফা বিষয় নিয়েই জোরদার আলোচনা শুরু হয়। এমনকি রাজ্য পঞ্চায়েত দপ্তরের কর্তাদেরও এই পরিস্থিতির বিষয় সম্পর্কে জানানো হয়। তাঁরাও বিষয়টি নিয়ে চিন্তায় পড়েন। এদিকে, এই পরিস্থিতিতে গোটা বিষয়টিকে মেটাতে আসরে নামেন তৃণমূল কংগ্রেসের পূর্ব বর্ধমান জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়।
শনিবার বিকালে বর্ধমান ভবনে জেলা পরিষদের সমস্ত সদস্যদের নিয়ে আলোচনায় বসেন জেলা পরিষদের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকরা। বৈঠকে হাজির ছিলেন বিদায়ী জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথও। হাজির ছিলেন সভাধিপতি শম্পা ধাড়া, সহকারী সভাধিপতি দেবু টুডু সহ অন্যান্যরাও।
জানা গেছে, বৈঠকে গোটা বিষয়টি নিয়ে চুলচেরা আলোচনা হয়। এক কর্মীর পদোন্নতি নিয়ে বৈধতা রাখা হয়নি – এই বিষয় নিয়েও যেমন আলোচনা হয়,পাশপাশি জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে জেলা পরিষদের তিক্ত সম্পর্ক মিটিয়ে ফের কিভাবে মধুর করার চেষ্টা করা যায় সে ব্যাপারেও আলোচনা হয়। জানা গেছে, সমস্ত দিক আলোচনা করেই রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় নির্দেশ দেন মঙ্গলবার জেলা পরিষদের সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করে এই বিষয় সম্পর্কে জেলা পরিষদের কি বক্তব্য তা লিখিত আকারে রেজ্যুলেশন হিসাবে পাশ করাতে হবে। আলোচনায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, জেলা পরিষদের সেই সিদ্ধান্ত নিয়েই রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় এবং স্বপন দেবনাথ উভয়েই জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঠেকাতে আলোচনায় বসবেন।
আর এরপরেই ফের নতুন করে চর্চা শুরু হয়েছে জেলা পরিষদের অন্দরে। আদপেই আগামী মঙ্গলবারের জেলা পরিষদের বর্ধিত বৈঠকে সদস্যরা জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সংঘাতের পথে যাবেন নাকি সুর নরম করে সমঝোতার রাস্তায় হাঁটবেন – কি থাকবে রেজ্যুলেশনে – শুরু হয়েছে তা নিয়েই ব্যাপক চর্চা। এব্যাপারে জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি দেবু টুডু জানিয়েছেন, কোনো তিক্ত সম্পর্ক নয়। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় রেখেই জেলা পরিষদের পথ চলা। কাজ করতে গিয়ে কোথাও কোথাও সমস্যা হতেই পারে। তবে তা আলোচনার মাধ্যমেই মেটানো সম্ভব।