ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: বেশ কিছুদিন ধরেই বর্ধমানের একাধিক নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে রোগীদের স্বাস্থ্যসাথী কার্ড সংক্রান্ত অভিযোগ সামনে আসছিল। আর সেইসমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখে জেলার বেসরকারি হাসপাতালের পাশপাশি নার্সিং হোমগুলির চিকিৎসা সংক্রান্ত অভিযোগ ও সমস্যা নিয়ে আলোচনায় বসেন জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা। বৈঠকে জেলাশাসক ছাড়াও অতিরিক্ত জেলাশাসক অনির্বান কোলে, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার প্রবীর সেনগুপ্ত উপস্থিত ছিলেন। জেলাশাসক হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর এদিনই প্রথম স্বাস্থ্যসাথী রেগুলেটর এন্ড মনিটরিং কমিটির সঙ্গে বৈঠক হয়।
মূলত স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে বিভিন্ন ধরণের জটিলতা তৈরি হচ্ছে অনেকক্ষেত্রেই, সেই বিষয়ে স্বচ্ছতা আনতে নার্সিংহোম গুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয় বলে জানা গিয়েছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকা সত্ত্বেও সঠিক সময়ে তা না দেখানোর জন্য কার্ডের সুবিধা পাচ্ছেন না উপভোক্তারা। এছাড়া ভর্তি করার সময় স্বাস্থ্যসাথী কার্ড না নিয়ে এলেও পরে কার্ড নিয়ে এসে সুবিধা দাবি করছে রোগীর পরিবার। ফলে নানান জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছে। আবার স্বাস্থ্যকার্ড থাকলে রোগীর চিকিৎসার ক্ষেত্রে গাফিলতি হচ্ছে বেসরকারি নার্সিং হোম গুলিতে।
আর এই সমস্ত বিষয় নিয়েই এদিন বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। জেলাশাসকের সঙ্গে বৈঠকে নার্সিং হোম কর্তৃপক্ষকে এই বিষয়ে চিকিৎসা শুরু করার আগেই রোগী ও তাঁর পরিবারকে অবগত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নার্সিং হোমে কার্ডের সুবিধা রয়েছে কিনা, থাকলেও তা কোন ক্যাটাগরির মধ্যে পড়ে। রোগীর পরিবার কে সমস্ত তথ্য জানানোর পর চিকিৎসা করাতে রাজি কিনা সে বিষয়ে স্বীকারোক্তি জমা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশপাশি হাসপাতালের ক্ষেত্রেও স্বাস্থ্যসাথী কার্ড না থাকলে রোগীর পরিবারের কাছে তা আগেই লিখিত জমা নেওয়ার কথা জানানো হয়।
জেলাশাসক জানান, “স্বাস্থ্য সাথী কার্ড সংক্রান্ত কোনও সমস্যায় যাতে রোগীর পরিবারগুলোকে পড়তে না হয় সেই বিষয়টি সুনিশ্চিত করতে হাসপাতাল ও নার্সিং হোম কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করা হয়। জেলায় স্বাস্থ্য সাথী কার্ডে চিকিৎসা নিয়ে বেশকিছু অভিযোগ আসছিল। তারজনই এই বৈঠক ডাকা হয়। নার্সিংহোম কমিটিও বেশ কিছু সমস্যার কথা জানিয়েছে। সেগুলিও খতিয়ে দেখা হবে। কমিটির সভাপতি আলহাজউদ্দিন বলেন, “জেলাশাসকের ইতিবাচক বৈঠক হয়েছে। স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে পরিসেবা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা জেলাশাসকের প্রস্তাবে সহমত হয়েছি।
জেলায় স্বাস্থ্য সাথী পরিসেবা নিয়ে যে সুনাম রয়েছে তা বজায় রাখার কথা বলেছেন” তিনি আরও বলেন, “বর্ধমান ছাড়াও বাঁকুড়া, মেদিনীপুর, বীরভূম, নাদিয়া জেলার মানুষ কেবল স্বাস্থ্য সাথী পরিষেবা পাওয়ার জন্য এই জেলায় আসেন। কাজেই রোগীর চাপ অনেক বেশি থাকে। অথচ, বিভিন্ন রোগীর চিকিৎসার পর ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি গুলি বিল মেটানোর ক্ষেত্রে গড়িমসি করে। এই বিষয়ে আমরা জেলাশাসককে জানিয়েছি। উনি বিষয়টি উচ্চস্তরে জানাবেন বলে আস্বস্ত করেছেন”