পূর্ব বর্ধমান আবগারি দপ্তরের লাগাতার অভিযান, নাজেহাল চোলাই কারবারিরা পাল্টাচ্ছে পদ্ধতি

Souris  Dey

Souris Dey

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: সময়ের তালে তালে চোলাই মদ তৈরীতেও লাগলো আধুনিকতার ছোঁয়া। যাকে দেখে রীতিমত চোখ কপালে উঠেছে পূর্ব বর্ধমান জেলা আবগারী দপ্তরের আধিকারিকদের। চোলাই তৈরীর জন্য এতাবতকাল তৈরী করা হত ভাটিখানা। কিন্তু সেই ভাটিখানাই নাকি এখন বিপদ ডেকে আনছে অবৈধ চোলাই কারবারীদের। দূর থেকেই জানাজানি হয়ে যাচ্ছে চোলাই তৈরীর জায়গা। আর তাই এবার আবগারী দপ্তরের হানাদারীর সময় অফিসারদের চোখে ধূলো দিতেই চোলাই তৈরীর পদ্ধতিতে বড়সড় পরিবর্তন নিয়ে এসেছে অবৈধ চোলাই মদ কারবারীরা। গত প্রায় মাসখানেক ধরে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে আবগারী দপ্তরের কর্তারা হানা দিয়ে এই পরিবর্তন দেখে তাজ্জব বনে গেছেন।

বিজ্ঞাপন
পূর্ব বর্ধমান জেলা আবগারি দপ্তরের আধিকারিক দ্বিপায়ন সিনহা জানিয়েছেন, সম্প্রতি বেশ কয়েকটি অভিযানে চোলাই তৈরির ঠেক থেকে একাধিক ডোমেস্টিক গ্যাস সিলিন্ডার এবং ওভেন উদ্ধার হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, কয়েকবছর আগেও যেখানে মাটি দিয়ে ভাটি বানিয়ে তাতে কাঠের জ্বালানি দিয়ে চোলাই মদ তৈরি করতো কারবারিরা, এখন সেখানে অনেক জায়গায়ই দেখা যাচ্ছে ডোমেস্টিক গ্যাস আর ওভেন ব্যবহার করা হচ্ছে চোলাই তৈরির জন্য। 
দ্বিপায়ন বাবু জানিয়েছেন, গ্রেফতার হওয়া বেশ কয়েকজন চোলাই কারবারিদের জিজ্ঞাসাবাদ করে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে চোলাই কারবারিদের এই পদ্ধতি পরিবর্তনের উদ্দেশ্য আচমকা হানাদারীর সময় দ্রুত মালপত্র সরিয়ে নেওয়ার। কারণ ভাটি বানিয়ে চোলাই তৈরির সময় অনেক দূর থেকে ভাটির আগুন দেখতে পাওয়া যায়। সরঞ্জামও অনেক লাগে। গ্যাস ওভেন ব্যবহার করলে দ্রুত কারবার বন্ধ করে মালপত্র সহ সরিয়ে ফেলা তুলনামূলক ভাবে সহজ। আর সম্ভবত এই সুবিধার জন্যই বর্তমানে চোলাই কারবারিরা এই নতুন পদ্ধতি অবলম্বন করছে। যদিও দ্বিপায়ন বাবু জানিয়েছেন, আবগারি দপ্তরের অভিযানের পদ্ধতির কাছে এই কারবারিরা অসহায়। গত কয়েকমাসে জেলায় একাধিক অভিযানে প্রায় ২২টি গ্যাস সিলিন্ডার, ওভেন সহ চোলাই তৈরি বিপুল সরঞ্জাম আটক করা হয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে মে মাসের ২১তারিখ পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়েছে এই কারবারের সঙ্গে যুক্ত ২১জনকে। 
আবগারি দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বেশিভাগ ক্ষেত্রেই গোপন সূত্রে খবর পেয়ে হানাদারী অভিযান চালানো হয় চোলাই মদের ঠেকে। তবে কিছু ক্ষেত্রে মদ তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার হলেও মদ তৈরি কারবারের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা পালিয়ে যায়। তাই অভিযান অব্যাহত থাকে। আর এই লাগাতার অভিযানের কারণেই নাজেহাল কারবারিরা নিত্যনতুন পদ্ধতি অবলম্বন করে দপ্তরের কর্মীদের চোখে ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।স্বাভাবিকভাবেই নাছোড় দপ্তরের আধিকারিক থেকে কর্মীরাও। তাঁরাও হানাদারি পদ্ধতির পরিবর্তন করছেন প্রতিনিয়ত। সাফল্যও মিলছে। তবে যেভাবে গৃহস্থালী গ্যাস ও ওভেন ব্যবহার করে এই চোলাই তৈরী করা হচ্ছে তাতে যে কোনো মুহূর্তেই বড়সড় বিপদ ঘটাও অসম্ভব নয় বলেও মনে করছেন আবগারি দপ্তর।

আরো পড়ুন