উল্লেখ্য, সোমবারই রাজ্য সরকারের আরবান ডেভেলপমেণ্ট এবং মিউনিসিপ্যাল এফেয়ার্স দপ্তরের পক্ষ থেকে গোটা রাজ্যের বেশ কিছু পুরসভার প্রশাসক এবং প্রশাসক বোর্ডের সদস্যদের নামের তালিকা প্রকাশ করে। পূর্ব বর্ধমান জেলায় দাঁইহাট, কাটোয়া, মেমারী, কালনা এবং বর্ধমান পুরসভায় নতুন প্রশাসক বোর্ড ঘোষণা করা হয়েছে। বর্ধমান পুরসভায় প্রণব চট্টোপাধ্যায়কে চেয়ারপার্সন তথা প্রশাসক নিয়োগ করা হয়েছে। বাম আমলে দক্ষ প্রশাসক হিসাবে পরিচিত আইনুল হক বর্তমানে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। তাঁকে এবং বিদায়ী কাউন্সিলার আলপনা হালদারকে করা হয়েছে ভাইস চেয়ারপার্সন। এছাড়াও বোর্ডের সদস্য করা হয়েছে বিদায়ী কাউন্সিলার ডা. শংখশুভ্র ঘোষ এবং উমা সাঁইকে।
অন্যদিকে, দাঁইহাট পুরসভায় প্রশাসক করা হয়েছে শিশির কুমার মণ্ডলকে। ভাইস চেয়ারপার্সন করা হয়েছে প্রদীপ কুমার রায়কে। এছাড়াও সদস্য করা হয়েছে গীতা ব্যানার্জী, সন্তোষ দাস এবং সুজাতা বিশ্বাসকে। কাটোয়া পুরসভার প্রশাসক করা হয়েছে বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়কে। উল্লেখ্য, সোমবারই রবীন্দ্রনাথবাবুকে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি করা হয়েছে। কাটোয়ার ভাইস চেয়ারপার্সন করা হয়েছে সুফল রাজওয়ার, সুদীপ্তময় ঘোষকে। সদস্য করা হয়েছে অম্বিকা প্রসন্ন ব্যানার্জ্জী এবং ইউসুফা খাতুনকে। মেমারী পুরসভার প্রশাসক করা হয়েছে স্বপন বিষয়ীকে। চেয়ারপার্সন করা হয়েছে কৃষ্ণপদ বিশ্বাসকে। সদস্য করা হয়েছে পল্লব চ্যাটার্জ্জী, সন্তোষ বোয়াল এবং মনসুরা বেগমকে। কালনা পুরসভার প্রশাসক করা হয়েছে একদা কাউন্সিলার এবং দুঁদে নেতা হিসাবে পরিচিত আনন্দ দত্তকে। ভাইস চেয়ারপার্সন করা হয়েছে রবীন্দ্রনাথ চ্যাটার্জ্জীকে। সদস্য করা হয়েছে নিউটন মজুমদার, মোনালিসা মুখার্জ্জী এবং সঞ্জয় বিশ্বাসকে।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সাল থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত একটানা তৎকালীন বর্ধমান পৌরসভার কংগ্রেসের টিকিটে কমিশনার ছিলেন প্রণব চট্টোপাধ্যায়। ১৯৯৩ সাল থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত তিনি ছিলেন কাউন্সিলার। একইসঙ্গে ১৯৯৮ সাল থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত প্রণববাবু ছিলেন বর্ধমান পৌরসভার বিরোধী দলনেতাও। এরপর ২০১৮ সাল নাগাদ তাঁকে তৃণমূল কংগ্রেসের সহ সভাপতি করা হয়। বাম আমলে প্রণববাবুর দাপটে বাম পরিচালিত পুরসভায় ছিল রীতিমত থরহরি কম্পমান অবস্থা। যদিও সেই সময় তাঁর নামে সিপিএমের সঙ্গে গোপন সমঝোতা করে চলার অভিযোগও ওঠে।
কিন্তু দুঁদে আইনজীবী এবং পুরসভা সংক্রান্ত বিষয়ে তাঁর পাণ্ডিত্যই শেষ পর্যন্ত তাঁকে ২০২১ সালে বর্ধমান পুরসভার প্রশাসক হিসাবে নিয়োগ করল তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত সরকার। এদিন প্রণববাবু দায়িত্ব নিয়েই জানিয়েছেন, পুরসভার সমস্ত বিষয় সম্পর্কে তিনি প্রথমেই খোঁজ খবর নেবেন। এরপর তিনি একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে চান। তিনি জানিয়েছেন, বর্ধমান পুর এলাকার সবথেকে বড় সমস্যা বেকারত্ব। তা ঘোচাতে পুর আইন মোতাবেক তিনি কিছু ব্যবস্থা নিতে চান। একইসঙ্গে ড্রেনেজ ব্যবস্থা সহ আরও কিছু উন্নয়নের কাজ করতে চান। তিনি জানিয়েছেন, বর্ধমান পুরসভার বিষয়ে সাধারণ মানুষের অনেক ভুল ধারণা আছে। তিনি তা দূর করার চেষ্টা করবেন আইন মেনেই।