ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,ভাতার: পেঁপে গাছে ফলেছে পাতিহাঁস। আর সেই দৃশ্য দেখতে দিনভর উৎসুকদের ব্যাপক কৌতুহল লক্ষ্য করা গেলো পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতারের সুকান্তপল্লীর অয়ন ঘোষের বাড়িতে। প্রসঙ্গত অয়ন বাবুর বাড়িতে আর পাঁচটা গাছের সঙ্গে একটি পেঁপে গাছও রয়েছে। যা তিনি গত এক বছর আগে লাগিয়েছিলেন। এতদিন সেই পেঁপে গাছে পেঁপেই ধরছিল। কিন্তু হঠাৎ করে মঙ্গলবার তিনি লক্ষ্য করেন সেই পেঁপে গাছের মধ্যে একটি পাতিহাঁস আকৃতির পেঁপে ধরেছে। আর স্বাভাবিকভাবেই সেই খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। পাতিহাঁস আকৃতির পেঁপে দেখতে অয়ন বাবুর বাড়িতে ভিড় জমাতে শুরু করেন এলাকার মানুষ।
ব্যতিক্রমী এই ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করতে ফোকাস বেঙ্গলের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয় বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানি বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক তথা বর্তমানে কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অফ লাইফ সায়েন্স এন্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের অতিথি অধ্যাপক জগৎপতি তায়ের সঙ্গে। তিনি জানিয়েছেন, এই ঘটনা অন্তত তাঁকে অবাক করেনি। কারণ, পেঁপে গাছে এই ধরণের ফল খুব বেশি পরিলক্ষিত হয়। পেঁপে গাছের ক্ষেত্রে এটি একটি জিনগত বৈশিষ্ট্য ।
পেঁপে গাছের ক্ষেত্রে মূলতঃ দুটি কারণে এই ধরণের ফল দেখতে পাওয়া যায়। একটি হলো প্রাকৃতিক পরিব্যক্তি (natural mutation) ও অন্যটি হলো কৃত্রিম পরিব্যক্তি ( artificial mutation) । প্রথম ব্যাপারটি পরিবেশগত কারণে ঘটে। এছাড়াও বহু রকমের কারণ হতে পারে। যেমন – বেগুনী সূর্য রশ্মিচ্ছটার প্রভাব, বাতাস ও মাটির অস্বাভাবিক তাপমাত্রা, তার মধ্যে অনিয়মিত সেচ প্রদান ইত্যাদি । দ্বিতীয় ব্যাপারটি ঘটায়, রাসায়নিক যোগ ও ভৌত রশ্মিচ্ছটা।
উদাহরণ স্বরূপ – কলচিসিন, ই-এম-এস, আলফা রশ্মি, বিটা রশ্মি ইত্যাদি । প্রকৃতির কি ম্যাজিক! কুমড়ো পটাস-এর মতো কাঁঠাল, বাঁশ গাছের ডি-এন-হ্যলিকস্ ইত্যাদি । আবার, টমালু অর্থাৎ মাটির নীচে আলু ও উপরে টমেটো। জগৎপতি বাবু জানিয়েছেন, প্রকৃতির কাছে আমরা সবাই ঋণী। কতভাবে তার হিসাব নাই। ভাতারের গ্রামের এই ঘটনাও প্রাকৃতিক। তবে সচরাচর দেখা যায়না বলেই অস্বাভাবিক দর্শন এই ধরণের ফল মানুষের মধ্যে কৌতূহল তৈরি করে।